ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন আওয়ামী সরকার ন্যায়-নীতির তোয়াক্কা করে না - রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৩ এএম, ১০ আগস্ট,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৩২ এএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন আওয়ামী সরকার কোনো সময়েই ন্যায়-নীতির তোয়াক্কা করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ কানেও কম শোনেন এবং চোখেও কম দেখেন। তারা মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে জাতিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছেন। আজকে বলা হচ্ছে গণটিকা অভিযান চলছে। কিন্তু গণমাধ্যমে খবর আসছে দীর্ঘ লাইনেও মিলছে না করোনার টিকা। আসলে ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন আওয়ামী সরকার কোনো সময়েই ন্যায়-নীতির তোয়াক্কা করেনি। তারা শুধু লোপাট করেছে। যে কারণে আজকে ঢাকাসহ গ্রামে-গঞ্জে মানুষ করোনার চিকিৎসা পাচ্ছে না। সেসব এলাকায় আইসিইউ বেড, অক্সিজেন ও অন্যান্য জরুরি চিকিৎসা সামগ্রীর প্রচন্ড সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এসবের কারণ হলো সরকারের একটি সিন্ডিকেট স্বাস্থ্যখাতের টাকা লোপাট করেছে।
আজ সোমবার সকালে কোভিড-১৯ হেল্প সেন্টার হতে গাজীপুর মহানগর কর্তৃক চিকিৎসা ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
গণটিকা দেখে বিএনপি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়েছে। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের এই বক্তব্যের জবাবে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপির কোনো নেতা জ্ঞান হারিয়ে হাসপাতালে গেছেন এটা কি দেখাতে পারবেন? বরং আপনারা গণটিকার নামে যে অব্যবস্থাপনা তৈরি করেছেন, হাজারো মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা পাচ্ছে না। আগে যারা রেজিস্ট্রেশন করেছে তারা এসএমএস পাচ্ছে না। এসব আড়াল করতেই বিরোধীদলকে টার্গেট করছেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে মানুষকে টিকা দিতে না পেরে বিরোধীদলকে দোষারোপ করে সরকার পার পেতে চাচ্ছে। সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, অনিয়ম ঢাকতেই হাছান মাহমুদ সাহেবরা এসব কথা বলছেন। তাদের কথার মধ্যে দিয়েই এটা প্রমাণিত হয়। দেশব্যাপী গণটিকার জন্য যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার তা তারা পারেননি। তারা আমলা নির্ভর হয়ে পড়েছেন। সেজন্য করোনার সহযোগিতা দরিদ্র জনগোষ্ঠী পাচ্ছে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, মফস্বলে যারা করোনায় আক্রান্ত তারা ওষুধ, সুরক্ষা সামগ্রী কিছুই পাচ্ছে না। হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা পাচ্ছে না, অক্সিজেন পাচ্ছে না। একটা বিপন্ন অবস্থা। হাছান মাহমুদ সাহেবরা এসব এড়িয়ে যাওয়ার জন্য বিরোধীদলকে টার্গেট করেন। নিজের টিকা নেয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে রিজভী বলেন, হাছান মাহমুদ সাহেব আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, লজ্জা শরম ভেঙে প্রকাশ্যে টিকা নিচ্ছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা নিশিরাতের ভোট করে কানেও কম শোনেন, চোখেও কম দেখেন। না হলে কে কি বক্তব্য রাখছেন সেটা ভাল করে তারা শোনেন না। আমরা বলেছি অ্যাস্ট্রাজেনেকার যে টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট বানিয়েছে সেই টিকা নেব না। কারণ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম বলেছে ওই টিকা ট্রায়াল বেসিসে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। অর্থাৎ আমাদেরকে গিনিপিগের মতো ব্যবহার করা হবে। সেজন্য আমি বলেছিলাম যে, সেরামের টিকা নেব না। সেই মার্চের দিকে যে বক্তব্য দিয়েছিলাম সেটা মন্ত্রী ভালভাবে শোনেননি। সেজন্য উল্টাপাল্টা কথা বলছেন। আমি এখন যে টিকা নিয়েছি সেটা মডার্নার টিকা।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে গাজীপুর মহানগর বিএনপি আর্তমানবতার সেবায় যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এজন্য অবশ্যই ধন্যবাদের যোগ্য। দলের ভারপ্রাফত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে করোনার হেল্প সেন্টার থেকে ওষুধসহ চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে গাজীপুর মহানগর এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনারা যে আয়োজন করেছেন, চিকিৎসা ও সুরক্ষা সামগ্রী সংগ্রহ করে মানুষের মাঝে বিতরণ করছেন। এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। গাজীপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সালাহ উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মো. সোহরাব উদ্দিন, প্রথম যুগ্ম-আহবায়ক মো. শওকত হোসেন সরকার, যুগ্ম আহবায়ক মো. হান্নান মিয়া হানু, সদস্য রাশেদুল হক, আব্দুস সারাম, জয়নাল আবেদীন তালুকদার, সরকার জাভেদ আহমদ সুমন, রাশেদুল ইসলাম কিরন, সদস্য মো. আব্দুর রহিম খান, মো. রবিউল আলম, সাজ্জাদুর রহমান, শাহাদাত হোসেন শাহিন, অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, আব্দুর রহিম মাতবর প্রমুখ।