খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভার সদস্যের নামে সড়কের নাম দিয়েছেন হুইপ সামশুল: অভিজিৎ ধর বাপ্পী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৮ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:০৮ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনে জীবনবাজি রাখা ছাত্রনেতা অভিজিৎ ধর বাপ্পী ধিক্কার জানিয়ে বলেছেন, 'সিনেমার টিকেট ব্ল্যাকার থেকে এখন হুইপ হয়েছেন সামশুল হক চৌধুরী। অনেকের কোলেই সে দোল খেয়েছে। বিএনপি'র কোলে খেয়েছে, জাতীয় পার্টির কোলে দোল খেয়েছিল। এখন আওয়ামী লীগের কোলে দোল খাচ্ছেন'।
লন্ডন থেকে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর আদ্যোপান্ত তুলে ধরেছেন সাবেক এই ছাত্রনেতা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুঃসময়ের এই কণ্ডারি জানান, 'সামশুলকে আমি অনেক আগে থেকেই জানতাম। সিগারেটের ব্ল্যাকার, শাড়ির চোরাকারবারী, আদম ব্যাপারী, জায়গার দালালি করতো। '
'বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় শপথ নেওয়া অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরীর নামে পটিয়ায় সড়কের নামকরণ করেছে বিতর্কিত এই হুইপ।' ধিক্কার ও নিন্দা জানিয়েই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাপ্পী এসব কথা বলেন।
অভিজিৎ ধর বাপ্পি ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সহসভাপতি ছিলেন। স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অকুতোভয় এই ছাত্রনেতা হামলা মামলা জুলুমের শিকার হন। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়েই দলকে আঁকড়ে ছিলেন। কিন্তু অসংখ্য রাজনৈতিক মামলার মুখে শেষ পর্যন্ত দেশে থিতু হতে পারেননি। সুদূর লন্ডনে থেকেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার রয়েছেন দেশের অভ্যন্তরে ঘটা নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে ছয় মাসের জন্য দায়িত্ব পাওয়া প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, আত্মীয়করণ, অনিয়মের বিরুদ্ধেও কথা বলে সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় শুরু করে দেন। সর্বশেষ তিনি যেন বিস্ফোরণ ঘটালেন হুইপ সামশুল হক চৌধুরীকে নিয়ে।
অভিজিৎ ধর বাপ্পী বলেন, "একদিন আমি অবাক হয়ে যাই সিগারেটের ব্ল্যাকার ও সিনেমার টিকিট কারবারী বিচ্ছুকে দেখে! এমইএস কলেজের সাবেক ভিপি মামুনুর রশিদ মামুনের অফিসে একদিন দেখি তাকে। দেখেই আমি জানতে চাইলাম, কিরে বিচ্ছু এখানে কি করে? তখন মামুন আমাকে বলল, 'সামশু ভাই আমাদের দলে চলে এসেছেন। ' এরপর সামশু আমাকে ওই রুমের বাইরে এসে একটি গাড়ি দেখালো। পাজেরো জিপ। বললো, 'এটি আমার গাড়ি! সেটি ২০/২২ বছর আগের কথা। এখন সেই সামশুই জাতীয় সংসদের হুইপ!'
অভিজিৎ ধর বাপ্পি বলেন, সামশু বিচ্ছুর আগ্রাসনের কারণে অনেক ভালো কাজ হচ্ছে না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন করোনাকালে অসহায় মানুষদের জন্য 'আইসোলেশন সেন্টার' করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিচ্ছু সেখানে বাধা দিয়েছিল। একুশে পদকপ্রাপ্ত হায়দার ভাই নিরন্ন মানুষের জন্য খাদ্য বিতরণের চেষ্টা করেছিলেন। তাও বাধার কারণে সম্ভব হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশের মানুষের জন্য যে করোনার ভ্যাকসিন আনলো তা চুরি করে বিক্রি করেছে হুইপ ও তার ভাইয়েরা।"
সর্বশেষ বিচ্ছু যা করেছে তা মেনে নেওয়া যায় না উল্লেখ করে বাপ্পি বলেন, '১৫ আগস্ট ভয়াবহ রক্তাক্ত শোকের ঘটনা ঘটেছিল। যা আমাদের অস্তিত্বের সাথে জড়িত, আমাদের আবেগের সাথে জড়িত বঙ্গবন্ধু। সেই বঙ্গবন্ধু, সেই জাতির পিতাকে হত্যার পরে খুনি মোশতাকের মন্ত্রিসভায় শপথ নেয়া অধ্যাপক নুরুল ইসলামের নামে পটিয়ার আদালত ভবনের পাশের সড়কটির নামকরণ করেছে হুইপ। সে নাকি আওয়ামী লীগার! এটি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। ভাবতেই অবাক লাগে সিনেমার টিকেট ব্ল্যাকার কীভাবে যে হুইপ হয়ে যান! কী আর বলবো!'