ফ্যাসিবাদের সাথে মুক্ত গণমাধ্যম কখনো একসাথে যায় না - মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৬ এএম, ২৬ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ১২:০৩ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ফ্যাসিবাদের সাথে মুক্ত গণতন্ত্র ও মুক্ত গণমাধ্যম কখনো একসাথে যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাকশাল থেকে মুক্ত করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মানুষের বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরচারী এরশাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে হারানো গণতন্ত্র উদ্ধার করেছেন। এখন আবার সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চাইছে। এদেশের জনগণ একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা চায় না। আওয়ামী লীগ গুম, খুন ও নির্যাতনের মাধ্যমে অস্ত্রের মুখে টিকে থাকার কৌশল নিয়েছে। ফ্যাসিবাদের সাথে মুক্ত গণতন্ত্র ও মুক্ত গণমাধ্যম কখনো একসাথে যায় না। ফ্যাসিবাদ মানেই হলো ভয়ভীতি, ত্রাস সৃষ্টি করে মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নেয়া। গুম, খুন ও নির্যাতনের মাধ্যমে অস্ত্রের মুখে টিকে থাকর যে কৌশল আজকে আওয়ামী লীগ সেটাই বেছে নিয়েছে। একটি মুক্ত সমাজ, দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য আমরা ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম। আওয়ামী লীগ আমাদের সেই আশা-আকাক্সক্ষাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা এর আগেও বাকশাল গঠন করেছিল এবং এখনো গণতন্ত্রের মুখোশ পরে বিভিন্ন আঙ্গিকে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে আমাদের সমস্ত অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে। ২০১২ সালে বিচারপতি খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছিলেন। আওয়ামী লীগ সেটাকে লুফে নিয়ে বাস্তবায়ন করেছে। যার ফলে আজকে নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিরোধী ঐক্যে ‘বিভক্তি’ আনতে সরকার তার এজেন্সিগুলোকে সক্রিয় করেছে বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমরা বিভক্ত। আমাদের সাংবাদিক সমাজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো বলেন, আমাদের পেশাজীবী সংগঠনগুলো বলেন-এসব জায়গাগুলোতে বিভক্তি এসে গেছে এবং বিভক্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। অত্যন্ত সচেতনভাবে এই সরকারের যে এজেন্সিগুলো আছে, সেই এজেন্সিগুলো আজ অত্যন্ত এ্যাক্টিভ। তারা আমরা যারা গণতন্ত্র চাই, আমরা যারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব চাই- তাদের মধ্যে বিভিন্নভাবে ঐক্যের বিনষ্ট ঘটাচ্ছে। এই বিষয়টা সম্পর্কে আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে, অত্যন্ত সচেতন থাকতে হবে। আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছি, লড়াই করছি, সংগ্রাম করছি আমাদের বিভক্তির কোনো অবকাশ নেই। এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে যদি সরাতে চাই জনগণের একটা দৃঢ় ঐক্যের প্রয়োজন আছে, জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন আছে, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের প্রয়োজন আছে। একই সঙ্গে সমস্ত সংগঠনগুলো যারা গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে তাদের ঐক্যের প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষ একদলীয় শাসনব্যবস্থা, কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা চায় না। তারা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। তারা পুলরাল সোসাইটি হিসেবে দেখতে চায়। সেইভাবে আমাদেরকে আশা রাখতে হবে, সংগঠিত হতে হবে এবং সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদেরকে এই ভয়াবহ শাসনের যে সরকার, ভয়াবহ দুঃশাসনের যে নেতৃত্ব এই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারকে সরিয়ে জনগণের নির্বাচিত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আপনাদের সকলের প্রতি আমার আবেদন থাকবে, বিভেদ নয়, আপনারদের ঐক্য, জনগণের ঐক্য দিয়ে এদেশের মুক্তি হবে, গণতন্ত্র মুক্তি পাবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন।
