ওবায়দুল কাদের ‘খাঁচার পাখির মতো শিখানো বুলি আওড়াচ্ছেন’-গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৩৪ পিএম, ১২ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২০ | আপডেট: ০৩:০৫ পিএম, ২২ অক্টোবর,মঙ্গলবার,২০২৪
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘খাঁচার পাখির মতো শিখানো বুলি আওড়াচ্ছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
গতকাল শনিবার দেশের অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় এক দোয়া মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়া ও করোনায় আক্রান্ত বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ নেতৃবৃন্দের রোগমুক্তি কামনায় এই দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে দোয়া পরিচালনা করেন ওলামা দলের আহবায়ক মাওলানা শাহ নেছারুল হক।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশটার অবস্থা কি? দেশটার অবস্থা যে কত খারাপ। আমাদের দেশের মানুষ কিন্তু যতক্ষণ না এক কদম হাঁটতে পারে ততক্ষণ ডাক্তার দেখায় না। আর যখন ডাক্তার দেখায় তখন আর চিকিৎসা থাকে না। আমার মনে হয় দেশটা সেই পর্যায়ে আছে। আমরা সরকারের অনেক ফানুস দেখছি, তার দেমাগ দেখছি, তার কথার চোট দেখছি। ওবায়দুল কাদেরের খাঁচার পাখির মতো যেমন শিখানো বুলি প্রতিদিন দুপুরে বলতেই হয়। আমি বলছি, ওরা (আওয়ামী লীগ) আমাদের (বিএনপি) চেয়ে অনেক অনেক অনেক খারাপ আছে।
তিনি বলেন, প্রশাসন যন্ত্র এমন করা আছে যে, ওরা টের পায় না এখনো। বিএনপির ওপর নির্যাতন করার ব্যাপারে ওদের শক্তির অভাব হয় না। ওদের ওপর আঘাত আসলে ওরা রক্ষা পাইবো না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, করোনার চেয়ে ভয়াবহ তার নাম শেখ হাসিনা। এই সরকার করোনার চেয়ে গুরুতর আক্রান্ত। কেউ কেউ ভেন্টিলেশনে আছে, কেউ কেউ আইসিইউতে আছে। বাংলাদেশের একটামাত্র ব্যক্তি তিনি শেখ হাসিনা। তিনি মোরদেন ১০০% স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলেন। ভুলেও একদিনের জন্য তিনি ঘরের বাইরে যাননি। আর সব কয়টা জানালা খুলে দাও না। উনি সব কয়টা জানালা খুলে দিয়েছেন। অর্থাৎ মানুষ এখন জীবন-জীবিকার জন্য জীবনযুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। একটি রাষ্ট্রে হাজার হাজার লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি গল্প নয়, ঘটনা। রিজার্ভ চুরি, ব্যাংকের টাকার চুরি, শেয়ারবাজার টাকা চুরি, ২২ হাজার টাকার বালিশ আরো কত কিছু। শুনলে ঘা শিউয়ে ওঠে। এসব অর্থ না লুট করলে আজকে মানুষদের যদি রাষ্ট্র খাদ্য নিরাপত্তা দিতে পারতো তাহলে এভাবে করোনায় ছোটাছুটি করতো না।
এই সংকট থেকে উত্তরণে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, আজকে বলব, শত্রু, মিত্র, ভালো-মন্দ যে যেখানে আছেন দলের চেয়ে দেশটাকে আরো ভালোবাসেন। একবার সবাই বলেন, দেশের জন্য আমরা মরব। দেখবেন আমরা কেউ মরব না, আমরা সবাই বাঁচব। আর যদি একা একা বাঁচতে চাই তাহলে সবাই মরব। ১৮ কোটি মানুষকে মারার মতো এতো গুলি মজুদ সরকারের কাছে নাই। আমরা যদি মনে করি, দেশের জন্য মরব, সবাই বেঁচে থাকবে, দেশও থাকবে। আসুন আমরা যেন, আল্লাহ কাছে একটুকু প্রার্থনা করি, করোনার চেয়ে যে ভয়াবহ রোগে বাংলাদেশ আক্রান্ত সেই রোগ থেকে আল্লাহ আমাদের মুক্তি দেন, দেশটাকে রক্ষা করেন। গয়েশ্বর বলেন, ‘অনেকেই বলে বিএনপির অবস্থা খারাপ। বিএনপির অবস্থা কতটুকু খারাপ তার জন্য কোনও মায়া কান্না করার দরকার নাই। দেশটার অবস্থা খারাপ। দেশটার অবস্থা যে কত খারাপ, দেশের মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত এক কদম হাঁটতে পারে, ততক্ষণ পর্যন্ত ডাক্তার দেখায় না। আর যখন ডাক্তার দেখায়, তখন আর চিকিৎসা থাকে না। আমার মনে হয়, দেশটা সেই পর্যায়ে আছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা খাঁচার পাখির মতো প্রতিদিন শেখানো বুলি বলে যাচ্ছে। ওরা আমাদের চেয়ে অনেক অনেক খারাপ অবস্থায় আছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর বলেন, ১৮ কোটি মানুষকে গুলি করে মারার মত এতো গুলি সরকারের কাছে মজুদ নাই। সুতরাং আমরা যদি মনে করি দেশের জন্য সবাই মরবো, তাহলে কেউ মরবো না, সবাই বাঁচবো। আর আমরা নানাভাবে নানা কৌশলে যদি বাঁচতে চাই, তাহলে নানা অপকৌশলে আমরা তিলে-তিলে সবাই মরবো।
তিনি বলেন, আমরাতো মরবোই, আমাদের স্বাভাবিক মৃত্যু যখন হবার হবে কিন্তু আমরা যেন অন্যায়ের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ না করি। দেশটা যেনও আজ মৃত্যুর শিকার না হয়, জাতি যেন আজ মৃত্যুর শিকার না হয়। তাই আজকে আমি বলবো করোনার চাইতে যে কঠিন রোগে দেশ আক্রান্ত সেটা থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সভাপতি কাজী মো. আমির খসরুর সভাপতিত্বে দোয়া ও মিলাদে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সেলিমুজ্জামান সেলিম, তাঁতী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ড. মনিরুজ্জামান মনিরসহ শ্রমিক দলের বিভিন্ন থানার নেতৃবৃন্দ।