কুমিল্লার ঘটনা আ'লীগের নীল নকশার অংশ - রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ১৬ অক্টোবর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৩২ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
পবিত্র ইসলাম ধর্ম নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর সম্প্রতি দেয়া বক্তব্যে দেশে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সরকার দেশকে চরম দুর্দিনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বর্তমানে দেশে মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। সম্প্রতি কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা আ. লীগ সরকারের নীল নকশার অংশ।
আজ শনিবার বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি’র নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দল এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করেছেন বিশ্ববেহায়া এরশাদ। এরশাদ কার লোক? বিশ্ববেহায়া এরশাদ তো শেখ হাসিনার সার্টিফায়েড বন্ধু। সরকারের অপকর্ম ঢাকার জন্য আগে বেফাঁস কথাবার্তার প্রতিযোগিতা ছিল ওবায়দুল কাদের ও হাসান মাহমুদের মধ্যে। এখন তাদের টপকাতে চান এই অবৈধ তথ্য প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঘটনা ঘটলো কুমিল্লায়, এরপর সারাদেশে উত্তেজনা-রক্তপাত-পুলিশ গুলি চালাচ্ছে, মানুষের প্রাণ ঝরছে। গতকাল চৌমুহনীতে উত্তেজনা বিরাজ করেছে। আজ ১৪৪ ধারা জারি করেছে। কেন এই পরিস্থিতি? ওই যে মুরাদ যে বক্তব্য রেখেছেন, তারপরেই এই ঘটনা। এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সরকার তার সব অপকর্ম, জনবিরোধী কর্ম, রক্তপাত, গুম, খুন সবকিছু আড়াল করার জন্য এবং দ্রব্যমূল্য যে বাড়তি—সেগুলো আড়াল করার জন্য সরকারের এজেন্সির যে নীল নকশা, সেই নীল নকশারই একটা অংশ কুমিল্লার ঘটনা।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি নাকি দেশের জনগণকে নিরাপত্তা দেন। তাহলে আজ কেন এই দেশের জনগোষ্ঠীর কোন নিরাপত্তা নাই? কিভাবে গুলি করে মানুষ মারা হচ্ছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, ‘এদেশের কোনো মুসলমান বা হিন্দু এই ঘটনা ঘটাবে এটা আমার বিশ্বাস হয় না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। এই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই রামু, উখিয়া, টাঙ্গাইল ও পাবনায় হিন্দুদের উপর আক্রমণ হয়েছে এবং তাদের সম্পত্তি লুট করা হয়েছে। বিএনপি ১৯৯১ ও ২০০১ সালে যখন ক্ষমতায় ছিল তখন কোনো সংখ্যালঘু বা হিন্দুদের মন্দিরে হামলা হয়নি। তাদের ধনসম্পত্তি লুটপাট হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘সরকার নিজের অবৈধ সত্তাকে টিকিয়ে রাখার জন্য দেশকে চরম দুর্দিনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আর বিদেশীদের দেখাচ্ছে আমরা ছাড়া কেউ এসবের মোকাবিলা করতে পারবে না।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রশ্ন হলো, যদি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় তাহলে প্রতিবছর ১৯৪০ লাখ টন খাদ্য আমদানি করতে হয় কেন? ৪৭ লাখ টন খাদ্য বিনষ্ট হয়। কারণ লুটপাটের সরকার তাদের লোকজন দিয়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়ান।’
তিনি বলেন, ‘দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলেন জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া।’
বিএনপি’র এই নেতা বলেন, ‘আমরা একটা অরাজকতা, ঘোর অন্ধকার, দুর্ভিক্ষের মধ্যে বসবাস করছি। এ ধরনের দুঃশাসনের মোকাবিলা করতে হবে একমাত্র জাতীয়তাবাদী শক্তিকে।
বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজও সংবাদপত্রের দেখলাম তার জ্বর কমেনি এবং মুখে রুচি নেই। তার ইচ্ছামতো তিনি চিকিৎসা নিতে পারেন না। কিন্তু শেখ হাসিনা যখন কারাগারে ছিলেন তার ইচ্ছামত তিনি স্কয়ারের চিকিৎসা নিয়েছেন।
এই সরকার শুধু নিষ্ঠুর সরকার নয়, একটা নেকড়ে সরকার, রক্তের জন্য সবসময় উন্মাদ হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।