তারেক রহমান আর গণতন্ত্র ফিরে আসা একই সূত্রে গাঁথা-গয়েশ্বর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২১ এএম, ২৫ নভেম্বর,
বুধবার,২০২০ | আপডেট: ০২:৪৭ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসা আর গণতন্ত্র ফিরে আসা একইসূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
আজ মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর সুস্বাস্থ্য, সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দল।
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আপনারা অনেকেই বলেন আগামী দিনের নেতা তারেক রহমান। আমি আপনাদের এই কথার সাথে একমত নই। তারেক রহমান ইতিমধ্যে তো নেতা। তারেক রহমানের সম্ভাবনা কতটুকু তা আমরা কতটুকু গুরুত্বের সাথে ভাবি তার থেকে বেশি গুরুত্বের সাথে ভাবেন আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের মধ্যে গণতন্ত্রের প্র্যাকটিস নেই মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, তারেক রহমান কিন্তু সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন ইলেকশনের মাধ্যমে। তারা (আওয়ামী লীগ) কেন ইলেকশন করতে পারছে না। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর কথাবার্তা, আচার আচরণে মনে হয় দেশটা তিনি পৈতৃকসূত্রে মালিক। তারা দুই বোন আছেন, আরেক বোন বলেন, আমি কি? আমি কি বাপের মেয়ে না? এই দ্বন্দ্বটা কেন? যদি গণতন্ত্র বিশ্বাস করত, জনগণের ভাবনায় বিশ্বাস করত, তাহলে তাদের এ নিয়ে ঝগড়া লাগতো না। তারা মনে করেন দেশটা পৈতৃকভাবে তাদের প্রাপ্য। এই কারণে ওয়ারিশ নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নাকি লাইফসাপোর্টে আছে। পুরা দেশটাই তো তিনি লাইফ সাপোর্টে রেখেছেন। এখন আলাদা আলাদাভাবে কোন ব্যক্তি, কোন দল লাইফ সাপোর্টে আছেন তা নির্ণয় করা কঠিন। কারণ দেশ টিকবে কিনা সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে মানুষ। রক্ত দিয়ে কেনা অর্জিত বাংলাদেশ, মা-বোনের সম্ভ্রমহানি করে বাংলাদেশ। সেই বাংলাদেশ বাংলাদেশের জনগণের হাতে নাই। আপনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন, দেশটা তো আপনার হাতে নাই। আপনি তো প্রধানমন্ত্রী নন, আপনি তো পুতুল। আপনিতো নাচেন। আপনাকে কে নাচায় তা আপনি ভালো করে জানেন। সুতরাং গণভবনে আমরা পুতুল নাচ দেখছি। কে লাইফ সাপোর্টে আছে, সেটা যদি অনুধাবন করতে পারতেন তাহলে অনেক আগেই মন্ত্রিসভা ছেড়ে দিতেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসা আর গণতন্ত্র ফিরে আসা একই সূত্রে গাঁথা। আমরা যদি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারি তাহলে তারেক রহমান ফিরে আসবেন। এখানে কিন্তু জেল-জুলুমের ভয় না। যুদ্ধকালীন সময়ে তারেক রহমানের বয়স যখন ১০ বছর তখন তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সাথে পাকিস্তানি মিলিটারি ক্যাম্পে বন্দি ছিলেন। দেশ কারো একার ভাবনাচিন্তায় স্বাধীন হয় নাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন করেছে এদেশের আপামর জনগণ। দেশের মালিক জনগণ। সুতরাং আপনার চিন্তা-ভাবনা মাথা থেকে প্রত্যাহার করবেন। দেশটা বিনা সংগ্রামে স্বাধীন হয় নাই, জনগণের অধিকার কখনো আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়া প্রতিষ্ঠিত হয় না।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, অনেকে বলে তারেক রহমান বিদেশ থেকে কি করবেন? শেখ মুজিব জেল ছিলেন, দেশ স্বাধীন হয় নাই? তারেক রহমান দেশের বাইরে থাকলে গণতন্ত্র উদ্ধার হবে না এই চিন্তা আপনারা কোথায় পেলেন? তিনি তো দৃশ্যত বাইরে আছেন। কিন্তু প্রতিনিয়ত আপনার আমার অন্তরে আছেন, ভাবনায় আছেন, চিন্তায় আছেন, চেতনায় আছেন। প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে তাঁর সাথে আমরা রাজনৈতিক আলোচনা করছি। আলোচনা করে আমরা আমাদের চলার পথের কৌশল ঠিক করছি। আমরা অন্তর থেকে হৃদয় থেকে তারেক রহমানের জন্য দোয়া করি। তারেক রহমান সুস্থ হবেন, দেশে ফিরবেন। আগামীদিনের জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতৃত্ব সশরীরে দেবেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্র মুক্ত হবে। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব চেতনায় উজ্জীবিত হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিকদলের সভাপতি কাজী মোঃ আমির খসরুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম বাদলের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ও দফতরের চলতি দায়িত্বে থাকা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্রমিকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, দক্ষিণ শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুমন ভূঁইয়া প্রমুখ।