সংযত আচরণ, সংহত সংগঠন থাকলেই বিজয় সম্ভব : আলাল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৩ এএম, ১২ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:১৪ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, আমরা যদি একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায় করতে পারি, তাহলে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। এর মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে, তারেক রহমান দেশে এসে গণতন্ত্রের অভিযাত্রার নেতৃত্ব তুলে নিতে পারবে। কিন্তু শেখ হাসিনার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়; এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে তার অধীনে নির্বাচন করা যাবে না।
তিনি বলেন, সংযত আচরণ, সংহত সংগঠন এই দুটো থাকলেই বিজয় সম্ভব। এই দুটো যদি আমরা করতে পারি, তাহলে নবীন দল থেকে যে নেতৃত্ব গড়ে উঠবে তখন বিএনপি আরো সমৃদ্ধ হবে। আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারব। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব এবং তাঁর হাতে গণতন্ত্রের নেতৃত্ব তুলে দিতে পারবো।
আজ শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী নবীন দলের উদ্যোগে বিএনপির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এই নেতা বলেন, জাতিকে সাংঘাতিকভাবে কুশিক্ষা দেয়ার জন্য যা করার দরকার, আওয়ামী লীগ তা করছে। তারা যে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়, তাদের এই কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের উত্তর কেন দিব? আমি দেবো না। কারণ যে গাছে ফল আছে সেই গাছে ঢিল মারবেই। ন্যাড়া গাছে তো কেউ ঢিল মারবে না। বিএনপি তো ন্যাড়া গাছ না বড় ফল বৃক্ষ। বিএনপি এই দেশে যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবারই ফলবান বৃক্ষের পরিচয় দিয়েছে।
বিএনপির এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ জাতিকে যে কুশিক্ষা দিচ্ছে এর ফল তাদেরকে ভোগ করতে হবে। কিন্তু আশ্চর্য হল একই সাথে জাতিকেও ভোগ করতে হবে। জাতিকে তো এই ফল ভোগের শিকার হতে দেয়া যায় না। সেই জন্য বিএনপির যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব পালন করার জন্যেই, বিশেষ করে নবীনদের এই যায়গাগুলোতে সঠিক নিরপেক্ষ ইতিহাসের যে চুম্বক অংশগুলো আছে সেগুলো তুলে ধরতে হবে।
যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, দেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে আওয়ামী লীগ এত কথা বলে কিন্তু বিএনপির সময় দেশে প্রবৃদ্ধি ছিল শতকরা ৭%, বিএনপির সময় বাংলাদেশের অর্থনীতি ইমারজিং টাইগার উপাধি পেয়েছিল। বিএনপির সময় ১১টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ছিল চার নাম্বারে। আওয়ামী লীগ শেখ মুজিবুর রহমানকে অপমান করতে করতে বাণিজ্যিক পণ্য বানিয়ে ছেড়েছে মন্তব্য করে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আওয়ামী লীগ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে এমন অবস্থান তৈরি করেছে টিস্যু বক্সের মধ্যে শেখ মুজিবের ছবি, মুজার মধ্যে, প্লাস্টিকের বদনার মধ্যে এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে একজন সম্মানিত মানুষকে। শেখ মুজিবুর রহমান একজন বড় মাপের রাজনীতিবিদ ছিলেন তাকে আমরা সম্মান করি ভবিষ্যতেও করব।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার দায় বিএনপির ওপর চাপানো হয়। কিন্তু তার হত্যার সাথে যারা জড়িত ছিল সবাইতো আওয়ামী লীগের। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছে আব্দুল মালেক ওই সময়কার স্পিকার। তিনি লন্ডনের এয়ারপোর্টে গিয়ে বলেছেন- বাংলাদেশ ফেরাউনের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। এটা সেই আওয়ামী লীগ। এখনো শেখ সেলিম বলেন শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সাথে শফিউল্লাহ, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন জড়িত। আর হাসানুল হক ইনু বলেন সেদিন শেখ সেলিম আমেরিকান অ্যাম্বাসিতে কেন হাজির হয়েছিলেন। সেটাও জাতি জানতে চায়। আবার শেখ হাসিনা বলেন আমার মায়ের হাতের রান্না যারা খেয়েছে তারাই আমার বাবার হত্যার সাথে জড়িত। আবার জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা বলেন আমি ছাড়া আওয়ামী লীগের সবাইকে কেনা যায়।
শেখ হাসিনার উদ্দেশে আলাল বলেন, চোর, খুনি, বাটপার সবাই যখন আপনার দলে আপনি স্বীকার করেন তাহলে জিয়াউর রহমানকে খামচি মারেন কেন? কারণটা হলো এই জায়গায় তেয়াত্তর বছরের আওয়ামী লীগের সাথে ৪৩ বছরের বিএনপি বারবার পাল্লা দিয়ে ক্ষমতায় আসে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে। এই জায়গাটাই হচ্ছে তাদের যন্ত্রণা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে এখন যে রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা এই জায়গায় বড় বাধা হচ্ছে বিএনপি, শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধ হচ্ছে তারেক রহমান। এই কারণেই তো আক্রমণ। এগুলো স্বাভাবিকভাবে নিতে হবে। যুক্তি দিয়ে করতে হবে। আর যুক্তি দিয়ে যদি করেন তাহলে সমাজের কিছু লোক এগিয়ে আসবে আপনাদের রক্ষা করতে। কেউ না কেউ আসবে। আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব, সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোহেল রানা প্রমুখ।