দেশে ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ কায়েম করেছে সরকার - ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৭ এএম, ২০ আগস্ট,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:০১ এএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
সরকার দেশে ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ কায়েম করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু বরিশাল নয় সারা দেশে ‘এরকম সন্ত্রাসের রাজত্ব’ কায়েম হয়েছে। এটা একটা সন্ত্রাসের রাজত্ব, ‘রিইন অব টেরর’। আপনি দেখেন, আসিফ নজরুল সাহেবকে কীভাবে তালা লাগিয়ে দিয়েছে এবং কীভাবে তাকে থ্রেট করেছে। এটাকে কী কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশ বলবেন? এটা তো পাকিস্তানিদের থেকেও খারাপ। জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলকে নিয়ে বেলা ১২টার দিকে বিএনপি মহাসচিব শেরে বাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দেন এবং নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার, সহ-সভাপতি রফিক হাওলাদার, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরেজ জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসীন আলী, ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক সরদার মো. নুরুজ্জামান, সহ-দফতর সম্পাদক নাজমুল হাসান সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার মহানগর বিএনপির নবগঠিত কমিটির নেতা-কর্মীরা সকালে জিয়াউর রহমানের মাজারে পষ্পমাল্য অর্পণের কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার জিয়া উদ্যানে প্রবেশে পুলিশ ব্যাপক কড়াতড়ি করে। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ২৫/২৬ জন নেতাকে পুলিশ কবরপ্রাঙ্গনে প্রবেশ করতে দেয়।
পুলিশের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হওয়ার কথা। নেতা-কর্মীদের এসে ‘মহান নেতার’ মাজারে ফুলের স্তবক দিয়ে, জিয়ারত করে, মোনাজাত করে চলে যাওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। কিছুতেই একটা ভালো বেশি জমায়েত হয় সেটা তারা সহ্য করতে পারে না এবং তখন তারা অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। ১৮৭ রাউন্ড গুলি করেছে তারা (পুলিশ) নিজেরা স্বীকার করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ বিতরণেও বাধা দেয়া হচ্ছে। গতকাল নরসিংদীতে, যশোরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কীভাবে হামলা চালিয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করছে, যাতে বিরোধী দল মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, জনগণের কথা না বলতে পারে এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিরোধী দল যেন এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য এই দমন-পীড়নমূলক কাজ করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আজকেও এখানে আসার আগে আমি শুনেছি, ২৫ জনের মতো নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদেরকে বাধা দেয়া হয়েছে। আমরা গত পরশু এবং আজকে গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের মুক্তি দেয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি এবং একই মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, এই সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, তারা এখানে একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এখানে অন্য কোনো রাজনৈতিক দল থাকবে না, ঠিক যে রকম বাকশাল তৈরি করেছিলো ১৯৭৫ সালে, সেই রকম একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায় সম্পূর্ণ ফ্যাসিস্ট কায়দায়। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো স্বৈরাচারী সরকার, কর্তৃত্ববাদী সরকার, ফ্যাসিবাদী সরকার তারা দীর্ঘকাল এভাবে টিকে আছে কি? থাকতে পারে নাই। এদেরকে (সরকার) পরাজিত করতেই হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে অবশ্যই পরাজিত করতে হবে।