আর কত মাস ‘চিকিৎসা’ নেবেন সম্রাট-শামীমরা?
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:০৫ এএম, ৮ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৫৪ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কারা-হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ‘চিকিৎসা’ নিচ্ছেন শতাধিক বন্দি। কারাগারের বাইরের হাসপাতালগুলোতে কত বন্দি আছেন তার সঠিক তথ্য জানাতে পারেননি কারা কর্মকর্তারা। তবে এর মধ্যে যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও বিতর্কিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীম বেশ কয়েক মাস ‘চিকিৎসা’ নিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)-এর প্রিজন সেলে। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৭ কারাবন্দি। এর মধ্যে একজন ভারতীয় নারী উর্মিলা। অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছিল। ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন হাসপাতালের কেবিনে বসে ইন্টারনেট ব্যবহার করে জুম বৈঠক করেছিলেন। এ কারণে গত ৩ জুলাই কারাগারে ফেরত পাঠানো হয় তাকে। মূলত এ ঘটনার পরই বন্দিদের দীর্ঘ ‘চিকিৎসা’ নিয়ে শুরু হয় গুঞ্জন। নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় কারা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, রফিকুল আমিনের জুম বৈঠকের ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেলে হাসপাতালে দায়িত্বরত ১৩ কারারক্ষীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। সাময়িক বরখাস্ত করা হয় চার কারারক্ষীকে। গঠন করা হয় একাধিক তদন্ত কমিটি। ক্যাসিনো ও মানি লন্ডারিংসহ একাধিক মামলায় দীর্ঘদিন কারাবন্দি আছেন জি কে শামীম ও সম্রাট। কারাবন্দি থাকলেও তারা বিভিন্ন সময় বিএসএমএমইউ ও বারডেমসহ কয়েকটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তাদের ‘চিকিৎসা’ চলছে মাসের পর মাস।
কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে বিএসএমএমইউর প্রিজন সেলে আছেন সম্রাট। তার হার্টে সংক্রমণের কথা জানা গেছে। ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিকেতনের বাসা থেকে গ্রেফতার হন শামীম। তার এক হাতে মেডিক্যাল ডিভাইস লাগানো রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যার কথা বলে প্রায়ই হাসপাতালের প্রিজন সেলে গিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ এ বছরের ১৫ এপ্রিল থেকে আবারও ‘চিকিৎসা’ নিচ্ছেন শামীম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনজন, বক্ষব্যাধি হাসপাতালে দুজন, পঙ্গু হাসপাতালে একজন, হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে পাঁচজন, মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালে সাতজন এবং সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ছয়জন কারাবন্দি চিকিৎসাধীন। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের বন্দিদের মধ্যে আছেন ভারতীয় নারী উর্মিলা। কাশিমপুর মহিলা কারাগার থেকে ৪ জুলাই তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়াও এ হাসপাতালে আজগর আলী নামের আরেক বন্দি আছেন যিনি মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি। ১৫ এপ্রিল থেকে ভর্তি আছেন তিনি।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কারাবন্দিদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। আবার হাসপাতাল থেকে কারাগারে পাঠাতে হলেও চিকিৎসকের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এখানে কারা কর্তৃপক্ষের কোনও ভূমিকা নেই। তবে প্রতি ১৫ দিন পর পর কারা কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে বন্দিদের চিকিৎসার তথ্য জানতে চায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বন্দিকে সুস্থ মনে করলে কারাগারে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকে।