যুবলীগ নেতা আরমানের বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৪১ পিএম, ২৬ আগস্ট,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:০৯ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সম্রাটের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি এনামুল হক আরমানের ব্যবহৃত বিলাসবহুল হ্যারিয়ার গাড়িটি জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বুধবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে গাড়িটি জব্দ করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল।
দুদক সূত্রে জানা যায়, খোরশেদ আলম নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। আরমান গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তিনিই গাড়িটি ব্যবহার করে আসছিলেন। গোয়েন্দা সূত্রে খবর পাওয়ার পরপরই কালো রংয়ের (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৫৭৮৭২) গাড়িটি কাগজপত্রসহ জব্দ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য অর্ধ কোটি টাকার বেশি।
দুদকের অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, কালো রংয়ের হ্যারিয়ার গাড়ির বিপরীতে পূবালী ব্যাংকের কমলাপুর শাখা থেকে ৩৭ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন এনামুল হক আরমান। রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অল্প কিছু টাকা পরিশোধ করলেও ঋণের বড় অংশ পরিশোধ করেননি আরমান। সেই ঋণের সূত্র ধরেই গাড়িটির সন্ধান পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা সালাহউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে গাড়ি জব্দের বিষয়টি স্বীকার করলেও বিস্তারিত তথ্য জানাতে অস্বীকার করেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর আরমানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয় মামলায়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণে যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের সহযোগী আরমান। ক্যাসিনো, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির টাকার বড় অংশ আরমানের কাছে রাখতেন সম্রাট। ‘লাগেজ পার্টি’ থেকে যুবলীগ, ক্যাসিনো ও সিনেমা প্রযোজক হয়ে আরমান দাপিয়ে বেড়িয়েছেন সব জায়গায়।
নব্বইয়ের দশকে বিদেশ থেকে ‘লাগেজ পার্টির’ আনা ইলেকট্রনিক পণ্য বায়তুল মোকাররম এলাকার দোকানে দোকানে বিক্রি করতেন। পরে নিজেই লাগেজ পার্টির কারবারে যুক্ত হন। ২০১৩ সালে যুবলীগের পদ পেয়ে অল্প সময়ে গড়ে তোলেন বিত্তবৈভব। জুয়া-ক্যাসিনোর টাকায় নামেন সিনেমা প্রযোজনায়ও।
সম্রাটের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগের সুবাদেই ২০১৩ সালে যুবলীগের মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতির পদ পান আরমান। সম্রাটের ছত্রছায়ায় ক্লাবপাড়ার ক্যাসিনো ও জুয়া-বাণিজ্যের অন্যতম নিয়ন্ত্রকে পরিণত হন আরমান।
তিনিই সম্রাটকে ক্যাসিনো ব্যবসায় আগ্রহী করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্রাটের হয়ে পুরো ক্যাসিনো ব্যবসা দেখভালের দায়িত্ব পালন করতেন আরমান। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে সম্রাটের সঙ্গে গ্রেফতার হন আরমানও।