অনেক হিটলার-মুসোলিনি দেখেছি, কেউ টেকেনি-প্রধানমন্ত্রীকে দুদু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:২৯ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২০ | আপডেট: ০৪:০৫ পিএম, ১২ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, অনেক হিটলার ও মুসোলিনি দেখেছি, কেউ টিকে নাই। গণতন্ত্রের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করবেন না। পারবেন না। কারণ আমাদের নেতা হচ্ছে জিয়াউর রহমান, আমাদের নেতা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের নেতা হচ্ছেন তারেক রহমান। তাই বিজয় অবশ্যই গণতন্ত্রের পক্ষে হবে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ বিবেচনায় গণতন্ত্রের কাছে স্বৈরতন্ত্র পরাজিত হবে, এটা আমার কথা না, ইতিহাসের কথা। আমি হিটলারের কথা বলবো না। তাহলে যিনি (শেখ হাসিনা) মসনদে বসে আছেন তিনি অখুশি হবেন। আমি মুসোলিনির কথা এখানে উল্লেখ করবো না, তিনি বড় কষ্ট পাবেন। কিন্তু আমি তাকে (শেখ হাসিনা) বলব, পাকিস্তান আমলেও বাংলাদেশে অনেক হিটলার ও মুসোলিনি দেখেছি, কেউ টিকে নাই। গণতন্ত্রের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করবেন না। পারবেন না। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগই এক সাগর রক্তের সাথে ‘বেঈমানি করেছে’ বলেও মন্তব্য করেন দুদু। তিনি বলেন, এই বিজয়ের মাসে বলতে হয়, মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নকে তারা (আওয়ামী লীগ) কেড়ে নিয়েছে। এক সাগর রক্তের সাথে তারা বেঈমানি করেছে। গণতন্ত্রকে, সংবিধানকে, আইনকে, নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। ব্যাংক লুট করেছে। কী করে নাই তারা? সবকিছুই করেছে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ন্যাশনালিস্ট এক্স স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (রুনেসা) আয়োজিত “২২ ডিসেম্বর ১৯৮৪ স্মরণে রক্তঝরা মতিহার এবং রিজভী আহমেদ” শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্রদল যতদিন আছে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ আছে মন্তব্য করে কৃষকদলের এই আহ্বায়ক বলেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতারা যতদিন বেঁচে আছেন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ততদিন আছে। তারা যতদিন বেঁচে আছে বিএনপির ভবিষ্যৎ আছে। তারা যতদিন বেঁচে আছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আছে। এটা মানতে হবে। বর্তমান ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ‘ভাগ্যবান’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা শহীদ জিয়াউর রহমানকে কিছু সময় পেয়েছিলাম। বড় সময়টা হচ্ছে, আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে পেয়েছি। কিন্তু আজকের ছাত্রনেতাদের ভাগ্যবান বলবো- তারা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে পেয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আছেন, তাহলে ভয় কীসের? হতাশ হওয়ার কী আছে?
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি প্রায় সময় বলি, পরবর্তী সরকার হচ্ছে বিএনপি সরকার। কারণ ছাত্রলীগই দুর্নীতির মহামারিতে পড়েছে, ছাত্রদল তো পড়ে নাই। পড়েছে? তাহলে আমাদের ভয়টা কী? বিএনপি, ছাত্রদল ভয় পাবে না। ভয় তো পাবে আওয়ামী লীগ। যে চুরি করেছে, যে লুটপাট করেছে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ভূমিকার কথা উল্লেখ করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, একজন রিজভী আহমেদের সাহসিকতা ও ভূমিকার কথা বলে শেষ করা যাবে না। আমরা যারা এখানে বসে আছি সেই সময়ে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেছিলাম। অনেকেই সেই সময় আমাদের মানতে চায় নাই। কারা মানতে চাই নাই? ছাত্রলীগ মানতে চায় নাই। আমরা যে ছাত্র সংগঠন, এটাই তারা স্বীকৃতি দিতে চায় নাই। রাজশাহীর বাদশা এখন এই সরকারের তথাকথিত বিদ্রোহী, আমাদের সে সময় মানতে চায়নি। জাসদ, ওরে বাবা কি ধরনের বিপ্লবী সব। এখন জাসদ আছে বলে মনে হয় না। তারাও তখন আমাদের মানতে চায় নাই। কিন্তু রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, সোহেল এবং এর ভেতরে বাইরে যারা আছেন তারা প্রমাণ করেছেন, তারা ইতিহাসের মহানায়ক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।
সাবেক এই ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, একজন রিজভী আহমেদকে ছাত্রদল তৈরি করেছিল বলেই বছরের পর বছর বিএনপির অফিসে বসে বিএনপির কথা মানুষকে, দেশবাসীকে, বিশ্বকে জানিয়ে যাচ্ছেন। তাকে নিয়ে অনেক সমালোচনা করা যাবে। কিন্তু দায়িত্ব পালন করতে গেলে বুঝতে পারবেন, ওই ছোট্ট একটা চকির মধ্যে থেকে নেতার প্রতি, নেত্রীর প্রতি আস্থা রেখে কাজ করা এবং বিএনপির কথা দেশবাসী ও বিশ্ববাসীকে জানানো কি রকম ব্যাপার। কিন্তু রিজভী সেই কাজটিই করে যাচ্ছেন। তাই তার অবদানের কথা বলে শেষ করা যাবে না।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মল্লিক মো. মোকাম্মেল কবিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বিএনপি নেতা নুরুজ্জামান তপন প্রমুখ।