আ.লীগের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রশাসনের সংঘাতময় পরিস্থিতি ব্যর্থ রাষ্ট্রের লক্ষণ - মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩৩ এএম, ২২ আগস্ট,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৪৭ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২৪
আওয়ামী লীগের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রশাসনের সংঘাতময় পরিস্থিতি ‘ব্যর্থ রাষ্ট্রের লক্ষণ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার বিকালে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে দেখুন যেহেতু আওয়ামী লীগের জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। এজন্যে এখন নির্বাচিত প্রতিনিধি বলতে তারা যা বুঝাচ্ছে সেই ধরনের লোকগুলো আওয়ামী লীগের, তাদের সঙ্গে প্রশাসনের সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়েছে। শুধু একটি জায়গা না, শুধু বরিশাল না। ইতিপূর্বে অনেক জায়গায় আমরা দেখেছি যে, প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের যারা দায়িত্বে আছেন তাদের একটা সংঘর্ষ হচ্ছে, সংঘাত হচ্ছে। এটা একটা লক্ষণ যে, বাংলাদেশ বর্তমানে রাষ্ট্র হিসেবে যে ব্যর্থ হচ্ছে তার লক্ষণ এটা। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান রেখে ফখরুল বলেন, আজকে যেটা প্রয়োজন-আমাদের নেতা যিনি নির্বাসিত অবস্থায় বহু দূরে আমাদের থেকে অবস্থান করছেন তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমাদের নেত্রী তিনি আজকে এখনো পর্যন্ত বন্দি অবস্থায় আছেন। তাঁকে মুক্ত করা, নেতাকে দেশে ফিরিয়ে আনা, দেশে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করা সেই লক্ষ্যে আমাদেরকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদেরকে একটা সংগ্রাম ও লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এই দানবীয় শক্তিকে পরাজিত করে আমাদেরকে এখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাদেরকে বাধ্য করতে হবে যে, একটি নিরপেক্ষ সরকারের মধ্য দিয়ে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন হতে পারে, একটি পার্লামেন্ট গঠন হতে পারে। সেই লক্ষ্যে আমাদেরকে কাজ করতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে, লড়াই করতে হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, করোনা সময়ে তাদের ব্যর্থতার কারণে করোনাকে এখানে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়নি। আজকে অর্থনীতি নিচের দিকে যাচ্ছে। মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না, মানুষ দরিদ্র থেকে আরো দরিদ্র হচ্ছে এবং অর্থনীতি আরো ধীরে ধীরে রসাতলের দিকে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার কোনো গণতান্ত্রিক নর্মসে বিশ্বাস করে না, তারা মানুষের অধিকারে বিশ্বাস করে না, তারা মানবাধিকারে বিশ্বাস করে না। শুধুমাত্র তারা নিজেরা ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্যে এবং তাদের যে লক্ষ্য ১৯৭৫ সালে সফল করতে পারেনি-একদলীয় একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠার জন্যে তারা সমস্ত গণতন্ত্রের যে নর্মস, উদার রাষ্ট্রের যে সমস্ত ব্যবস্থা তাকে ধ্বংস করে দিয়ে তারা আজকে জনগণের মাথার ওপর চেপে বসে আছে।
ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের কর্মময় জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নিতে নেতা-কর্মীর প্রতি আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার স্মৃতি সংসদের সভাপতি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, স্মৃতি সংসদের এম সিরাজুল হক, রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সুলতান মাহমুদ বাবু, নিলোফার চৌধুরী মনি, ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম, ওয়ারেস আলী মামুন, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, এম তোজাম্মেলন হোসেন, শামসুজ্জামান মেহেদী এবং মরহুম ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের জামাতা মাহমুদুল হাসান প্রমুখ। এই ভার্চুয়াল আলোচনায় ব্যারিস্টার সালাম তালুকদারের সহধর্মিণী মাহমুদা সালাম, একমাত্র কন্যা সালিমা বেগমসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।