উপনির্বাচনে বিএনপি নেই শুনে মনোনয়নের দৌড় বেড়েছে : ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৪৯ এএম, ৫ জুন,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৪৫ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না শুনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের দৌড়-ঝাঁপ বেড়ে গেছে।
আজ শুক্রবার (৪ জুন) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা-১৪, সিলেট-৩ এবং কুমিল্লা-৫ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থিতা বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এবার মনোনয়ন পেতে ইচ্ছুক প্রার্থীর সংখ্যা অনেক। খুব একটা অসুবিধা নেই, এই কথা মনে করে অনেকেই আবার প্রার্থী হচ্ছেন। পায় আর না পায় সবাই প্রার্থী হতে চায়। কারণ বিএনপি নেই শুনেছে। সেই জন্য প্রার্থিতার দৌড়ও বেড়ে গেছে। নেত্রীর সঙ্গে নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়নি। সাধারণ একটি গাইডলাইন তিনি দিয়েছেন। সেটা হলো ‘আমি ত্যাগী ও পরীক্ষিত কাউকে মনোনয়ন দেবো। যারা জনগণের কাছে অধিকতর গ্রহণযোগ্য এবং দুঃসময়ে ছিলেন।’ এমন একটি ধারণা তিনি আমাকে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এখানে গোয়েন্দা রিপোর্ট থাকবে। দলীয়ভাবেও রিপোর্ট নেওয়া হচ্ছে। নেত্রীরও নিজস্ব একটি টিম আছে। সেই টিম দিয়ে তিনি মাঠ পর্যায়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। আশা করি আমরা যথাযথ ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে পারবো।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যেসব সাংগঠনিক শাখার সম্মেলন হয়েছে, নিয়মিত কমিটি রয়েছে সেগুলোতে সদস্য সংগ্রহ বই দেওয়া শুরু করবো। কারণ করোনা কবে শেষ হবে, কেউ জানে না। আমাদেরকে এর সঙ্গে বসবাস করতে হবে। এর মধ্যে বাঁচতে শিখতে হবে। আমাদের সংগঠনও চালিয়ে যেতে হবে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবো। নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরবো।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যদি আমরা আমাদের সভা-সমাবেশগুলো করতে থাকি। আমাদের সদস্য সংগ্রহ অভিযান ঢাকঢোল না পিটিয়ে, টিমগুলো ঘরে ঘরে গিয়ে সদস্য সংগ্রহ করবে। এটা আমাদের ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী। চিহ্নিত চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, ভ‚মিদস্যু, মাদকাসক্ত এই ধরনের লোক এবং যারা স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি, এদেরকে কোনোভাবে আওয়ামী লীগের সদস্য করা যাবে না। এটা আমরা বারবার বলেছি। আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।
কাদের বলেন, কাউকে খুশি ও দলভারী করার জন্য কেউ যদি বিতর্কিত লোকদের টেনে আনেন, তাহলে তাকেও কিন্তু শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রত্যেকটা টিমকে জবাবদিহি করতে হবে। যাদেরকে সদস্য পদ দিবে, তাদের পরিচয়, ব্যাকগ্রাউন্ড পুরোপুরি জানতে হবে। হঠাৎ করে জোয়ারের সঙ্গে এসে ক্ষমতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ, আর কাজেকর্মে ভিন্ন, এই ধরনের লোকের দরকার নেই।
কোনো অপরাধী ও অপকর্মকারীদের প্রশ্রয় দেবেন না। দলীয় পরিচয় শেখ হাসিনার কাছে অপরাধীর ঢাল হতে পারেনি। এখানে কেউ অযাচিত হস্তক্ষেপ করবেন না। ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। দুঃসময়ে তারাই পাশে থাকে। সুসময়ের কোকিলরা তখন সটকে পড়ে। তাই তাদের জন্য রাজনীতির পথ মসৃণ করতে হবে। তাদের কোণঠাসা করলে দল কোণঠাসা হয়ে পড়ে।
ঢাকার সিটির অসংখ্য কমিটি দুই জনের। কিন্তু অসংখ্য কর্মী কাজ করেন। সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরলে স্ত্রী ও মা-বাবা জিজ্ঞেস করলে পরিচয় বলতে পারেন না। পরিচয় তারা আওয়ামী লীগ করে। অথচ পদ পড়ে আছে, কিন্তু দেওয়ার কেউ নাই। যারা এই পরিচয় দেওয়া থেকে বঞ্চিত করছেন, তারা সংগঠনকে বঞ্চিত করছেন।
আওয়ামী লীগে কর্মীর তুলনায় নেতা বেড়ে গেছে, এমন একটি লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কর্মী না বলে, এখানে বলা যায় আওয়ামী লীগে নেতা কমে গেছে। কারণ পরিচয় নাই তো। এই ঢাকা মহানগর উত্তরে ১৩০০-১৫০০ ইউনিট কমিটি রয়েছে। এখানে শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে থাকলে হবে না। নেতা না হলে নেতৃত্ব দেবে কেমনে। নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে কর্মীদের থেকে।
‘ঢাকা শহর হলো পার্টির ইঞ্জিন। ইঞ্জিন যদি না চলে? বগি চলবে? একে সচল করতে হবে। এটাই আওয়ামী লীগের প্রাণ’, যোগ করেন তিনি।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি প্রমুখ।