ছাত্রলীগ নেতার কবজি কাটলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:১৩ পিএম, ২৯ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৫০ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় ছাত্রলীগের এক নেতার হাতের কবজি কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
গতকাল বুধবার (২৮ জুলাই) বুধবার রাতে উপজেলার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের হাজী মসজিদসংলগ্ন জলকপাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
আহত ছাত্রলীগ নেতার নাম রাকিবুল ইসলাম (২২)। তিনি কলাপাড়া উপজেলার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ছাত্রলীগের নেতার পরিবারের অভিযোগ, মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেছেন, এক বছর আগে রাকিবুল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করেন। ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে সাইফুল ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুলের ওপর হামলা চালিয়েছেন। তবে সাইফুল ওই ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল ইসলামের মামা গাজী মো. মাইনুল ইসলাম জানান, গতকাল রাত সাড়ে ৯টার সময় রাকিবুল তেগাছিয়া বাজার থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। হাজী মসজিদসংলগ্ন জলকপাট এলাকা অতিক্রম করার সময় সাইফুল, তাঁর ছোট ভাই তরিকুল, নবী হোসেন, বাদশা খলিফা, জাকারিয়া জমাদ্দার, রুবেল সিকদার, মাসুম হাওলাদারসহ ১০-১২ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী রাকিবুলের ওপর হামলা চালান।
তাঁরা রাকিবুলকে প্রথমে বেদম মারধর করেন। পরে মাটিতে পড়ে গেলে তাঁরা রামদা দিয়ে তাঁকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা রাকিবুলের ডান হাতটি টেনে নিয়ে একটি কাঠের ওপর রেখে রামদা দিয়ে কুপিয়ে কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন।
রাকিবুলের মামা মাইনুল ইসলাম বলেন, রামদার কোপে রাকিবুলে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখম হয়েছে। ঘটনার পর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইফুল ও তাঁর সহযোগীরা পাশের তেগাছিয়া বাজারে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের বলেন কে বা কারা রাকিবুলকে কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে গেছেন। এ ঘটনা জানার পর স্থানীয় ব্যক্তিরা রাকিবুলকে উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, রাকিবুল গত বছর সাইফুলকে কুপিয়ে জখম করেন। ওই সময় রায়হানের ডান হাতের রগও কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ নিয়ে আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে। ওই ঘটনার জের ধরেই রায়হান প্রতিশোধ নিতে রাকিবুলের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
কুপিয়ে ছাত্রলীগ নেতার হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে রায়হান বলেন, ‘কে বা কারা এমন হামলা করেছে তা আমি জানি না। তবে আমি বা আমার কোনো আত্মীয় এ ঘটনার সাথে জড়িত নই।’
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. মাইনুল হোসেন বলেন, ‘রাকিবুলের ডান হাতের কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তাঁর মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানেও গুরুতর জখম রয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে দ্রুত বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে কলাপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশাদুর রহমান বলেন, ‘আসলে এ ঘটনাটি পূর্বশত্রুতার জের ধরেই হয়েছে বলে আমরাও শুনেছি। আমরা ইতিমধ্যে আহত ব্যক্তিকে দেখে এসেছি। অপরাধীদের ধরার জন্যও পুলিশি তৎপরতা চলছে। সন্ত্রাসীরা যত বড়ই হোক আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না।’