খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা এবং মুক্তি প্রদানের আহবান বিএনপির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৫ এএম, ২৩ জুন,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০২:৪২ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করা এবং তাঁর মুক্তি প্রদানের আহবান জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার গুলশানে গত শনিবারের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভার সিদ্ধান্ত জানাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহবান জানান।
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে প্রেরণে দলের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আগে বলিনি, ওনার পরিবার বিদেশে প্রেরণের কথা বলেছিলো। আমরা এবার পার্টির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রেজুলেশন নিচ্ছি যে, তাঁর বিদেশে চিকিৎসা দরকার। এর জন্য যা কিছু সরকারের করা দরকার সরকারের করা উচিত ইমিডিয়েটলি। তারপরের যে স্টেপগুলো আছে পরবর্তীতে আলাপ-আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।
গত শনিবার বিকাল ৪.৩০ মি: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। সভায় আলোচ্য বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার শেষে নিম্নে বর্ণিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়।
১। সভায় বিগত ১২ মে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়।
২। সভায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে আসা এবং শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে মহাসচিব সদস্যবৃন্দকে অবহিত করেন।
দেশনেত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে দেশনেত্রীর চিকিৎসক বোর্ডের প্রধান ড. সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান যে, দেশনেত্রী কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত হলেও কোভিড পরবর্তী কয়েকটি জটিলতায় ভুগছেন এবং তিনি কোনও মতেই ঝুঁকিমুক্ত নন। তাঁর হৃদরোগের সমস্যা আছে। কিডনী এবং লিভারের সমস্যা বেশ জটিল। এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রায় ৫৩ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। ইতিপূর্বে প্রায় ১২ দিন বাসায় করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা নেন। পরিস্থিতি জটিল হলে তাঁকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালে তিনি কেবিনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ায় তাঁকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে প্রায় ৩৩ দিন তাঁকে চিকিৎসাধীন থাকতে হয়। তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে এবং নিবিড় পরিচর্যায় কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস চলে গেলেও পোস্ট কোভিড জটিলতায় এবং দীর্ঘ দিন কারাগারে থাকার কারণে কোনও চিকিৎসা না হওয়ায় হার্ট, লিভার ও কিডনির সমস্যা বেশ জটিল হয়ে ওঠে। কিন্তু দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকার ফলে হাসপাতালজনিত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে আক্রান্ত হন দুইবার। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলেও হাসপাতালে দীর্ঘদিন অবস্থানকালে সেই ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ আবারও হতে পারে বলে তারা মনে করেন। অন্যদিকে হাসপাতালে নন-কোভিড এরিয়ায় কয়েকজন নার্স এবং চিকিৎসক ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হলে তাঁরা দেশনেত্রীকে হাসপাতালে রাখা সমীচীন মনে করেননি। সেই কারণে বাসায় চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের আয়োজন সম্পূর্ণ করে বাসায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে যে বিষয়টি তাঁরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অবগত করেন যে, তাঁর লিভার ও অন্যান্য জটিলতার চিকিৎসা বিদেশে কোনো উন্নত কেন্দ্রে করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে যার সুযোগ তুলনামূলকভাবে কম। সভা মনে করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধু একজন বয়স্ক রাজনীতিবিদ নন, তিনি এই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অতুলনীয় অবদান রেখেছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তাঁর ভূমিকা কিংবদন্তীর মতো। তিন বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। দেশে সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। তাঁর পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা প্রয়োজন। সকল প্রকার রাজনৈতিক সংকীর্ণতা থেকে বের হয়ে তাঁর সর্বোচ্চ চিকিৎসা এ দেশের মানুষের প্রাণের দাবি। সভা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে আরও উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রেরণের জন্য দেশনেত্রীর বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা ত্বরান্বিত করা এবং তাঁর মুক্তি প্রদানের আহ্বান জানায়। ৩। সাম্প্রতিককালে কোভিড-১৯-এর সব চেয়ে সংক্রমণশীল ভারতীয় ধরন ডেল্টা ভেরিয়েন্টর প্রভাবে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি বারবার সতর্ক করার পরেও সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না করার কারণে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়েন্ট সংক্রমণের হার ও মৃত্যুর হার হঠাৎ করেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে, যা ইতিমধ্যেই ঢাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। ২০২০ সাল থেকে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকারের উদাসীনতা, অযোগ্যতা ও দুর্নীতির কারণে আজ মানুষের জীবন ও জীবিকা দুটোই চরম হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। ইতিমধ্যে সংক্রমণ ৮,৫৬,৩০৪ ছড়িয়ে, মৃত্যুর সংখ্যা ১৩,৬২৬।
আজ সংক্রমিত হয়েছে সরকারি হিসাব মতে ৪,৬৩৬ ও মৃত্যু হয়েছে ৭৮ জনের। অপরিকল্পিত লকডাউন, সাধারণ ছুটিতে বিশেষ করে দরিদ্র মানুষের জীবন একেবারেই বিপন্ন। কর্মচ্যুতি, কাজের অভাব, চিকিৎসার অভাব, সরকারি সাহায্য, প্রণোদনা, ক্যাশ ট্রান্সফার দরিদ্র মানুষের কাছে পৌঁছাতে না পারায় অর্থনীতির সকল সূচক নিম্নগামী হয়েছে। খেটে খাওয়া মানুষ অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টে জীবন যাপন করছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতা, দুর্নীতি এবং অযোগ্যতা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে ফেলেছে। টিকার অপ্রতুলতা মানুষের জীবনকে অনিন্ডিত করে ফেলেছে। শতকরা ৭০ ভাগ মানুষকে টিকা প্রদান করতে হলেও ২৬ কোটি টিকা প্রয়োজন যার শতকরা ৩ ভাগ সংগ্রহ করতে পারেনি সরকার। নিজস্ব দলীয় ব্যক্তির মালিকানার কোম্পানিকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের দায়িত্ব দেয়ায় গোটা জাতি আজ স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। টেস্ট, বেড, অক্সিজেন, আইসিইউ, ভেন্টিলেটরের অভাব জেলা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা দেয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সরকার আরোপিত প্রথমে সাধারণ ছুটি ও অপরিকল্পিত লকডাউনে পরিস্থিতি ক্রমশ নাগালের বাইরে চলে গেছে। সভায় অবিলম্বে টিকা সংগ্রহ ও বিতরণের সুস্পষ্ট রোড ম্যাপ ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়। জনগণ জানতে চায় সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য কি ব্যবস্থ্য গ্রহণ করছে? ৪। সভা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদতবাষির্কী উপলক্ষে সরাদেশে বিএনপির শান্তিপূর্ণ ভার্চুয়াল কর্মসূচিতে বাধা প্রদান ও হামলা করেছে। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও নির্বিচারে গুলিতে প্রায় শতাধিক ছাত্র আহত হওয়ায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত ছাত্রদের মুক্তি দাবি করছে। ৫। সম্প্রতি ভোজ্য তেলের দাম গত ৬ মাসে প্রতি লিটারে ৩৮ টাকা (৩৩ শতাংশ) বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষ ও কর্মহীন মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। বাণিজ্যমন্ত্রীর উক্তি ‘দাম কমার কোনও সম্ভাবনা নেই’ কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত বলে সভা মনে করে। অবিলম্বে এই সব নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ওপর আরোপিত সকল প্রকার ট্যাক্স ও ভ্যাট পুরোপুরি উঠিয়ে নেয়ার দাবি জানায়। ৬। সভায় করোনাকালীন লকডাউনে সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রম ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ৭। সভা শেষে সদস্যবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভাপতি সভা মুলতবি করেন।
লকডাউনের নামে সরকার জনগণের সাথে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা (লকডাউন) ওয়ারকেবল না কিন্তু। একটাও কাজ করে না। ঢাকাতেও লকডাউন আছে। আপনি লকডাউন কোথাও দেখতে পান? কোথায় লকডাউন? আমি তো দেখতে পাই না। যার যেখানে খুশি যাচ্ছে, যার যেখানে যা খুশি করছে এমনকি বিয়েও হচ্ছে। আমি পরশুদিন দেখলাম একটা হোটেলে বিয়েও হচ্ছে। অথচ দেয়ার ইজ ব্যান্ড। এই যে সরকারের পুরোপুরি উদাসীনতা এবং এটা লোক দেখানো একটা ব্যাপার। এটা প্রতারণা মানুষের সঙ্গে যে, আমরা লকডাউন দিচ্ছি, চেষ্টা করছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনি খেয়াল করে দেখবেন যে, ল’ এন্ড ফোর্সেস এজেন্সিজ যাদের এই লকডাউন ইমপ্লিমেন্ট করার কথা তাদেরকেও দেখা যায় না আজকাল। দে আর নট ভিজিবেল, তারা ভিজিবল না এখন। দেখলাম পত্রিকায় একজন কনস্টেবল মারা গেছেন তার আবার ছবি দিয়ে বিরাট করে ছাপা হয়েছে। আর এদিকে শত শত লোক মারা যাচ্ছে তাদের কোনো কথা নেই। