তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে বগুড়ায় গোপন ব্যালটে ছাত্রদলের কার্যক্রম শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২১ পিএম, ৩ অক্টোবর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৫২ এএম, ১৯ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
তৃনমুল পর্যায়ে সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে গণতান্ত্রিকপন্থায় নেতৃত্ব নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বগুড়া জেলা শাখা। আগামী ১৫ অক্টোবর বগুড়া জেলার দুঁপচাচিয়া উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বগুড়ায় উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের ইউনিট কমিটি গঠন শুরু হচ্ছে। ছাত্রদলের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাবেক ছাত্রদল নেতারা।
সম্মেলন প্রস্ততি কমিটি সুত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গোপন ব্যালটের মাধ্যমে বগুড়ায় দলের নেতা নির্বাচনের প্রথা চালু করেন। এরপর ২০০৪ ও ২০১০ সালে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন কর হয়। এ ধারনা থেকে বগুড়াসহ সারাদেশে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংগঠনের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করেন। কিন্ত মাঝপথে কারোনা ভাইরাস হানা দিলে লকডাউনের কারনে সাংগঠনিক কর্মকান্ড স্থগিত হয়ে যায়। করোনাকালীন দীর্ঘ বিরতির পর আবারো শুরু হযেছে সাংগঠনিক কার্যক্রম।
সম্মেলন প্রস্ততি কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা আশা করছেন সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৫ অক্টোবর জেলার দুঁপচাচিয়া উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের সম্মেলন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তারা বহু আকাংখিত কমিটি উৎসব শুরু করতে পারবেন। কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রতিটি উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক পদে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হবেন।
জেলা ছাত্রদল সভাপতি আবু হাসান জানান, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ৩০ সেপ্টেম্বর চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ। মনোনয়ন ফরম বিতরন ২ও ৩ অক্টোবর। মনোনয়ন ফরম যাচাইবাছাই ৪ ও ৫ অক্টোবর। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ৬ অক্টোবর। প্রার্থীতা প্রত্যাহার ও আপীল গ্রহনের শুনানী ৭ অক্টোবর। ৮ অক্টোবর চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ। ১০ অক্টোবর থেকে স্ব-স্ব ইউনিটের সম্মেলনের আগের দিন পর্যন্ত প্রচারের সময় পাবেন প্রার্থীরা।
জেলা ছাত্রদল সাধারন সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যান জানান, ১৫ অক্টোবর দুঁপচাচিয়া উপজেলা ও তালোড়া পৌর শাখার সম্মেলনের পর ১৬ অক্টোবর আদমদিঘী উপজেলা ও সান্তাহার পৌর শাখা। ১৭ অক্টোবর কাহালু উপজেলা ও পৌর শাখা, ১৮ অক্টোবর নন্দীগ্রাম উপজেলা ও পৌরশাখা, সারিয়াকান্দি উপজেলা ও পৌরশাখা ১৯ অক্টোবর, ২০ অক্টোবর সোনাতলা উপজেলা ও পৌরশাখা, ২১ অক্টোবর গাবতলী উপজেলা শাখা, ২২ অক্টোবর শাজাহানপুর উপজেলা ও গাবতলী পৌরশাখা, শিবগঞ্জ উপজেলা ও পৌরশাখা ২৩ অক্টোবর।
সাবেক ছাত্রদল নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আজগর হেনা বলেন, ন্যায়-নীতি ঠিক রেখে সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করলে আগামীতে এর সুফল পাবে সংগঠন। সে জন্য শহীদ জিয়ার আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতে হবে প্রতিটি নেতা কর্মীদের। আগামীতে যারা নেতৃত্বে আসবে তাদের প্রতি শুভকামনা রইলো এবং সকল প্রকারের সহযোগিতা দেওয়া হবে।
ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এম আর ইসলাম স্বাধীন বলেন, ছাত্রদল একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। ছাত্রদলের নেতৃত্বে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার সে গণতন্ত্র কে কফিন বন্দী করেছে। আগামীতে যারা নেতৃত্বে আসবে তারা আরেকটি গণ অভ্যুত্থানের জন্ম দিয়ে এই স্বৈরশাসক কে বিদায় করে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র চর্চার বিকাশ ঘটাবে এটাই প্রত্যাশা।
ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী হিরু বলেন, দেশে যখনই গণতন্ত্রের চর্চা বাঁধা গ্রস্থ হয় তখনই ছাত্র সমাজের ভূমিকা পালন করতে হয়। বিশেষ করে ছাত্রদল সকল সময়ে দেশ এবং জনগণের অতন্ত্র প্রহরী হিসেবে আবির্ভুত হয়। আগামী দিনে যে কোনো আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্রদল বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। যারা নেতৃত্বে আসবে তারা সততা ও ন্যায় নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করবে বলে আশা রাখি।
প্রায় ৩ বছর ৪ মাস পুর্বে ২০১৮ সালের ৫ জুন সরকারী শাহসুলতান কলেজ ছাত্রদলের তৎকালীন সভাপতি আবু হাসান ও সরকারী আযিজুল কলেজ ছাত্রদল নেতা নুরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যানকে সাধারন সম্পাদক করে ৫ সদস্যের বগুড়ায় জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষনা করা হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুর এবং সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আকরামুল হাসান এতে স্বাক্ষর করেন। এরপর ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ৩৬০ সদস্যের ছাত্রদল বগুড়া জেলা শাখার কমিটি অনুমোদন করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান ও সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আকরামুল হাসান। কমিটি অনুমোদনের পর থেকে জেলা ছাত্রদলের অধীনে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটিগুলো গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। আন্দোলন সংগ্রাম ও নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ছাত্রদলের তৃণমুল পর্যায়ের বেশ কিছু ইউনিটের কমিটিও তারা গঠনে দায়িত্বশীল ভুমিকা পালন করেন।