শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২৬ পিএম, ৩১ মে,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৪৭ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
আওয়ামী লীগ দেশে ‘সাম্প্রদায়িকতা ও উগ্রবাদের জন্ম দিচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল রবিবার (৩০ মে) সকালে জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই অভিযোগ করেন।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সেনাবাহিনীর একদল সদস্যের অভ্যুত্থানে নিহত হন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সেই থেকে এই দিনকে ‘শাহাদত দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে বিএনপি। গতকাল ভোর ৬টায় নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল সাড়ে ৯টায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানে মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে প্রতিষ্ঠাতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন তারা।
জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র উপহার দিয়েছেন এবং আবদ্ধ অর্থনীতিকে মুক্ত করেছিলেন। জাতির মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছিলেন এবং বিভক্ত জাতিকে একত্রিত করেছিলেন, ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। একটা নতুন বিপ্লব শুরু করেছিলেন একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য। মাত্র সাড়ে তিন বছর সময়ের মধ্যে তিনি গোটা জাতিকে, বাংলাদেশকে এক সময় তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো সেখান থেকে একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করেছিলেন এবং উন্নয়নের ভিত্তিটা স্থাপন করেছিলেন। আমরা আজকে এই দিনে তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
সেই সঙ্গে স্মরণ করছি আমাদের গণতন্ত্রের আপোসহীন নেত্রী যিনি দীর্ঘকাল শহীদ জিয়াউর রহমানের রেখে যাওয়া পতাকাকে, বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদের দর্শনের পতাকাকে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পতাকাকে ধারণ করে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ছুটে বেড়িয়েছেন এবং গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সেই মহান নেত্রীকে আমরা স্মরণ করছি এবং একই সঙ্গে স্মরণ করছি ১৯৭১ সালে যারা স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন এবং এই দীর্ঘ সময়ে আওয়ামী শাসনের যাঁতাকলে যে অসংখ্য নেতা-কর্মী গুম হয়েছেন, খুন হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন তাদের সকলকে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সচেতনভাবে উদার গণতান্ত্রিক যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা তাকে ধ্বংস করে দিয়ে আবারো একদলীয় শাসনব্যবস্থা ছদ্মবেশে প্রতিষ্ঠা করবার কাজ শুরু করেছে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সুচতুরভাবে তারা এই দেশে যে উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতি সেই রাজনীতিকে বন্ধ করে দিচ্ছে এবং তারাই আজকে এখানে সাম্প্রদায়িকতা এবং উগ্রবাদের জন্ম দিচ্ছে। আমরা মনে করি যে, আওয়ামী লীগ এদেশের স্বার্থের জন্য কখনোই কোনো শুভ কাজ করেনি। এই দেশকে নির্মাণের জন্য তারা কোনো ভালো কাজ করেনি। তারা শুধুমাত্র ধ্বংসই করেছে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গোটা জাতিকে লড়াই করতে হবে। শুধুমাত্র বিএনপি নয়, আজকে সমস্ত জাতি ভুক্তভোগী। আমাদের যে গণতন্ত্র সেই গণতন্ত্রকে হরণ করা হয়েছে, আমাদের যে মুক্ত সমাজ ব্যবস্থা তাকে হরণ করা হয়েছে, মুক্ত সাংবাদিকতাকে হরণ করা হয়েছে এবং একটা নির্যাতনমূলক-নিবর্তনমূলক শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এখান থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে-এটাই হচ্ছে আজকের দিনের আমাদের শপথ।
আজকে আমাদের আহবান, আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। ১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা নিয়ে, উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার আকাক্সক্ষা নিয়ে একটি মুক্ত সমাজের জন্যে আমরা যে লড়াই করেছিলাম, সংগ্রাম করেছিলাম সেই আকাক্সক্ষাকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্যে আমরা আবার লড়াই-সংগ্রাম শুরু করি।