সুনামগঞ্জে মসজিদের ইমামকে লাঞ্চিত: আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে জুতা মিছিল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৫ এএম, ১ জুন,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১১:১০ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সুনামগঞ্জে মসজিদ সংলগ্ন একটি মাজারে মাদক সেবন, অশ্লীলতা ও গান বাজনা বন্ধ রাখার জন্য আলোচনা সভার করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক ইমামকে লাঞ্চিত করেছে আওয়ামীলীগ নেতা। এঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় ওই আওয়ামীলীগ নেতাকে দল থেকে বহিস্কার করে শাস্থির দাবীতে জুতা মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে এলাকাবাসী।
আজ সোমবার সকাল থেকে দিনব্যাপী চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়- জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের জঙ্গলবাড়ি জামে মসজিদের সামনে অবস্থিত একটি মাজারের মাদক সেবন, অশ্লীলতা ও গান বাজনা বন্ধ করার বিষয় নিয়ে গতকাল (৩০ মে) রবিবার সকাল ১০টায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মুসল্লীরাসহ এলাকার লোকজন সভা বসায়। এসময় উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান মিয়া মাজারে মাদক সেবন, অশ্লীলতা ও গান বাজনা চালু রাখার নির্দেশ দেয়। তখন সভায় উপস্থিত লোকজন আওয়ামীলীগ নেতা হাসান মিয়াকে অপমান করে এবং সভা থেকে চলে যেতে বলে। এঘটনার প্রেক্ষিতে সবাইতে দেখে নেওয়া হুমকি দিয়ে সভা ত্যাগ করে ওই আওয়ামীলীগ নেতা।
তারই জের ধরে দুপুর ২টায় চারাগাঁও হাওর বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আওয়ামীলীগ নেতা হাসান মিয়া মদ পান করে মাতাল হয়ে তার লোকজন নিয়ে বাঁশতলা দারুল হেদায়েত হাদিস উলুম মাদ্রাসা ও এতিম খানার ইমাম মাওলানা ওমর ফারুককে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করে। এঘটনার খবর পেয়ে মাদ্রাসা ও এতিম খানার ছাত্ররা ছুটে আসলে আওয়ামীলীগ নেতা পালিয়ে যায়। পরে সন্ধ্যায় লম্পট ও মাতাল আওয়ামীলীগ নেতা হাসান মিয়াকে দল থেকে বহিস্কার করে শাস্থির দাবি জানিয়ে জুতা মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে এলাকার সর্বস্থরের মানুষ।
এব্যাপারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির উদ্দিন বলেন- হাসান মিয়ার কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ইমামকে লাঞ্চিত করার আগে মাতাল হয়ে হাসান মিয়া এক গৃহবধুর ঘরে প্রবেশ করে এবং মাতাল হয়ে সালিশ-বিচারের গিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানীর অনেক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত মূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতা চাই।
উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খসরুল আলম বলেন- ইমামকে লাঞ্চিত করার ঘটনাটি জানতে পেরে সবাইকে শান্ত থাকার জন্য আমি অনুরোধ করেছি। আমি জরুরী কাজে বাহিরে আছি।
এব্যাপারে নির্যাতিত ইমাম মাওলানা ওমর ফারুক বলেন- মাদকাসক্ত হাসান মিয়া আমাকে অন্যায় ভাবে মারধর করার পর হুমকি দিচ্ছে থানায় গেলে আমাকে হেফাজত নেতা বলে উল্টো মামলায় ফাঁসিয়ে দেবে। সে সীমান্ত এলাকায় সিন্ডিকেড তৈরি করে সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে কয়লা, চাল, মদ, ইয়াবা ও পাথর পাচাঁর করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার বিচার চাই।
এব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামীলীগ নেতা হাসান মিয়ার সাংবাদিকদের বলেন- আমার বিরুদ্ধে একটি মহল অপপ্রচার করছে। ইমামের সাথে যে ঘটনা হয়েছে তা সমাধানের আলোচনা চলছে।
তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন- ঘটনাটি আমি জানতে পেরেছি, তবে এব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।