রাজনীতিবিদরা দেশ চালাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের ১/১১’র চক্রান্ত থেকে আমরা মুক্তি পাইনি। ২০০৮ সালের নির্বাচন, পরবর্তী নির্বাচন সবই কিন্তু এক লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আজকে আমাদের দুর্ভাগ্য দেশ কিন্তু রাজনীতিবিদরা পরিচালনা করে না। একজন রাজনীতিবিদকে তারা শিখন্ডি হিসেবে দাঁড় করিয়ে রেখেছে- তিনি হচ্ছেন শেখ হাসিনা। তাকে দিয়ে যত অরাজনৈতিক, গণবিরোধী, গণতন্ত্র বিরোধী সমস্ত কাজ করিয়ে নিচ্ছে এবং রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে তারা সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দেখুন পার্লামেন্ট সেখানে জনগণের কোনো প্রতিনিধিত্বই নাই। ২০১৪ সালে তারা ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করে একটা সংসদ গঠন করেছিলো এবং ২০১৮ সালে আগের রাতেই নির্বাচন করে এবং সেই নির্বাচনে জনগণের কোনো অংশগ্রহণ ছিলো না, তারাই জালিয়াতি করে ভোট দিয়ে বিভিন্নভাবে তাদের নির্বাচিত করেছে এবং স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। কোথায় নির্বাচন কমিশন? এই কমিশন সম্পূর্ণভাবে একটা আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আজকে আবার শোনা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারি মাসে আবার নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। আমি পত্রিকায় দেখলাম, আমাদের ৫২ জন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী তারা একটা আইন প্রণয়ন করতে বলেছেন নির্বাচন কমিশনের জন্য। ভালো কথা। কিন্তু আইনটা করবে কে? এই আইন তো পাস করবে সেই পার্লামেন্ট, যে পার্লামেন্টে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কিছু নাই। যারা দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করছে, জনগণের সমস্ত অধিকারকে হরণ করে নিচ্ছে তারা এই আইনটা পাস করবে। সুতরাং নির্বাচনের আইন যারা করতে চান সবার আগে তাদের এই বিষয়টি লক্ষ্য রাখা উচিত।
নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগ শাখার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিকের ওপর নির্যাতনের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা কিন্তু আওয়ামী লীগের চরিত্র। যখনই আপনার তাদের মতের বিরুদ্ধে কিছু বলবেন তখনই তার ওপরে নির্যাতন করবে। এটা আজকে না, আমরা ১৯৭১ সাল থেকে দেখছি। এমনকি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে আমরা যারা সেই সময়ে আওয়ামী লীগের একদলীয় সংগ্রামের বাইরে গিয়ে কাজ করছিলাম, লড়াই করছিলাম, যুদ্ধ করছিলাম আমাদেরকেও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। একটা বাহিনীই তৈরি করা হয়েছিলো-মুজিব বাহিনী যারা অন্য রাজনীতি থেকে এসেছে তাদেরকে নির্মূল করতে হবে। এটা আপনারা আজ-কাল কেউ বলেন না। দ্যাট ইজ ট্রুথ। আমরা মওলানা ভাসানীর দল করতাম যে, আমাদেরকে সেখানে কিভাবে আক্রমণ করা যাবে, নির্মূল করা যাবে। পরবর্তীকালে আমরা দেখেছি ১৯৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত কিভাবে বিরোধী চিন্তা যারা করেছে, যারা ভিন্নমত পোষণ করেছে তাদের কিভাবে, রক্ষীবাহিনী গঠন করা হয়েছিলো তাদেরকে নির্মূল করার জন্য। বহু সাংবাদিক সেদিনও নির্যাতিত হয়েছেন, বহু রাজনীতিবিদ নির্যাতিত হয়েছেন। এখন যে জাসদের ইনু সাহেবরা এত কথা বলেন, তাদেরই তো ৩০ হাজার তরুণ-কিশোরকে প্রাণ দিতে হয়েছিলো। এটা বাস্তবতা।
তিনি বলেন, আজকেও সেই একই দল, শুধু খোলসটা কী? গণতন্ত্র আছে, নির্বাচন হয়। রাশিয়াতে নির্বাচন হয়। পুতিন আবার নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। চমৎকার আছে তাদের সংবিধান, একবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন, আরেক বার প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন। নিজেরা তৈরি করে নিয়েছে নিজেদের মতো। আজকে বাংলাদেশেও সেই একইভাবে তাদের মতো করে সংবিধানকে পরিবর্তন করছে। কাটা-ছেঁড়া করে শেষ করে দিয়েছে। দুর্ভাগ্য আমাদের, যারা বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী রয়েছেন, বিশিষ্ট নাগরিকরা রয়েছেন তারা মাঝে-মধ্যে বলেন। কিন্তু এই ব্যাপারে একটা শক্তিশালী সোচ্চার মত গড়ে তুলবেন সেটা আমরা দেখছি না।
বাকশালের আলামত, বাকশাল চলছে বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার পরিকল্পিতভাবে সংবাদ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করবার জন্যে, সত্য কথা যাতে আমরা বলতে না পারি সেজন্য নতুন নতুন আইন তৈরি করছে। আপনারা দেখেছেন ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট। এখন নতুন একটি আইন তৈরি করতে যাচ্ছে সেটাকে তারা বলছে ব্যক্তি সুরক্ষা আইন। এটা আরেকটা কৌশলে নিয়ন্ত্রণ করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা লেখালেখি করেন, যারা মত দেন তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তাদেরকে আবার নির্যাতন করার জন্য তারা এই আইনটা করতে যাচ্ছেন। তথ্যমন্ত্রী সাহেব জানিয়েছেন যে, ২১০টি পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমরা তো বাকশালের আলামত দেখতে পাচ্ছি, বাকশাল দেখতে পারছি। এরমধ্যে একজন বেশ শিক্ষিত মন্ত্রী উচ্চ পদস্থ আমলা ছিলেন এক সময়ে পরিকল্পনামন্ত্রী তিনি