প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বভৌমত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন - রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৩ এএম, ২৯ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০২:১৬ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মিথ্যা অসত্য দিয়ে বেশিদিন টেকা যায় না মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এখন শেখ হাসিনার ফেয়ারওয়েল দেয়ার সময় এসে গেছে। তিনি বলেন, অল্প কিছুদিনের মধ্যে এই আওয়ামী লীগ সরকারের ফেয়ারওয়েল হয়ে যাবে জনগণের কাছ থেকে। চিরন্তন ফেয়ারওয়েল হয়ে যাবে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মানব সেবা সংঘের আয়োজনে ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ও বহুদলীয় গণতন্ত্র’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এখন যারা ক্ষমতায় আছে। তারা এক দানবীয় পন্থায় ক্ষমতায় রয়েছে। নানা হুমকি দিয়ে, নানা কালাকানুন তৈরি করে, মিডিয়াকে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। আবার অপরদিকে নিজেদের কিছু মিডিয়া দিয়ে অনর্গল মিথ্যা বলে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখতে আপনি প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ফেলেছেন। বিদেশি একজন মানুষ সিলেটে অ্যাডিশনাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করে যাচ্ছে। সে কি দেশের নাগরিক? অথচ একটি উচ্চ পদে তিনি চাকরি করে যাচ্ছেন। তাহলে এ দেশের সার্বভৌমত্ব কোথায়? দেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে নিয়ে গেছে। গতকাল শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলেই আমার দেশের মাটি, দেশের সার্বভৌমত্ব বিপদের মুখে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, হিটলার, মুসোলিনির ফ্যাসিস্ট হলেও তাদের মধ্যে দেশপ্রেম ছিল। তারা তাদের দেশকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছে। তারা তাদের নিজের দেশকে ছোট করতে দেয়নি। তারা চেয়েছে পৃথিবীর অন্য দেশের চেয়ে তাদের দেশ শক্তিশালী থাকুক। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী হিটলারের, মুসোলিনির অপশিক্ষাগুলো নিয়ে কিভাবে বিরোধীদের দমন করা যায় তাই করছেন। দেশকে শক্তিশালী করার কোনো কিছু তিনি করেননি। বরং নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে অন্য দেশ যা কিছু দেয়া যায় তিনি তাই দিচ্ছেন।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, এই প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণের প্রতি কোনো দয়া মায়া আছে? কোনো কমেন্টমেন্ট আছে? কোনো কিছুই নাই। বাংলাদেশ থেকে তার লোকজন টাকা-পয়সা নিয়ে যাবে এতে তার কিছু যায় আসে না। মালোশিয়ার অর্ধেক কিনে নিবে। কানাডায় বেগম পাড়া বানাবে। এতে তার কিছু যায় আসে না। কারণ তার লোকই তো ভালো থাকবে।অতএব যত পারো বাংলাদেশ থেকে লুট করে নাও। এই লুট করতে যা করা লাগে তাই করো। আর যদি বিএনপি কিছু বলে তাহলে তার আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী তো আছেই।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো তার মাথা তার প্রভুদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এখন একটাই মাত্র পদ এই ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন,শেখ হাসিনার বিকল্প কি? শেখ হাসিনার বিকল্প হচ্ছে তার মতই ফ্যাসিস্ট। বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান তো গণতন্ত্রের প্রতীক। বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। আওয়ামী লীগ করে নাই। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সুতরাং শেখ হাসিনার সাথে বেগম খালেদা জিয়ার পার্থক্য তো থাকবেই। আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপির পার্থক্য তো থাকবেই।
বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, তারা আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন সাহস থাকলে তারেক রহমান দেশে আসুক না। তাদেরকে বলি সাহস থাকলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন দেন না। আপনাদের সাহস থাকলে একটা শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন দেন দেখি। সেই সাহস আপনাদের নেই। নিজেরা পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। দেখি সাহস আছে কিনা? কাদের সাহেব সেই সাহস আপনাদের নেই। জনগণের এই অধিকার জনগণের আদায় করে নেবে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সঞ্জয় দে রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী,বিএনপির পল্লী উন্নায়ন বিষয়ক সম্পাদক এড. গৌতম চক্রবর্তী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।