সাংবাদিক পেটালেন কাদের মির্জা অনুসারী যুবলীগ নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৪৪ পিএম, ১১ অক্টোবর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ১২:০৩ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ সহচর পৌরসভা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদ উল্যাহ ওরফে হামিদের (২৮) নেতৃত্বে এক সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল রোববার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বসুরহাট পৌরসভা ভবনের দক্ষিণ গেটে মোশারফ হোসেন ডায়াবেটিক হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
পরে স্থানীয় এলাকাবাসী আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করে নিজ বাসায় বিশ্রামে রয়েছেন। আহত সাংবাদিকের নাম নাসির উদ্দিন (৪৩) তিনি দৈনিক ঢাকা প্রতিদিন ও আঞ্চলিক দৈনিক নোয়াখালী প্রতিদিনের কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি।
এ বিষয়ে সাংবাদিক নাসির জানান, গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে বসুরহাট পৌরসভার দক্ষিণ গেটের মোশারফ হোসেন ডায়াবেটিক হাসপাতালের সামনে একটি চা দোকানে আমি বসে ছিলাম। এ সময় দলবল নিয়ে সেখানে হাজির হয় যুবলীগ নেতা হামিদ। ওই সময় সে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আমি তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে কি লিখেছি। তখন আমি তাকে বললাম কি লিখেছি বল? সে বলে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট কয়েক দিন আগে হ্যাক করে লেখা হয়, রাজনীতি থেকে বিদায় নিলাম, সবাই আমাকে ক্ষমা করবেন। আপনি ওই স্ট্যাটাসের নিচে কমেন্টস করেন, কিগো আর রাজনীতি করবানা, অনেক করেছো।
ফেসবুক কমেন্টস নিয়ে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে হামিদের নেতৃত্বে ১০-১২জন আমার ওপর হামলা চালায়। সাংবাদিক নাসির আরো বলেন, কোম্পানীগঞ্জে কারো ওপর হামলা চালাতে সুনির্দিষ্ট কোন কারণ লাগেনা। এ বিষয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা ও তার ছেলে আমাকে বিচারের আশ্বাস দিয়েছে। তবে এ ঘটনায় তিনি থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করেননি বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, চা দোকানে বসে ছিল সাংবাদিক নাসির। বসে থাকা অবস্থায় কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ সহচর ও তার ঘোষিত পৌরসভা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদ উল্লাহ ওরফে হামিদের নেতৃত্বে তার সাঙ্গপাঙ্গরা রিকশার চেইন, ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে তাকে মাথায়, পায়ে, পিঠে সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বসুরহাট পৌরসভা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদ উল্যাহ হামিদ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, তিনি পারিবারিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেননা। তার সাথে সাংবাদিকদের সম্পর্ক ভালো।
হামলার অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে ব্যস্ত পাওয়া যায়। পরে অন্য একটি নম্বর থেকে ফোন করলেও ফোন রিসিভ করা হয়নি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ভুক্তভোগী এ ঘটনায় থানায় লিখিত কোন অভিযোগ দায়ের করেনি।
উল্লেখ্য, গত ৮ মাসে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামীলীগের দু'গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির নামে এক সাংবাদিক মারা যায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনসহ কয়েকটি ধারা উল্লেখ করে কাদের মির্জার অনুসারীরা মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও মেয়রের যোগসাজশে তার অনুসারীরা ৪ সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায়। অনেক সাংবাদিক আতঙ্কে নিরাপত্তার অভাবে এখনো এলাকা ছাড়া রয়েছেন।