করোনাকালে কৌশল অবলম্বন করেই আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে-গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০১ এএম, ৬ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২০ | আপডেট: ০৩:৫৮ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। গুলশানের বাসায় বেগম খালেদা জিয়া ‘গৃহবন্দি’ উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, করোনার শুরুর সময়ে দেশনেত্রীকে রাতারাতি মুক্তি বুঝতে হবে। অর্থাৎ তাঁর চিকিৎসার দায়ভার শেখ হাসিনা নেয়ার সাহস করে নাই, ইচ্ছা প্রকাশ করে নাই। শেখ হাসিনা তাঁকে মুক্তি দেবে কেনো? আইন আছে, আদালত আছে। আদালতে তিনি জামিন প্রাপ্য। তাহলে আজকে যদি শেখ হাসিনা নির্বাহী আদেশে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে পারেন আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট কী শেখ হাসিনা তাঁকে জেল দিয়েছে। আদালত কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে যদি বেগম খালেদা জিয়া দোষী সাব্যস্ত হয়। আদালতের আইন অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়ার শতভাগ অধিকার আছে জামিন প্রাপ্তির। তিনি জামিন পেলেন না কেনো? বেগম খালেদা জিয়া এখন গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসাটাও নিতে পারছেন না।
আজ শনিবার (৫ই ডিসেম্বর) এক দোয়া মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় তিনি এই মন্তব্য করেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে করোনায় আক্রান্ত দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য শ্রমিক নেতা নজরুল ইসলামসহ নেতৃবৃন্দের আশু আরোগ্য কামনায় এই দোয়া মাহফিল হয়।
করোনাকালে কৌশল অবলম্বন করেই আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে বলে মন্তব্য করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজকের এই বিজয়ের মাস, যে বিজয় যে লক্ষ্যে অর্জিত হয়েছিলো সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য এই বিজয়ের মাসে আনন্দের পাশাপাশি অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে গণতন্ত্রের চেতনা বোধ থেকে আবার আরেকটি গণতন্ত্রের যুদ্ধ করতে হবে। যে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ‘হয় মরবো না হলে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো’-এই প্রতিজ্ঞা আমাদের করতে হবে। একাত্তরে যারা আমাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধ করে মারা গেছেন সেই শহীদদের রক্তের ঋণ কী পরিশোধ করার দায়-দায়িত্ব আমাদের নাই? যদি থাকে তাহলে আমরা জীবন-জীবিকার জন্য রাস্তায় মরতে পারি তার যে প্রাণশক্তি গণতন্ত্র, সেই গণতন্ত্রের আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে করোনার কথা বলে আমরা পিছিয়ে যাবে কেনো? আমাদের কোনো না কোনো কৌশল অবলম্বন করে এগিয়ে যেতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবকে বলব, বিএনপি আন্দোলন করেছে অতীতে। আপনার মতো লোককে বিএনপির হাওলাত করে আনতে হবে না। আমাদের নেতা, প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করে গাজী হয়েছেন, শহীদ হন নাই। বিএনপির পরবর্তীকালে স্বৈরাচার বিরোধী আপোসহীন নেতৃত্বের নাম অথবা গণতন্ত্রের অপর নাম বেগম খালেদা জিয়া- তাঁর কর্মী আমরা। সুতরাং আন্দোলন-সংগ্রামে সফলতা আমাদের আছে, অতীত আমাদের ছিলো, ভবিষ্যতেও আমরা সফল হবো-এই গ্যারান্টি আমরা দিতে পারি। কিছু বলছি না, কিছু করছি না-তার অর্থ কিন্তু ওবায়দুল কাদের সাহেবকে মুচলেকা দেই নাই আপনাদেরকে ক্ষমতায় চিরস্থায়ী রাখবো। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফেরত আনবো-এইটুকু প্রতিশ্রুতি আমি ব্যক্ত করতে চাই।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে মরি নাই। এখন যদি রাজপথে মরি- সেটাই হবে আমার গৌরবের। কিন্তু করোনায় যদি আমার মৃত্যু হয়- খুব কষ্ট পাবো। কারণ করোনা প্রতিরোধের চেয়েও বেশি প্রতিরোধ ব্যক্তিগত-সমষ্টিগত-জাতিগতভাবে আজকে এই সরকারের অপকর্ম প্রতিরোধ-প্রতিহত করে এই আকাক্সিক্ষত স্বাধীনতার চেতনা গণতন্ত্রকে মুক্ত করে গণতন্ত্র যদি আমরা প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইনের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।