বায়তুল মোকাররম থেকে ভাস্কর্যবিরোধী বিক্ষোভকারীদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৮ এএম, ৫ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২০ | আপডেট: ০১:২১ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে বিক্ষোভ বের করেছেন একদল মুসল্লি। জুমার নামাজ শেষে তারা এই বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিক্ষোভে তারা ভাস্কর্যবিরোধী স্লোগান দিয়েছেন। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার (৪ঠা ডিসেম্বর) জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিদের একটি অংশ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট দিয়ে বেরিয়ে যায়। আরেকটি অংশ মসজিদের সিঁড়ির ওপর অবস্থান নেয়। পরে পুলিশের বিশেষ শাখার একজন সদস্য মুসল্লিদের সেখান থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিলে ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। মিনিট পাঁচেক স্লোগান দেওয়ার পর একটি অংশ উত্তর গেট দিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে এলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পরে মসজিদের ভেতর অবস্থানকারী মুসল্লিরা ১০ মিনিটের মতো ভাস্কর্যবিরোধী এবং নাস্তিকদের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিয়ে অবস্থান নেন। বেলা সোয়া ২টার দিকে অবস্থানকারী মুসল্লিরা সড়কে বেরিয়ে আসেন। মসজিদের উত্তর পাশে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে তারা পল্টনের দিকে মিছিল নিয়ে বের হন। বিক্ষোভ মিছিলটি পল্টন মোড়ে এলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আজকের কর্মসূচিতে কোনো সংগঠনের ব্যানার ছিল না। তবে বিক্ষোভকারী একজন মুসল্লির হাতে ‘বাতিলের আতঙ্ক বাংলার ভাগ ফয়জুল করিম মামুনুল হক’ লেখা একটা প্লাকার্ড ছিল। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া খিলগাঁও এলাকার বাসাব থেকে আসা একজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী বলেন, বিক্ষোভ করার জন্য এখানে এসেছেন। সারা দেশে ভাস্কর্য নির্মাণের প্রতিবাদে তাদের এই কর্মসূচি।
পুলিশের মতিঝিল জোনের এডিসি এনামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আগে থেকে অনুমতি ছাড়া যেকোনো কর্মসূচির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এরপরও জুমার নামাজ শেষে একদল মুসলিম বিক্ষোভ মিছিল বের করেছেন। তারা শাহবাগের দিকে যেতে চেয়েছেন। পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয়।
এর আগে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের চারপাশে কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়েছিল।
জুমার নামাজের আগে মতিঝিল জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত জুমার নামাজ শেষে একদল লোক ভাস্কর্যবিরোধী কর্মসূচির নামে সহিংসতার চেষ্টা করেছিলেন। তারা অনুমতি ছাড়া এ ধরনের কোনো কর্মসূচি করবেন না বলে কথা দিয়েছেন। তাদের ওপর আস্থা রাখা যাচ্ছে না। তাই অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, বায়তুল মোকাররমের আশপাশের এলাকায় অন্তত ৪০০ থেকে ৫০০ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়াও মৎস্য ভবন, কাকরাইল, নয়াপল্টন, পুরানা পল্টন এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও রায়টকার মোতায়েন ছিল।