ক্ষমতা হাত ছাড়া হওয়ার ভয়েই গ্রেফতার অভিযান - রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৪ এএম, ১৫ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৪৭ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে। তাদের (আওয়ামী লীগ) প্রহসনের মাত্রা এতটাই বেড়ে গেল যে, লাশের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া শুরু করলো। বিএনপির যে ছেলেটা দু বছর আগে মারা গেল তাকেও মামলা দেয়া শুরু করলো। তাদের এত ভয়, এত উৎকণ্ঠা যে, বিএনপির যে লোকটি মারা গেছে, সেও যদি জীবন্ত হয়ে যায় তাহলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে পাওয়ার অফ ইউথ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসনের ১৪তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, মন্ত্রিপরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে নির্দেশনা চান নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য। অথচ সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনে অথরিটি হলো রাষ্ট্রপতি ওপর। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর প্রথম চয়েজ তো নূরুল হুদার মতো লোক। যে ব্যক্তিটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচাইতে অপরিচ্ছন্ন নির্বাচন করেছে তাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত প্রয়োজন। মন্ত্রিপরিষদ যদি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আবেদন জানায়, তাহলে তারা দিনের ভোট রাতে করা এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে একটি কমিশন গঠন করবে। উনিতো (নির্বাচন কমিশন) প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যে যে প্রার্থিতা ঘোষণা করতে বলা হয়, সে সেসব প্রার্থীদের ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যদি নতুন নির্বাচন কমিশনার ঘোষণার নির্দেশ দেয়া হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী এই নুরুল হুদাকেই পছন্দ করবেন। আর যদি সে আবার নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পায় তাহলে নির্বাচন আরো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।
সরকারের উন্নয়নের কর্মকান্ডে দুর্নীতি হচ্ছে এমন দাবি করে রিজভী বলেন, এতই যদি উন্নয়ন হয়ে থাকে তাহলে কেন দেশ-বিদেশের মিডিয়াতে বলা গত কয়েক বছরে ১১ হাজার লক্ষ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। বর্তমান আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দেশের বাইরে বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর কটেজ কিনেছে। ইন্ডিয়ার কেরালাতে, কানাডার বেগম পাড়াসহ আরও বিভিন্ন জায়গায় তারা কটেজ কিনেছে। সেই টাকাগুলো হলো দেশের ব্রিজ তৈরি ও অন্যান্য উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা । করোনা নিয়ে কে কি সমালোচনা করলো আমি তার পরোয়া করি না স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরোয়া করবে কেন তার তো ভোটের দরকার হয় না। তার তো নির্বাচনের দরকার হয় না। তাদের শুধু প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভালো থাকলেই তাদের সব কিছু ঠিক থাকবে। আপনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মিডিয়াগুলোতে দেখা গিয়েছে ২৭ হাজার লোক মারা গিয়েছে করোনাতে। এই ২৭ হাজার লোকের মৃত্যু স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপহার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী আরও বলেন, আপনার মাঝে যদি কর্তব্যবোধ দায়িত্বশীলতা থাকতো তাহলে আপনি এই কথাগুলো বলতেন না। এই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আমলে শুধু জাল-জালিয়াতি আর চুরি হয়েছে। জনগণ মারা গেলে বা করোনায় আক্রান্ত হলে তাতে তার কিছু আসে যায় না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আপনি বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। আপনি ফ্লাইওভার দেখান, ব্রিজ দেখান এগুলোতো বিভিন্ন স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকার দেখাতো। এইগুলো দেখে কি জনগণ উপকৃত হয়? ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রের সরকারের ফ্লাইওভার করে কিন্তু তারা ধ্বংস করে দেয় স্বাস্থ্য শিক্ষা। কিন্তু তারা এইগুলো কখনো উন্নায়ন করে না। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শওকত আজিজের সভাপতিত্বে এবং কৃষকদল নেতা রকিবুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ।