পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুল ইসলামের শুভেচ্ছা ও বাণী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪৮ পিএম, ১৯ জুলাই,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:০৪ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
দেশবাসীকে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ও বিএনপি'র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বাণী,
"পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের সকল মুসলমানদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ। ঈদ মোবারক। ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত প্রতি বছর ঈদ-উল-আযহা আমাদের মাঝে ফিরে আসে। স্বার্থপরতা পরিহার করে মানবতার কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করা কোরবানীর মহান শিক্ষা। মানবিক মূল্যবোধে উদ্ভাসিত ঈদ-উল-আযহা হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-ক্রোধকে পরিহার করে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আত্মনিবেদিত হতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। কোরবানীর যে মূল শিক্ষা তা ব্যক্তি জীবনে প্রতিফলিত করে মানব কল্যাণে ব্রতী হওয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিনের সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ সম্ভব। বিশ্বাসী হিসেবে সে চেষ্টায় নিমগ্ন থাকা প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
ঈদ-উল-আযহা বিশ্ববাসী মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দু'টি ধর্মীয় উৎসবের একটি। উৎসব সকল ভেদরেখা অতিক্রম করে মানুষকে পারস্পরিক শুভেচ্ছাবোধে উদ্বুদ্ধ করে। মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয় ভ্রাতৃত্বের নিবিড় বন্ধন। সকল দ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা, প্রতিহিংসার বিষকে দূরীভূত করে সম্প্রীতির এক স্বর্গীয় অনুভুতি মানুষের মধ্যে জেগে ওঠে। ভয়ংকর কোভিড-১৯ এর আঘাতে বিশ্বমানবগোষ্ঠীর জীবন, সমাজ, সংস্কৃতি যেন বদলে গিয়ে এক অচেনা রূপ ধারণ করছে। মানুষের দিন অতিবাহিত হচ্ছে আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে। বাংলাদেশও সেই বৈশ্বিক মহামারীতে আক্রান্ত। মানুষের জীবন ও জীবিকার কোন নিরাপত্তা নেই।
ঈদের প্রাক্কালে করোনা ভাইরাসের ছোবলে অসংখ্য প্রাণহানিসহ হাজার হাজার মানুষের অসুস্থতার ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ভয়াল দুর্দিন উৎসবের আনন্দকে ম্লান করে দেয়। দেশের বর্তমান অবস্থায় সকলের পক্ষে ঈদের আনন্দ যথাযথভাবে উপভোগ করা কঠিন হবে। একদিকে গণতন্ত্রহীনতায় এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় দিনযাপন করছে দেশবাসী, মত প্রকাশের স্বাধীনতার টুঁটি চেপে ধরে বিরোধী শক্তির ওপর চলছে হামলা-মামলা-গুম-গ্রেফতারের মতো নির্দয় নিপীড়ণ। অন্যদিকে করোনার ব্যাপক সংক্রমণে মৃত্যু, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি দরিদ্র, কম আয় ও কর্মহীন মানুষকে চরম দুর্ভোগের মুখে ঠেলে দিয়েছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষ আরো বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আমি বিএনপি নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে অসুস্থ রোগী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের প্রতি সাহায্য ও সহমর্মিতার হাত প্রসারিত করার জন্য আহবান জানাচ্ছি।
ঈদের আনন্দের দিনে কেউ যাতে অভুক্ত না থাকে- সেদিকে আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। সবাইকে একসাথে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে হবে। ঈদ-উল-আযহা সবার জীবনে বয়ে আনুক সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি, সমাজে সৃষ্টি হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যরে মেলবন্ধন, মহান আল্লাহ তা'য়ালার দরবারে এই প্রার্থনা জানাই। ঈদ মোবারক।
আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।"
পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাণী
"পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলমানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাই। তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করি। আল্লাহ তায়ালার সন্তষ্টি অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে ব্রতী হওয়াই কোরবানীর মর্মবানী। পশু কোরবানীর পাশাপাশি মনের পশু কোরবানী দিয়ে জীবন-যাপনে শ্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনে ব্রতি হওয়া আমাদের কর্তব্য। কোরবানীর সে শিক্ষাকে বুকে ধারণ করে মানব কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করা আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।
দেশ এখন এক চরম দু:সময় অতিবাহিত করছে। করোনা মহামারী মোকাবেলায় সরকারের চরম ব্যর্থতায় সারাদেশের মানুষ বিপর্যস্ত, অসুস্থতা ও ক্ষুধার জ্বালায় হাহাকার করছে অসহায় মানুষ। অভাব ও ক্ষুধার তাড়নায় কেউ কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। অপরিকল্পিত লকডাউন ও সমন্বয়হীনতায় মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন। মানুষের দিন কাটছে জীবন-মৃত্যুর অজানা আশংকায়। এর ওপর স্বেচ্ছাচারী শাসনের কবলে জনগণ অধিকারহীন ও বাকরুদ্ধ। অগণতান্ত্রিক শক্তির দানবীয় উত্থানে রাষ্ট্র ও সমাজে ভয় ও আতঙ্ক আধিপত্য বিস্তার করে আছে। অনির্বাচিত ভ্রুক্ষেপহীন সরকারদের জনগণের জন্য কোন দায়িত্ববোধ থাকে না। জনগণের সাথে মশকরা করাই যেন তাদের একমাত্র কর্মসূচি। সরকারের অপরিণামদর্শিতা এবং উদাসীনতা ও সিদ্ধান্তহীনতায় করোনার চিকিৎসা সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে, আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতালের বারান্দায় বারান্দায় কাতরাচ্ছে। অথচ সরকার নির্বিকার। বর্তমান সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে নানা ধরণের প্রহসন ও নাটক প্রদর্শন করছে।
আত্মত্যাগের এক অবিস্মরণীয় ঘটনার প্রেক্ষিতে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়ে আসছে। শ্রষ্টার প্রতি নি:স্বার্থ আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকি নিদর্শন হিসেবে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা প্রতি বছর পশু কোরবানী দেয়, এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাকের প্রতি নিবেদিত বান্দা হওয়ার প্রেরণা জোগায়। কোরবানীর ঈদ বিশ্ব মুসলিমের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। যেকোন উৎসব বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য নয়, উৎসবের রয়েছে একটি সার্বজনীন বৈশিষ্ট্য। উৎসব মানবজাতির এমন এক সাগর তীর যেখানে ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে সকলেই সামিল হতে পারে। তাই স্বার্থচিন্তা পরিহার করে মানব কল্যাণ এবং সমাজে শান্তি, ন্যায়, সুবিচার ও সোহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে। আসুন, আমরা অঙ্গীকার করি-এই 'ত্যাগের উৎসবের' দিনে করোনায় বিপন্ন মানুষসহ অসহায়-নিরন্ন মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার।
ঈদ-উল-আযহা সকলের জীবনকে করে তুলুক আনন্দময়, মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে আমি এ প্রার্থনা জানাই। ঈদ মোবারক।
আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।"