বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা ‘ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ’-কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:১৯ এএম, ৭ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২০ | আপডেট: ০২:৪৬ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের অবমাননাকে ‘ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ’ উল্লেখ করে এ ঘটনায় ‘ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শাস্তি দেয়া হবেই’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ভাস্কর্যবিরোধীদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ গায়ে পড়ে আক্রমণ করে না, তবে আক্রমণের শিকার হলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে একবিন্দুও পিছপা হয় না। অনেক হয়েছে, এবার থামুন। এ প্রসঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে দেবেন না। এখনও দলের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছি, আবারও বাড়াবাড়ি করলে আওয়ামী লীগের কর্মীরা ঘরে বসে থাকবে না।
আজ রবিবার (৬ ডিসেম্বর) নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।
তিনি বলেন, ইতিহাসের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দেশব্যাপী ধর্মীয় বিভেদ তৈরির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এদেশ ও জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতার স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাস্কর্যের ‘অবমাননা’ দেশের চেতনার মর্মমূলে আঘাত হানা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রদর্শন ও সংরক্ষণ সাংবিধানিকভাবেই বিধিবদ্ধ বিষয়। তাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা প্রকারান্তরে সংবিধানেরও অবমাননা। দেশের লাখ লাখ সাধারণ মানুষ ও কর্মী আজ ক্ষুব্ধ। তাদের হৃদয়ের আবেগ অনুধাবন করছি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে এদেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু মানে দেশ এবং সংবিধান, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা মানে দেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আক্রান্ত করা। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে অর্ধশতকের স্মৃতি বিজরিত মধুদার ভাস্কর্যের আংশিক ভাঙচুরেরও তীব্র নিন্দা জানান। মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান সকলের মিলিত রক্তের স্রোতধারায় অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এ স্বাধীনতা কোনও নির্দিষ্ট বা সম্প্রদায়ের স্বার্থের কাছে জিম্মি হতে দেবো না- সাফ জানিয়ে দেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, পবিত্র সংবিধান ও দেশের আইন পরিপন্থি কোনও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য, মন্তব্য ও আচরণ বরদাস্ত করা হবে না।
নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম বিষয়ে তিনি বলেন, নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা দুই মেরুতে অবস্থান করায় সাময়িকভাবে তাদেরকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে তারা এখনও দলের নেতা।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ এখনও এতোটা বিপদে পড়েনি যে, যখন তখন যাকে তাকে দলে জায়গা দিয়ে দল ভারি করতে হবে। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল ফারক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শিল্পমন্ত্রী নুরল মজিদ হুমায়ুন ও জেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলীসহ অন্যরা।