সিলেট-৩ আসনে উপ-নির্বাচন : নিজের ভোট খুঁজে পেলেন না জাপা প্রার্থী আতিক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৪ এএম, ৫ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:১৪ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা দিকে দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজারের রেবতী মোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিজের ভোট দিতে যান সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি কর্মকর্তার কাছে নিজের ভোটার আইডি দিয়ে ভোট দেয়ার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু ইভিএম মেশিনে আতিকুর রহমান আতিকের ভোট খুঁজে পাওয়া যায়নি। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করেও ভোট দিতে না পেরে হতাশ হন আতিক। প্রশ্ন তোলেন ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ নিয়েও।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক জানান, এই হলো অবস্থা। না জানি কত মানুষ ভোট খুঁজে পাচ্ছে না। তবে নির্বাচনি কর্মকর্তারা আতিককে আশ্বস্ত করে বলেছেন; তারা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন। সমাধান হয়ে গেলে প্রার্থীকে ভোট দেয়ার জন্য ফোন করা হবে বলেও জানান তারা। এদিকে কেন্দ্রের বাইরে বেরিয়ে এসে আতিক নিজেই ঘটনাটি সাংবাদিকদের অবগত করেন। তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিটি কেন্দ্রে পর্দা ছাড়াই নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সামনে ইভিএমে ভোটারদের ভোট দিতে হচ্ছে। এতে করে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ভোটার কাকে ভোট দিচ্ছেন সেটি তো নির্বাচনী কর্মকর্তারা দেখার কথা না- প্রশ্ন তোলেন আতিক। এতে করে অনেক ভোটার ভয়ে নৌকায় ভোট দিচ্ছেন বলে দাবি করেন আতিক। এছাড়া সকালে দক্ষিণ সুরমার কুছাই ও বরইকান্দি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কর্মীরা কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন আতিক। তিনি জানান, বরইকান্দি ভোট কেন্দ্রে প্রকাশ্য দা দিয়ে ধাওয়া করা হয়েছে তার কর্মী সমর্থকদের।
সিলেট-৩ উপনির্বাচন : ভোট কেন্দ্র ফাঁকা : সিলেট-৩ আসনে গতকাল শনিবার সকালে ভোট কেন্দ্রে কিছু সংখ্যক ভোটার দেখা গেছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায় ভোটারদের উপস্থিতি। আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার ক্রোরী গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেলিবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্বভাগ সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাজী মোহাম্মদ রাজা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারের দেখা মেলেনি। তবে কেন্দ্রগুলোতে কয়েকজন নারী ভোটারকে দেখা যায়। তেলিবাজার কেন্দ্রে ভোটার মণি ইসলাম বলেন, পুরুষরা কাজে চলে গেছেন ভোট না দিয়েই। তাই বোনকে নিয়ে ভোট দিতে এসেছি।
এজেন্টদের মারধর, জোরপূর্বক নৌকায় ভোট দেয়ার অভিযোগ আতিকের : সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। মারধর করে এজেন্টকে বের করে দেয়া, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটারদের ফিরিয়ে দেয়া ও কোনও কোনও কেন্দ্রে লাঙ্গলের ভোটারদের জোরপূর্বক নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। গতকাল শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব অভিযোগ করেন। নির্বাচন নিয়ে তার অভিযোগ রিটার্নিং অফিসারের কাছেও করেছেন বলে জানান আতিক।
তিনি জানান, ফেঞ্চুগঞ্জের সাতটি কেন্দ্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দখল করে নিয়েছেন। পিটাইটিকর, কাসিম আলী স্কুল ও চন্ডিবাজারসহ অন্যান্য কেন্দ্রগুলো থেকে লাঙ্গলের এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। ভোটারদেরও মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে কেন্দ্র থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আতিকের অভিযোগ, দক্ষিণ সুরমার কুচাই শ্রীরামপুর সেন্টার থেকে লাঙ্গলের এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে। লাঙ্গলের ভোটারদের জোরপূর্বক নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
গত ১১ মার্চ করোনায় সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে আসনটি শূন্য হয়। তফসিল অনুযায়ী গত ২৮ জুলাই এই আসনের উপনির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এর দুই দিন আগে ভোট গ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করেন আদালত। পরবর্তী সময়ে নির্বাচন কমিশন ৪ সেপ্টেম্বর ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করে।