নোয়াখালীতে ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে এমপি একরামের অনুসারীদের মিছিল, আটক- ১০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:১৩ পিএম, ৬ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ১০:১৯ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
নোয়াখালীর মাইজদী শহরে ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল করেছে স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় নোয়াখালী পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ ১০জনকে আটক করে। মিছিলকারী যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীর অনুসারী বলে জানা যায়।
আজ সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে মিছিলটি মাইজদী শহরের গণপূর্ত অধিদপ্তর ভবনের সামনে থেকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় দিকে রওনা হলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম জানান, কিছু লোক ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিলের চেষ্টা করেছে। পুলিশ তাদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশ বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনকে আটক করে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
উল্লেখ্য, নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে আওয়ামী লীগের তিনটি গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা চলছে। এ উপজেলায় অনেকটা থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ভোর ৬টা থেকে অতিরিক্ত র্যাব- পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সদর উপজেলার মাইজদী শহর ও আশপাশ (মাইজদী, দত্তেরহাট, সোনাপুর) এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান জানান, ১৪৪ ধারা চলার সময় মাইজদী শহর ও আশপাশ (মাইজদী, দত্তেরহাট, সোনাপুর) এলাকায় মধ্যে ব্যক্তি, সংগঠন, রাজনৈতিক দল, গণজমায়েত, সভা, সমাবেশ, মিছিল, র্যালি, শোভাযাত্রা, যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান এবং রাজনৈতিক প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এসব এলাকায় চারজনের বেশি মানুষ জমায়েত হতে পারবে না। তিনি আরও জানান, দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১৬জন র্যাব ও শতাধিক পুলিশ সদস্য নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় টহল দিচ্ছে। এ ছাড়াও উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
জানা যায়, রোববার বিকেল ৫টার দিকে সোমবারের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে ঘিরে মাইজদী শহরের টাউন হল মোড়ে ৩টি গ্রুপের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয় এবং পাল্টাপাল্টি স্লোগান দেয়। এ সময় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগ ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিবাদ দেখা দেয়।
এভাবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী, নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহীদ উল্যাহ খান সোহেল ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শিহাব উদ্দিন শাহীনের অনুসারীরা আলাদাভাবে নিজেদের কর্মসূচি পালন করে আসছে। এক পর্যায়ে বিবাদমান তিনটি গ্রুপের অনুসারী নেতাকর্মীরা তাদের সোমবারের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে সফল করতে রোববার বিকেল থেকেই জেলা শহরে অবস্থান নেয়।
এ সময় তিন গ্রুপের অনুসারী নেতাকর্মী জেলা শহরে পথ সভা, মিছিল করলে ত্রিমুখী উত্তেজনা ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এবং প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দিলে জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।