ধরপাকড়ে সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না : গয়েশ্বর চন্দ্র
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১২ এএম, ১০ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:৪৫ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ধরপাকড়ে সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। গত কয়েকদিন যাবত নতুন করে নেতাকর্মীদের গ্রেফাতারের প্রসঙ্গ টেনে আজ বৃহস্পতিবার সকালে তিনি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদকে নিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। পরে শহীদ নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন তারা।
এ সময়ে নাজমুন নাহার বেবী, নেওয়াজ হালিমা আরলি, ইয়াসমীন আরা হক, হেলেন জেরিন খানসহ মহানগর মহিলা দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, এই ধরপাকড় হলো একটা বার্তা। সরকার যখন দুর্বল হয়ে পড়ে তখন বিরোধী দলকে দুর্বল করার জন্য মানসিকভাবে, নেতা-কর্মীদেরকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল করার জন্য তারা মাঝে মধ্যে এরকম হাওয়া দেবে। তবে আমরা এখন বলব একটাই কথা- সব লোক জেলে যাক, তারপরেও সরকারের পতন ঠেকিয়ে রাখার কোনো সুযোগ নাই। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই, আমরা আন্দোলন করছি, আমাদের আন্দোলন করার অভিজ্ঞতা আছে। আন্দোলনে শিরোপা অর্জনেরও খালেদা জিয়ার সুনাম আছে। আর আন্দোলন কখনো বৃথা যায় না। কোনো আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী, কোনো আন্দোলন হয় স্বল্পক্ষণের জন্য। বিএনপি আন্দোলন করতে পারে ২০১৩ সালে আন্দোলন দেখেছেন, বিএনপি আন্দোলনে করতে পারে ২০১৫ সালে দেখেছেন। সামনে এমন আন্দোলন দেখবেন আর সরকারের পক্ষে দাঁড়িয়ে কথা বলার আপনাদের সুযোগ থাকবে না।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গে গয়েশ্বর বলেন, একমাত্র বেগম খালেদা জিয়া যিনি আদালত থেকে জামিন পান না। মার্ডার কেইসের আসামি, যাবজ্জীবনের আসামি, ফাঁসির আসামিও এই আদালত থেকে জামিন পাচ্ছে, অহরহ পাচ্ছে, প্রতিদিন পাচ্ছে। সুতরাং আদালতের কাছে এমন কোনো আইন নেই, যে আইনের বলে বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া যায় না। এটা আমি একদম চ্যালেঞ্জ করে বলছি। এটা একান্ত আদালতের ইচ্ছার ব্যাপার। সকলের ব্যাপারে জামিন হয়, বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের ব্যাপারে আদালতকে কেনো থামিয়ে রাখে সেটা আপনাকে বুঝতে হবে, আমাকেও বুঝতে হবে। অর্থাৎ এসকে সিনহার প্রধান বিচারপতির ওপর যে খড়গ নেমেছিলো তারপরে সকল বিচারপতিরই একটা আশঙ্কা-আতঙ্কের মধ্যে তাদের বিবেক বন্ধক, তারা আইনের বই ঘেঁটে সুষ্ঠু বিচার করার ক্ষেত্রে তাদের প্রতিবন্ধকতা আছে।
তিনি বলেন, জনগণের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নেত্রী। সুতরাং তাঁর মুক্তি আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই হবে। এর বিকল্প আমাদের কাছে কোনো পথ খোলা নেই। হ্যাঁ, আমরা চেষ্টা করছি। তবে আমার মনে হচ্ছে সেই চেষ্টা যথেষ্ট না। এখন একটাই চেষ্টা করা দরকার-এই সরকারের পতন। তাদের পতন হলে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে, গণতন্ত্র মুক্তি পাবে, অন্যায়-অবিচার থেকে মানুষ মুক্তি পাবে। এখন আমার মনে হয়, প্রতিদিন সরকারের যে দেয়া ইস্যু, এই ইস্যু আমাদেরকে উপেক্ষা করা ভালো, এই ইস্যুতে আমাদেরকে কান না দেয়া ভালো। আমাদের একটাই ইস্যু- আমরা জাস্টিস চাই, আমরা গণতন্ত্র চাই, গণতন্ত্রের বাধা কে? বর্তমান সরকার শেখ হাসিনা। তার পতনের মধ্য দিয়েই খালেদা জিয়ার মুক্তি আজকে সম্ভব। এর বাইরে অন্য কোনো পন্থায় নয়।
টাঙ্গাইলে মহিলা দলের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত : জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন টাঙ্গাইল জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী নিলুফার ইয়াসমিন খান এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদিকা অ্যাডভোকেট মমতাজ করিম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু বলেছেন, সরকার নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপি, যুবদল, মহিলা দল, ছাত্রদলসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। হামলা-মামলা করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে।
মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন কর্তৃত্ববাদী ভোটারবিহীন সরকারের অবস্থা সন্ত্রাসীদের মতো। সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অবৈধ সরকারকে প্রতিহত করতে হবে। আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছাইদুল হক ছাদু , সহ-সভাপতি মাহমুদুল হক সানু, জিয়াউল হক শাহীন, যুগ্ম সম্পাদক আবুল কাশেম, আনিসুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান খান শফিক, দফতর সম্পাদক মির্জা শাহিন, প্রচার সম্পাদক একে মনিরুল হক, টাঙ্গাইল জেলা যুবদলের আহবায়ক আশরাফ পাহেলি, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার রাশেদ, জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক দুর্জয় শুভ।