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি আগেও বলেছি, আর বলতে চাই না। বিশেষ প্রাণী পানি খায়, ঘোলা করে খায় আরকি। আমরা বহু আগেও তাদেরকে (সরকার) বার বার সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, করোনা মোকাবিলায় এসব ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তারা নেননি। বহুদিন পরে তারা এখন এসব ব্যবস্থা (লকডাউন) নিচ্ছেন। এখন আর বলে বলে আর বলতে ইচ্ছা করে না। কি বলবেন এদের তো চামড়া মোটা। এই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কবেই পদত্যাগ করা উচিত ছিলো। সে করে নাই। দুর্ভাগ্যজনক উল্টো তারা ডিফেন্ড করছে সবাই সবাইকে। খুব ভালো কাজ করছে। এতো ভালো স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাকি আর হয় না।
এনআইডি স্বরাষ্ট্রে নেয়া দুরভিসন্ধিমূলক বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এনআইডি প্রকল্পের বিষয়ে ইসি চিঠি দেয়ার পরেও সরকার সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে দুই লাইনের একটা চিঠি দিয়ে। এটা একটা অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েও তারা (সরকার) একটা চক্রান্ত, একটা ষড়যন্ত্র করতে যাচ্ছে, যাতে তারা জনগণের পরিচয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আমরা এহেন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাচ্ছি। সরকারকে তার এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহবান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, এটা সত্যি কথা যে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচয়পত্র দেয়ার ব্যাপারটা তাদের হাতেই থাকা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশে যেহেতু পরিস্থিতিটা সম্পূর্ণ উল্টো। এখানে আওয়ামী লীগের সরকার যারা আছে তারা এটা পুরোপুরিভাবে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করবে বলে সবাই বিশ্বাস করে। এটা শুধু বিএনপির কথা নয়, নির্বাচন কর্মকান্ডসহ অন্যান্য বিষয়গুলোর সাথে যারা জড়িত, এনজিও যারা আছেন তারা সবাই বলছে যে, এটা কোনো মতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে যাওয়া উচিত নয়। তাহলে সরাসরি সরকারের হাতে পড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে সংবিধানে ইসির অন্তত একটা স্বতন্ত্র স্ট্যাটাস আছে, তাদের হাতে থাকাটা বেটার বলে আমরা মনে করি এবং সবাই মনে করছেন।
দেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ নেই বলে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত আঙ্কটাডের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, এখানে বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় ১১% কমে গেছে। এটার কারণটা হচ্ছে যে, তারা নিজেরাই আঙ্কটাড ও বিশ্বব্যাংকের লোকেরা বলছেন যে, এখানে বিদেশিদের বিনিয়োগ করার কোনো পরিবেশ নাই। কেনো নেই? এখানে যে দুঃশাসন, গর্ভানেন্সের অভাব, দুর্নীতি এবং সমস্ত বিষয়গুলো নিয়ে এখানে যখন কিছু বিনিয়োগ করতে যায় তাকে কেঁদে কেঁদে সব ফেলে দিয়ে যেতে হয়। তারপরে কনস্ট্রাকশন করতে গেলে চাঁদা দিতে হয়। এখানে কোনো বিনিয়োগে পরিবেশ বিরাজ করে না। অথচ সরকারের ঢোল বাজছেই সবসময় যে, এখানে উন্নয়ন উন্নয়ন হয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নটা কোথায়? কয়েকটা ব্রিজ তৈরি করা, কয়েকটা উড়াল সেতু তৈরি করা এগুলোকে উন্নয়ন বলবো নাকী? উন্নয়নটা সেটা যেটাতে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়, অভাব কমে। যেখানে দরিদ্রের সংখ্যা বেড়ে গেছে দুই কোটি সেখানে কোন যুক্তিতে উন্নয়ন বলতে পারি।
তিনি বলেন, অনেক সেক্টর আছে যেখানে বাংলাদেশের প্রচন্ড রকমের সম্ভাবনা আছে। আটকা থেকে বলা হচ্ছে যে, এখানে ফার্মিসিউটিক্যালসের বিশেষ করে এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ পটেনশিয়াল একটা জায়গা। তারপরেও সরকার সে বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছেন না। আমরা মনে করি, অবিলম্বে বাংলাদেশে টিকা উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ করা উচিত এবং এখানে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত বলে আমরা মনে করি। গ্রেফতারকৃত ছাত্রদলের সাবেক নেতা সাইফুল ইসলামকে পায়ে গুলি করে পঙ্গু করা, ময়মনসিংহ, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের ভার্চুয়াল আলোচনায় পুলিশি হামলা ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তি এবং ভোজ্য তেলসহ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানান তিনি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া দলের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম ভার্চুয়ালি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।