খুলনায় অব্যাহত ‘বকুল করোনা সাপোর্ট সেন্টারের’ কার্যক্রম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪১ পিএম, ১৭ জুলাই,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫৫ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
করোনাকালে মানুষ যখন দিশেহারা, ঘরবন্দি, তখন সাবেক এক ছাত্রনেতার উদ্যোগে আক্রান্ত মানুষের সেবায় ছুটছে একঝাঁক তরুণ স্বেচ্ছাসেবী। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টার যে কোনো সময় ফোন পেলেই অক্সিজেন নিয়ে করোনায় শ্বাসকষ্ট মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তাদের লক্ষ।
শুধু অক্সিজেন সিলিন্ডার বাসায় পৌঁছে দেয়াই নয়, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তা আক্রান্তদের মুখে সংযুক্ত করে দিচ্ছেন।
করোনার হটস্পট খুলনায় এই বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দিচ্ছেন সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা ও গত একাদশ সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৩ আসন থেকে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল।
তিনি সেখানে গড়ে তুলেছেন ‘বকুল করোনা সাপোর্ট সেন্টার’। এই সেন্টারের অফিস রয়েছে দুটি। একটি খালিসপুর থানার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে, আরেকটি দৌলতপুর থানার মিনাক্ষী সিনেমা হলের সামনে। দুটি অফিসে রয়েছে প্রায় ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবীর একটি দল। সেখানে শুধুমাত্র অক্সিজেন সেবাই নয়, চিকিৎসক এর কাছ থেকে চিকিৎসা, প্রয়োজনীয় ঔষধসহ আনুষঙ্গিক সব ধরনের সুবিধা। এছাড়া চিকিৎসা সেবার সঙ্গে সঙ্গে হাজারো দুস্থ ও অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তাও দেয়া হচ্ছে আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুলের পক্ষ থেকে।
করোনাকালে তার ফ্রি চিকিৎসা সেবা ও অক্সিজেন সরবরাহ এবং গরীব-অসহায়দের মাঝে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি স্থানীয় মানুষের কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বিপদের বন্ধু হিসেবে পরিচিতও পেয়েছেন তিনি।
রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, সাধারণত দেখা যায় অক্সিজেন সিলিন্ডার এক জায়গায় রেখে দেয়া হয়। সেখান থেকে যাদের প্রয়োজন তারা নিয়ে যায়। কিন্তু আমরা তা করছি না। আমাদের কর্মীবাহিনী আছে। যাদের অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগছে তারা যে কোনো সময় ফোন করলেই বাসায় তা পৌঁছে দেয়া হয়। শুধু তাই নয় অক্সিজেন মুখে সেট করেও দেয়া হয়। অক্সিজেন মুখে যেভাবে সংযুক্ত করতে হয় তার প্রশিক্ষণ দেয়া আছে আমাদের কর্মীবাহিনীর। তাদের পিপিই, মাস্ক দিয়ে সুরক্ষিত করে পাঠানো হয়। এটা রিস্ক হলেও আমরা তা করছি। আমাদের ফোন নম্বর দেওয়া আছে। যে কেউ ফোন করলেও তাদের কাছে পৌঁছে যাবে আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা।
করোনাকালে সাবেক এই ছাত্রনেতার মানবিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার নির্বাচনী আসনে (খুলনা-৩) ১৫টি ওয়ার্ড এবং দুইটি ইউনিয়ন রয়েছে। তিনি সেখানে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার সাধারণ মানুষকে ত্রাণ দিয়েছেন। তৃতীয় লিঙ্গের তিন’শ জনকে এবং প্রতিবন্ধীদের এক হাজার প্যাকেট ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ঈদের আগে অসহায় ও গরীব মোট আড়াই হাজার লোককে ঈদ উপহার দেওয়া হয়েছে। তারা যেন ঈদের দিন ভালো থাকতে পারেন। ওই সময়ে দলীয় নেতাকর্মী যারা গুম-খুন-নির্যাতনের শিকার তাদেরকে নগদ টাকা দিয়েছেন। এটা করা হয়েছে ৫০ জনের ওপর নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারকে। রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার প্যাকেটের বেশি। প্রত্যেক দিন এখনও এই কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়া গত বছর যখন করোনা প্রকোপ শুরু হয়েছিল তখনই সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ২০০ এর বেশি মসজিদে ১০ হাজারের ওপর মাস্ক এবং স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রী যেমন-সাবান স্যানিটাইজার এগুলো বিতরণ করা হয়েছে। তার আগে লিফলেট ও বিলবোর্ডের মাধ্যমে করোনা সম্পর্কে এলাকার মানুষকে সচেতন করা। প্রত্যেক পাড়া-মহল্লার মোড়ে মাড়ে এবং যেখানে ঘনবসতি আছে ও একটু নোংরা যেসব জায়গা সেখানে জীবাণুনাশক স্প্রেও বিতরণ করা হয়।