সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের পক্ষে আ’লীগের অবস্থান প্রমাণ করে তারা জনবিরোধী - ডা. শাহাদাত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:২০ এএম, ৫ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৫৪ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগের ভোটারবিহীন এমপি-মন্ত্রীরা সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রমাণ করেছে তারা জন বিরোধী। চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ও গর্বের জায়গাসিআরবি'র প্রাকৃতিক পরিবেশকে ধ্বংস করে বাণিজ্যিক হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। অত্যন্ত দু:খের সাথে লক্ষ্যণীয় যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রাকৃতিক অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র, মহানগরীর একমাত্র মুক্ত অঙ্গন ১৯৩০ সনে অবিভক্ত বাংলার মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ যা মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল তার পবিত্র স্মৃতিধন্য ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আবদুর রবসহ দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার কবর ও স্মৃতির স্মারক চট্টগ্রাম মহানগরীর সাংস্কৃতিক চর্চার প্রধান কেন্দ্র,চট্টগ্রামের অন্যতম প্রধান হেরিটেজ সাইট, শতবষোর্ধ শত-শত বৃক্ষ ও গুল্ম শোভিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রায় ৭০ লক্ষ নাগরিকের চিত্তবিনোদনের একমাত্র মুক্ত প্রাঙ্গণ সিআরবি’র সবুজ নিসর্গ ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রক্তে রঞ্জিত পবিত্র কবরের উপর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি তথাকথিত হাসপাতাল নির্মাণের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় সিআরবি সাত রাস্তার মোড়ে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন (বাপসা), গণ-অধিকার ফোরাম’র যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সিআরবি রক্ষায় প্রতিবাদী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ডা. শাহাদাত হোসেন আরো বলেন, আমরা আগেও বলছিলাম রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনকে ধ্বংস করে তারা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে। আমাদের পরিবেশ আমাদের ঐতিহ্য সুন্দরবনকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে একইভাবে চট্টগ্রামেও তারা সিআরবিকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে। হাসপাতাল করার অনেক জায়গা আছে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল যখন ক্ষমতায় ছিলাম। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সালে পাহাড়তলীতে যে হাসপাতালগুলো হয়েছে, চক্ষু হাসপাতাল, ইউএসটিসি, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, নিউরোজিক্যাল হাসপাতাল, পশু বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের জন্য জনগণের সেবার জন্য তৎকালীন বিএনপি সরকার রেলয়ের জায়গা বরাদ্দ দিয়ে নির্মাণ করেছে। আজ এক একটি উদাহারণ বিএনপি দিয়েছে, সেখানে এই সরকারের ভোটারবিহীন মন্ত্রী এমপিরা তাদের প্রকাশ্য মদদে কিছু ব্যবসায়ী যারা বাংলাদেশের সম্পাদ লুটপাট করে লুটপাট সমিতির মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের টাকা বিদেশে পাচার করেছে। চট্টগ্রামের গণমানুষের দাবী উপেক্ষা করে কোন হাসপাতাল নির্মাণ করলে জাতীয়তাবাদী দল গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
গণ অধিকার ফোরামের মহাসচিব ও বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন (বাপসা)সভাপতি এম এ হাশেম রাজুর সভাপতিত্বে ও বাপসার নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া’র পরিচালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ও বাপসার উপদষ্টা আবুল হাশেম বক্কর বলেন, অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি চট্টলার ফুসফুসখ্যাত ছোট বড় পাহাড়-টিলার সমন্বয়ে কমবেশী ২১০ একর জুড়ে নান্দনিক সিআরবি এলাকায় ভূমি খেকো নব্য মাফিয়া চক্র ও ভূমি দস্যুর কবলে পড়েছে। বেসরকারী হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজকে ৬ একর জমি বরাদ্দ আই ওয়াশ মাত্র। মূলত ভোট ডাকাত সরকার জনগণের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার মত হাসপাতালের নামে সিআরবির ভূমি দখলের পাঁয়তারা করছে। হাজারো প্রকৃতিপ্রেমী রয়েছে যাদের কাছে সিআরবি প্রাণের স্পন্দন। আমরা স্বীকার করছি জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিন্তু সেটা অবশ্যই সিআরবিতে নয়। সেটা অন্য কোনো পরিত্যক্ত স্থানে হোক। চট্টগামের ফুসফুস ছিঁড়ে হাসপাতাল নির্মাণের
তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। অন্যতায় চট্টগ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে সরকারের হটকারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলা হবে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বাপসার উপদষ্টা আবু সুফিয়ান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত, বর্ষীয়ান
বৃক্ষরাজিতে ঘেরা, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি এবং অসংখ্য কীট পতঙ্গের বসবাসএই সিআরবিতে। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষের পদচারণা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের উম্মুক্ত স্থান সিআরবি শিরীষ তলা। আমাদের আনন্দময় শ্বাস গ্রহণের প্রিয় স্থান এই সিআরবি সাত রাস্তা মোড়।
সভাপতির বক্তব্যে এম এ হাশেম রাজু বলেন, চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের গণবিরোধী সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, যারা চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ও স্বার্থবিরোধী কর্মকান্ডের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তাদেরকে চট্টগ্রামবাসী গণদুশমন হিসাবে চিহ্নিত করেবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, এস এম সাইফুল আলম, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, সদস্য মোঃ কামরুল ইসলাম। এত আরো বক্তব্য রাখেন কোতোয়ালী থানা বিএনপির সভাপতি মনজুর রহমান চৌধুরী, পাঁচলাইশ থানা বিএনপির সভাপতি মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, নগর বিএনপির সাবেক নেতা দিদারুল আলম, আরিফ মেহেদি, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এস এম মফিজ উল্লাহ, আকতার খান, হাজী আবুল বসর, সাধারণ সম্পাদক হাসান ওসমান,জানে আলম অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জিয়াউর রহমান জিয়া, মোশারফ হোসেন, ম.হমিদ, খায়রুল আলম দিপু, মোঃ হারুন, আলি মুর্তোজা খান, শহীদুল ইসলাম, নুরুন্নবী, ছাত্রনেতা সামিয়াত আমিন জিসান, মো: নওশাদ, মেজবাহ উদ্দিন মিন্টু, মো: গুলজার, মো: আলমগীর, রায়হান উদ্দিন, মো: হাসান প্রমুখ।