প্রত্যেক মাদ্রাসায় ছাত্রলীগের কমিটি করতে সরকারকে আহ্বান নিক্সন চৌধুরীর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪২ এএম, ১৩ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২০ | আপডেট: ০১:২৬ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
মাদ্রাসার অর্থ কোথা থেকে আসে তা বের করতে দেশের প্রত্যেকটি মাদ্রাসায় ছাত্রলীগের কমিটি করতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন চৌধুরী)। গতকাল শনিবার রাজধানীর শাহবাগে গৌরব একাত্তর নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে ‘মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধে জাগরণ’ ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান।
নিক্সন চৌধুরী বলেন, সরকারকে অনুরোধ করবো, যেন প্রত্যেক ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, থানা ও জেলা পর্যায়ে যেসব মাদ্রাসা রয়েছে, প্রত্যেকটিতে যেন ছাত্রলীগের কমিটি করে দেন এবং মাদ্রাসার গভর্নিং বডিতে নির্বাচিত সদস্যদের দিয়ে দেন। মমিনুল হকদের মতো জঙ্গিদের কাছে পাকিস্তানি অর্থ কোথা থেকে আসে? সেটা বের করেন? আমরা বারবার আন্দোলনে যাই, আবার থেমে যাই। এবার আমাদের শপথ নিতে হবে যে, চিরতরে এই জঙ্গিবাদকে নির্মূল করবো।
শাহবাগে একটি মঞ্চ তৈরি করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় মঞ্চের চারদিকে পুলিশ বাহিনী নিরাপত্তা দিয়ে ঘিরে রাখে। এ সময় মঞ্চের পাশে পুলিশি নিরাপত্তা থাকায় তিনি (নিক্সন) লজ্জা প্রকাশ করে বলেন, আজ আমি এ মঞ্চে এসে লজ্জিত! পুলিশ বাহিনী দিয়ে আমাদের ঘিরে রাখা হয়েছে। কোনও প্রশাসন দরকার নেই। প্রশাসন দিয়ে আমাদের পাহারা দিতে হবে না। যদি পাহারা দিতে হয়, ওই জঙ্গি মমিনুল হকদের পাহারা দেন। আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম, আমরা প্রস্তুত হচ্ছি এ মৌলবাদীদের বিপক্ষে আরেকটি যুদ্ধের জন্য।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুই প্রথম মুসলিম ভাইদের সরকারিভাবে হজে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। আজ আমার নেত্রী শেখ হাসিনা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। সেই হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে আমরা ছোট ছোট বাচ্চাদের দেখতে পেয়েছিলাম, যাদের বাবা-মা সুন্দর জীবনের জন্য মাদ্রাসায় ভর্তি করেন, যাতে তারা ইসলাম সম্পর্কে বেশি জানতে পারে। কিন্তু এই রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী মমিনুল হকরা তাদের ব্যবহার করে, ধর্মকে অপব্যবহার করছে।
যুবলীগের এই নেতা আরও বলেন, জন্মের পর থেকে আমরা ভাস্কর্য দেখে আসছি। আমার প্রশ্ন একটাই। সেটা হলো এত বছর পর যখন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরি করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে, তখনি এই মৌলবাদী যারা এক সময় জামায়াত নামে পরিচিত ছিল, এখন জামায়াত ভেঙে হেফাজত হয়ে গেছে, তারা আজ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের প্রতিবাদ করছে। এতদিন ধরে জিয়াউর রহমান সাহেবের ভাস্কর্য নিয়ে কেউ কথা বলেনি। জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য চট্টগ্রামে আছে, সেটি নিয়ে কেউ কথা বলেনি। এখন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করার এই দুঃসাহস মমিনুল হকরা কোথায় পায়? এটি ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে পাকিস্তানের যে পরাজিত শক্তি তারা আছে। আমরা সহজ কথায় বলতে পারি, মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আমরা মাঠে নেমেছি। আমরা এ তরুণ প্রজন্ম যারা স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারিনি, কিন্তু আমাদের বাবারা সৌভাগ্যবান, তারা স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই প্রজন্মেরও সময় আসছে আরেকটা যুদ্ধে নামার। ৯ মাস না, ছয় মাসের মধ্যে এই মৌলবাদীদের পরাজিত করে তাদের পাকিস্তানে পাঠাতে হবে।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, আওয়ামী যুবলীগের নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি কোহেলী কুদ্দুস মুক্তিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযেদ্ধাগণ, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গৌরব-৭১ এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনি এবং সভা সঞ্চালনা করে সংগঠনের সভাপতি এফ এম শাহীন।