বলেছেন, বাকশাল ভালো ব্যবস্থা ছিলো। সেই কথাটা পরিষ্কার করেই বলেন যে, আমরা বাকশাল করছি, আমরা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করেছি-এই কথাটা তো বলছেন না। কারণ মানুষকে আপনারা প্রতারণা করেছেন সবসময়ে। নিউজ পোর্টালের জন্য ৪ হাজার আবেদনের থেকে দলীয় পছন্দের ৯৫টিকে নিবন্ধন দেয়ার ঘটনার সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কারাবন্দি সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, রুহুল আমিন গাজী ১১ মাস ধরে কারাবন্দি হয়ে আছেন বিনা কারণে। একটা মিথ্যা মামলা দিয়েছে। সেই মিথ্যা মামলা বহু লোকের বিরুদ্ধে হয়েছিলো। অনেকে মুক্ত হয়ে গেছেন। কিন্তু রুহুল আমিন গাজীকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে না। একজন সাংবাদিক তিনি স্বাধীনতার কথা বলেন, মুক্ত সাংবাদিকতার কথা বলেন সেজন্য তাকে মুক্ত করা যাবে না। রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির ব্যাপারে সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ থাকে না তখন কষ্ট হয়। তাদের সহকর্মীর জন্য তারা জোরে-শোরে কথা বলবেন না।
বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, দেশে আজ মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। বহু সাংবাদিক মত প্রকাশ করতে গিয়ে জেলে গেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কমেন্ট করার জন্য অনেকে জেলে গেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। রুহুল আমিন গাজীসহ অনেকে আটক আছেন আমরা তাদের মুক্তি দাবি করি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাষ্ট্রচিন্তার মুশতাক আটক ছিলেন, তিনি জেলেই এই সরকারের হাতে মৃত্যুবরণ করেছেন। আমরা আর কত কাল অপেক্ষা করবো এসব মৃত্যুর জন্য, এসব গ্রেফতারের জন্য? গণতন্ত্র যেখানে হারিয়ে গেছে, গণতন্ত্র যেখানে বিধ্বস্ত, যেখানে গুম হচ্ছে, ক্রসফায়ার হচ্ছে, রাজনৈতিক তৎপরতা চালানো যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো অধিকার নেই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে কারাবন্দি, তাঁর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই, আগামীর দেশনায়ক তারেক রহমানের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা উচ্চ আদালত কেড়ে নিয়েছে। উচ্চ আদালত নিউজ পোর্টালগুলো একে একে বন্ধ করে দিয়েছে, সরকারের নিবন্ধিত ছাড়া এসব চলবে না। এই অবস্থার সমাধানটা কী? সমাধানের একটাই পথ- এই জালেম সরকারের পতন ঘটানো এবং এমন একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, যে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সকল ধরনের সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সামনে রেখে আজকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের ডাক দিতে হবে এবং বিএনপি এই সংগ্রামের নেতৃত্ব দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, ১৯৯০ সালে আমরা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলাম। এই সরকার সেই গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কার্যত গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই।
তিনি বলেন, সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী ও সংগ্রাম সম্পাদক জেলে। সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে এখন আবার ১১ সাংবাদিক নেতার ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। কিন্তু এই দুঃসময়ে সাংবাদিকরা যে অবদান রাখছে তা জাতি মনে রাখবে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সব ন্যায়সঙ্গত দাবির সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম অতীতে ছিলো, এখনো আছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, দেশের গণমাধ্যম এক ভয়াবহ সংকটকাল অতিক্রম করছে। ক্ষমতার প্রভাব বলয় থেকে মিডিয়া নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এক কথায় গণমাধ্যম এখন ততটুকুই স্বাধীন যতটুকু সরকারের পক্ষে যায়। আজকে আমরা যখন সম্মেলন করছি, তখন একটা ভোটারবিহীন জাতিতে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে, যখন সম্মেলন করছি, তখন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ নানা কালাকানুনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বোবা জাতিতে পরিণত করা হয়েছে। এই অবস্থার অবসানে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই ছাড়া বিকল্প নাই।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, বিএফইউজে-ডিইউজে-জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক নেতা এমএ আজিজ, আবদুল হাই শিকদার, কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত, বাসির জামাল ও রাশেদুল হক।