‘রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করে প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষ মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিরোধীদের সহযোগিতা করেছে’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০০ এএম, ১৫ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৩৬ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘রাজনৈতিক অনুষ্ঠান’ বন্ধ করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিরোধী ঘৃণ্য তৎপরতাকে সহযোগিতা করেছে’ বলে অভিযোগ করেছে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে নব্বইয়ের ডাকসুর ভিপি আমানউল্লাহ আমান এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য।
তিনি বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির গতকালের সিদ্ধান্তে গোটা দেশবাসীর সাথে আমরাও গভীরভাবে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছি। আমরা মনে করি, জাতীয় প্রেসক্লাব অতীতে জাতির নানা সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করার অবারিত সুযোগ জাতীয় প্রেসক্লাব কখনই হরণ করেনি। ক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটি এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে প্রেসক্লাবের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ঐতিহ্যকে যেমন ভূলুণ্ঠিত করলো তেমনি একইভাবে বর্তমান স্বৈরাচারী, গণতন্ত্র হত্যাকারী বিনা ভোটের নিশিরাতের সরকারের রাজনীতি-গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিরোধী ঘৃণ্য তৎপরতাকেই সহযোগিতা করলো। দেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করার জন্য আমরা আহবান জানাচ্ছি। গত ১০ অক্টোবর জেহাদ দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জেহাদ স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য প্রদান নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের ‘কটাক্ষপূর্ণ বিবৃতি’র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, একজন রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া কিংবা মামলার রায় হলেই তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবে আসতে পারবেন না কিংবা জাতীয় প্রেসক্লাবে ভিডিও কনফারেন্সেও কথা বলতে পারবেন না, এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য নয়। বরং দোষী, নির্দোষী, পক্ষ কিংবা বিপক্ষ যেকোনো ব্যক্তি প্রেসক্লাবে আসবেন, তাদের মতামত ব্যক্ত করবেন, বক্তব্য তুলে ধরবেন এটাই রীতি। দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় প্রেসক্লাব এই নীতি অনুসরণ করে আসছে। তার এহেন বিবৃতি জাতীয় প্রেসক্লাবের সুমহান গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। সচেতন দেশবাসী আশা করে প্রেসক্লাবের সভাপতি দুঃখ প্রকাশ করে ওই বিবৃতি প্রত্যাহার করে জাতীয় প্রেসক্লাবের মর্যাদা রক্ষা করবেন।
১৯৭৭ সালের ডিসেম্বরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কর্তৃক জাতীয় প্রেসক্লাবের জায়গা স্থায়ী বরাদ্দ প্রদান, ১৯৭৯ সালে ক্লাবের ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ২০০৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রেসক্লাবের একটি বহুতল ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাব হবে বহু মত ও বহুপথের মানুষের মিলনকেন্দ্র, মুক্ত চিন্তা ও স্বাধীন মত প্রকাশের নির্ভরযোগ্য অঙ্গন। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও জনগণের ন্যায় সংগত অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিটি আন্দোলনে জাতীয় প্রেসক্লাব ছিল আন্দোলনকারীদের জন্য নির্ভরযোগ্য স্থান। আজকে আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, একটি মহল এই প্রতিষ্ঠানটিকে ক্ষমতাসীনদের একটি তল্পিবাহক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত, যা দেশের আপামর বিবেকবান মানুষকে চরমভাবে হতাশ করেছে। আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজুলল হক মিলনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন নব্বইয়ের সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, জহিরউদ্দিন স্বপন, নাজিম উদ্দিন আলম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান আসাদ, কামরুজ্জামান রতন, আবদুল মালেক, শিরিন সুলতানা, ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মধ্যে এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান মিন্টু, যুবদলের সাবেক নেতা কাইয়ুম চৌধুরী, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।