ভারতের শীতার্ত মানুষের জন্য কম্বল পাঠাতে চান ডা. জাফরুল্লাহ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৫৫ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২০ | আপডেট: ০৬:০১ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
ভারতের শীতার্ত মানুষের জন্য দুই হাজার পিস কম্বল পাঠানোর আশা প্রকাশ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
আজ সোমবার দুপুর ১২টায় ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে উত্তরবঙ্গের শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে শীতের প্রবাহ বাড়ছে, তাপমাত্রা কোনও কোনও স্থানে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের আহ্বান, তারা যেন অসহায় শীতার্ত জনগণকে সহযোগিতা করেন। আমাদের এ কম্বলগুলো বড় করে তৈরি করা হয়েছে। একটা কম্বলে পরিবারের কয়েকজন থাকতে পারবেন। এসব কম্বল আবার তৈরিও করেছেন গরিব মানুষেরাই। গণস্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং দু-একজন ব্যবসায়ী এসব কম্বল দেয়ার জন্য আমাদের সহযোগিতা করেছেন। গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাঁওতাল পল্লীসহ উত্তরবঙ্গে আমরা বিশেষভাবে নজর দিচ্ছি।
ভারতের শৈত্যপ্রবাহের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতে শৈত্যপ্রবাহে এ পর্যন্ত ৩৭ জন কৃষক মারা গেছেন। ভারত সরকার আমাদের অনুমোদন দিলে ভারতের কৃষকদের জন্য আমরা দুই হাজার পিস কম্বল পাঠাতাম। ভারতের মোদি সরকার তার দেশের জনগণকে অবহেলা করছে। আমাদের সারা পৃথিবীর বিষয়টা স্মরণ রাখতে হবে। তারপরও আমাদের দেশ ও মানুষ প্রথম বিবেচ্য বিষয়। তাই দেশের দরিদ্র মানুষকে সহযোগিতার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি। সবাই মিলে এ দুর্দশা অতিক্রম করতে হবে।
ডা. জাফরুল্লাহ আরও বলেন, আজ আমরা একটা বিশেষ ধরনের সহযোগিতা করছি মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিন এবং খাদেমদের। ওনারা ওয়াজ মাহফিল করে সবার কথা বলেন, কিন্তু নিজেদের জন্য লজ্জায় চাইতে পারেন না। রূপনগর ও আশুলিয়া বেড়িবাঁধ অঞ্চলের ইমাম, মোয়াজ্জিন এবং খাদেমদের পরিবারের জন্য আমরা একটি করে কম্বল দিচ্ছি।
ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অকারণে ভাস্কর্যের বিরোধিতা করবেন না। দরিদ্র মানুষের মুক্তি ও সাহায্যের জন্য খোদার কাছে দোয়া করেন। শীতে যেন কোনও মানুষ না মারা যান, সেজন্য আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করবো। পাশাপাশি আমরা সবার সহযোগিতাও চাই।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. মঞ্জুর কাদির আহমেদ বলেন, আপনারা অবগত আছেন যে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র সব সময়ই দেশের যেকোনও দুর্যোগ মুহূর্তে দেশের মানুষের সেবায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। করোনার সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা ও চিকিৎসাসেবা প্রদান করেছে, যা এখনও বলবৎ আছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের উত্তরাঞ্চলে মৃদু থেকে মধ্যম পর্যায়ের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে গেছে। সাধারণ মানুষের এই দুর্ভোগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র অসহায় মানুষের জন্য শীতবস্ত্র সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪০০০টি কম্বল বিতরণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যার মধ্যে ২০০০টি ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আরও ২০০০টি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বিতরণ করা হবে। আমাদের কম্বলগুলোতে একটি পরিবারের ৪/৫ জন একসাথে ঘুমাতে পারবে। আমরা মূলত উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বেশি কম্বল বিতরণ করেছি। দেশের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান থাকবে, আপনারা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করুন এবং সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান। কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে গণস্বাস্থ্যের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর উপস্থাপনায় আরও বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক (কার্যক্রম) মো. গোলাম মোস্তফা দুলাল ও এইচআরসি পরিচালক আকলিমা আক্তার প্রমুখ।