সাঈদ খোকনের বক্তব্য রহস্যজনক - রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৩ এএম, ২২ আগস্ট,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৫৩ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে আজ দেয়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বক্তব্যকে রহস্যজনক বলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে আমরা একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছি সেটা হল ঢাকার সাবেক মেয়র হানিফের ছেলে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন গতকাল চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। হামলার আগের দিন তার বাবা হানিফ তাকে আগেই বলেছিলেন যে, নেত্রীর ওপর হামলা হতে পারে এই তথ্যটা তাকে জানাও। সাঈদ খোকন ঘটনার আগের দিন নেত্রীকে জানিয়েছেন যে, আপনার বাসায় বা যাতায়াত পথে আক্রমণ হতে পারে কিন্তু এই বিষয়টা নেত্রী শেখ হাসিনা কোনো আমলে নেন নাই। এইটা আমাদের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কেন এই বিষয়টা তিনি (শেখ হাসিনা) গুরুত্ব দিলেন না? আমলে নিলেন না?
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এই সরকারের আন্দোলনের ফসল এক-এগারোর সরকারের সময় এই হামলা মামলা নিয়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নাম চার্জশিটে আসেনি। সে সময় অনেক তদন্ত করেছে। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় এসে তাদের লোক যারা নির্বাচন করবে পোস্টার ছাপিয়েছে তাকে আইও বানিয়ে তদন্ত করে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নাম দিয়েছে। এতে স্পষ্ট হয় এটা একদম পরিকল্পিত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব ঘটনায় সব সময় আমরা নিন্দা জানাই কিন্তু এই সরকার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে কারা জড়িত তাদের বের করার আন্তরিকতা এদের মধ্যে আমরা দেখতে পাই নাই। সে সময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিল কিন্তু তারা বিএনপিকে কোনো সহযোগিতা করেনি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুধাসদনে দেখতে গিয়েছিলেন তাকে। ঢুকতে দেয়া হয়নি। এবং তদন্তের বিষয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন তাও তারা করেন নাই। সবকিছু বিবেচনা করে দেখলে এবং গতকালের সাঈদ খোকনের তথ্য থেকে বোঝা যায় এখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, এই সরকার মুফতি হান্নানকে নির্যাতন করে স্বাক্ষর নিয়েছিল কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি সেটা অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন আমাকে নির্যাতন করে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় এই সরকার জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। সাঈদ খোকন যে তথ্য দিয়েছিলেন তারা সতর্ক হতে পারত বা সরকারের সাথে আলোচনা করতে পারত। আরেকটি বিষয় হলো তাদেরকে যে জায়গায় অনুমতি দেয়া হয়েছিল সে জায়গায় না করে হঠাৎ করে এখানে করে। এ থেকে বোঝা যায় যে, হামলা সাজানো ছিলো। এবং এই হামলার মাধ্যমে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করাই উদ্দেশ্য ছিল। যেটা আবারও প্রমাণিত হলো গতকাল সাঈদ খোকনের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, পরিস্থিতি দিন দিন অন্ধকার নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, যিনি তার স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য তার অফিসে তালা দেয়া হচ্ছে, ভাঙচুর করা হচ্ছে, মানে একটি ভয়ঙ্কর গুন্ডামির রাজ্য তৈরি করছে। এরা আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসছে এবং ক্ষমতায় আসার যে প্রেক্ষাপট সেই প্রেক্ষাপট তৈরি থেকেই মনে হয়েছে যে, বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দল থাকবে, তাদের ভোটের কোনো দরকার নেই, তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকবে এবং তাদের প্রভুদের খুশি করতে পারলেই তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারবে। তারা নানা ধরনের কথা বলেছে, নানা ধরনের ঘটনা তৈরি করেছে। আর সেগুলো উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করেছে, বিএনপির ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছে।
গণমাধ্যমের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যম যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারে তাহলে সেটাকে গণতান্ত্রিক সমাজ বা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা বলে না। বিচার বিভাগ আছে, গণমাধ্যম আছে, কিন্তু সবগুলোর চিন্তায় মনে হচ্ছে একটি শক্তিকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। যেখানে ভিন্ন মত স্বাধীনতা নাই সেটাকে গণতন্ত্র বলে বিবেচিত হবে না। এখন যে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা সেটাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোনো মাধ্যম এবং যারা গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করে তাদেরকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। একতরফাভাবে একদলীয় শাসনের ব্যবস্থার জন্য কাজ করানো হচ্ছে। সুতরাং বর্তমানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নয়, তাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য কাজ করান হচ্ছে।