মশা ও জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে পারবেন বলে আশা তাপসের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫২ এএম, ২০ মে,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:২০ এএম, ১০ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ঢাকাবাসীকে ডেঙ্গুর প্রকোপ ও জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
আজ বুধবার দুপুরে ডিএসসিসির নগর ভবনে মেয়র হানিফ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘উন্নত ঢাকার ভিত রচনা’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ২০২০ সালের ১৬ মে তিনি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
বিগত এক বছরের কর্মকান্ড উপস্থাপন করে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরপরই জনগণের মৌলিক সেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং করোনা মহামারির মাঝেই যাতে নগরবাসীকে এডিস মশার মুখোমুখি হতে না হয় সেজন্য আমরা শুরু থেকেই মশক নিয়ন্ত্রণের ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছি। মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে নতুন করে ঢেলে সাজিয়েছি। আল্লাহর রহমতে আমরা সফলতা পেয়েছি। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় কোনো প্রাণহানি হয়নি।
তিনি বলেন, চলতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে কিউলেক্স মশকের উপদ্রব কিছুটা বেড়েছিল। আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দুই সপ্তাহের মধ্যেই কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। ফলে সিটি করপোরেশন মশক নিয়ন্ত্রণে যে সক্ষম সে বিষয়ে জনগণের মাঝে আমরা আস্থা সঞ্চার করতে পেরেছি। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, আমার নির্বাচনি ইশতেহারে ঘোষিত ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা ও আধুনিক ঢাকার রূপরেখাকে সাদরে গ্রহণ করে ঢাকাবাসী আমাকে তাদেরকে সেবা করার সুযোগ দেন। নির্বাচনে বিজয়ের পর উন্নত ঢাকা গড়ে তুলতে আমি যখন পরিকল্পনা সুনির্দিষ্ট করছিলাম, তখন সারাবিশ্বের ন্যায় আমাদের পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় করোনাভাইরাস। সারাবিশ্বে তখন এই করোনা মহামারি হতে উত্তরণে এক ধরনের হতাশা ও আতঙ্ক বিরাজ করতে থাকে। এরই মাঝে গত বছর ১৬ মে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করি এবং করোনা মহামারির মাঝেই আমাদের সামগ্রিক কার্যক্রম চালু করার প্রচেষ্টা চালাই।
তিনি বলেন, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ওয়াসার কাছ থেকে খাল ও বক্স কালভার্টগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দায়িত্ব পেয়েই দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২ জানুয়ারি হতে দুটি বক্স কালভার্ট ও চারটি খাল হতে বর্জ্য ও পলি অপসারণ কার্যক্রম শুরু করে। একই সঙ্গে সেসব খালের সীমানা নির্ধারণ এবং অবৈধ দখলে থাকা জায়গা পুনরুদ্ধার করেছি। জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত আমরা নিজস্ব অর্থায়নেই সেসব খাল ও বক্স কালভার্টের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খনন কার্য সম্পাদন করছি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, খাল ও বক্স কালভার্টগুলো হতে আমরা ১০ লক্ষাধিক টন পলি ও বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি এবং খাল ও বক্স কালভার্টগুলোতে দৃশ্যমানভাবে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়াসার কাছ থেকে পাওয়া কমলাপুর ও ধোলাইখাল পাম্প স্টেশনের ছয়টি পাম্প মেশিনের মধ্যে কমলাপুরের একটি এবং ধোলাইখালের দুইটি পাম্প মেশিন সচল করতে সক্ষম হয়েছি এবং বাকি তিনটি পাম্প মেশিন সচল করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে আমরা ৩০টি ভ্রাম্যমাণ পাম্প মেশিন ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পাদনের শেষ পর্যায়ে রয়েছি।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, আগামী মাসের ২০ তারিখের মধ্যে করপোরেশনের ৭১৫ কিলোমিটার এবং ওয়াসার কাছ থেকে পাওয়া ১৮৫ কিলোমিটার বদ্ধ নর্দমার মুখ পরিষ্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সার্বিক কর্মকান্ডের ফলে এই বর্ষায় আমরা ঢাকাবাসীকে জলাবদ্ধতার কবল হতে বহুলাংশে মুক্তি দিতে পারবো বলে আমি আশাবাদী। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।