বিএনপি নেতাদের প্রতি দলীয় কর্মীদেরই আস্থা নেই- তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৫৫ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:০৮ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের কথা শুনলে মনে হয় তাদের নেতা-কর্মীগণ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। মির্জা সাহেবরা বা তাদের সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারের নেতা হুইসেল বাজালেই কর্মীগণ রাস্তায় নেমে পড়বে। তাদের এ স্বপ্ন অবাস্তব অবান্তর ও হাস্যকর। তারা নিজেদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিজেরাই মারামারি করে অনুষ্ঠান পন্ড করে। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি নেতাদের প্রতি তাদের দলীয় নেতা-কর্মীদেরই কোন আস্থা ও ভরসা নেই।
আজ শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রী বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বেতার সুপ্রাচীন ও সর্বজনগ্রাহ্য গণমাধ্যম। যেকোন দুর্যোগ দুর্বিপাকে গভীর সমুদ্রে বা পাহাড়ি এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ বেতারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে থাকে। তারা বেতারের ওপর নির্ভরশীল। জাতি গঠন, পরিবার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, সচেতনতা সৃষ্টিসহ দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে দিতে বেতারসহ রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যমগুলো সবসময় নিবেদিত হয়ে কাজ করছে।
তিনি বলেন, বেতারের অনুষ্ঠান শ্রোতার সংখ্যা কিছুকাল পূর্বে কমে গেলে তা এখন বেড়েছে। কেননা বেতারকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। বেতারের বিভিন্ন অনুষ্ঠান এ্যাপসের মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইউরোপসহ ভারতবর্ষেও বেতারের অনুষ্ঠান শোনা যাচ্ছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে আছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দেওয়া বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি ২৬ মার্চ ভোরে এ কেন্দ্র থেকে তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান পাঠ করে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পরবর্তীতে ২৭ মার্চ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ মেজর জিয়াকে ধরে এনে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি বঙ্গবন্ধুর নামে পুনরায় পাঠের ব্যবস্থা করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর সে ঘোষণা শুনে পুরো জাতি স্বাধীনতার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। নিরস্ত্র বাঙালি যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র পাকিস্তানীদের দখলে যাওয়ার পূর্বে মুক্তিযোদ্ধাগণ কালুরঘাটের ট্রান্সমিটারটি নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সে ট্রান্সমিটারটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে ব্যবহার করা হয়। সে ট্রান্সমিটারের সাহায্যে প্রচারিত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান শুনে মানুষ স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়েছে।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠের ঐতিহাসিক সে ট্রান্সমিটারটি চট্টগ্রামের পুরনো সার্কিট হাউজে রক্ষিত আছে। এখন বাংলাদেশ বেতার সে ট্রান্সমিটারটি কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রে পুনরায় প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যের অংশ। তাই ট্রান্সমিটারটি পূর্বের স্থানে পুনরায় স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি সেখানে একটি জাদুঘরও প্রতিষ্ঠা করা হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রের আশেপাশে অনেক উঁচু ভবন নির্মিত হওয়ায় প্রচারিত অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে শুনতে বাঁধা সৃষ্টি হয়। তাই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বড়সড় জায়গা খোঁজা হচ্ছে। তিনি বলেন, আগ্রাবাদ কেন্দ্রের ভেতর নতুন ২০ তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৬ তলা নির্মিত হবে। এসব অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হলে বেতার আরো আধুনিক ও যুগোপযোগি হবে। এছাড়া ভোলায় একটি রিলে স্টেশনসহ জামালপুর, সুনামগঞ্জ, বগুড়া ও মেহেরপুরে বেতার কেন্দ্র স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
পরে মন্ত্রী নতুন ভবন নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেন। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক এস এম মোস্তফা সারোয়ার এসময় মন্ত্রীর সাথে ছিলেন।