নবম সংসদ নির্বাচনের পর কোনও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি : কামাল হোসেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৪ এএম, ৩০ আগস্ট,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:০৯ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বাংলাদেশে আর কোনও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
আজ রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরামের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় কামাল হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপরিচালনায় জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতা, নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাষ্ট্রের আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে দলীয় আনুগত্যশীল রাষ্ট্রযন্ত্রের পরিবর্তে দেশের মালিক জনগণের প্রতি আনুগত্যশীল রাষ্ট্রযন্ত্র গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সামগ্রিকভাবে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে করণীয় স্থির করতে হবে এবং বাস্তবায়নের অন্যতম কৌশল হিসেবে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের বিধান মতে জনগণের স্বার্থ অধিকার ও অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্রের জন্য আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের স্বাধীন চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা হরণ করে রাষ্ট্রপরিচালনায় জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণের বিধানকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। জনগণ রাজনৈতিক ক্ষমতার নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার গণতান্ত্রিক পদ্ধতি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের পক্ষে রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন করে নিজেদের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করবে এবং নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা কার্যকর করবে। কামাল হোসেন আরও বলেন, রাষ্ট্রের সকল কর্মকাÐের জন্য নির্বাচিত সংসদ সদস্যগণ সংসদীয় নির্বাচনী এলাকার জনগণের নিকট সরাসরি দায়ি থাকবেন এবং জনগণের নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবেন। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে পরামর্শ দেয়ার সাংবিধানিক বিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পদের মতো যোগ্যতা, মেয়াদ, ক্ষমতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সাংবিধানিক আইনের মাধ্যমে ন্যায়পাল নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। দলীয় রাজনৈতিক সমাবেশ ও কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারসহ শাসন ব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার করতে হবে। নির্বাহী বিভাগের প্রভাব ও হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।
কামাল হোসেন বলেন, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারকে বিদায় দিতে হবে। দেশকে বাঁচাতে হবে। জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন নয় দেশ গড়ার আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। জনগণের ঐক্যের ওপর ভর করে গণফোরামের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ শক্তিকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে বলে জানান গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।