সাভারে হেলে পড়েছে ছয়তলা ভবন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৭ এএম, ১১ নভেম্বর,
বুধবার,২০২০ | আপডেট: ১১:১৩ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
সাভার পৌর এলাকার বনপুকুর মহল্লার ওয়াপদা রোডে ছয় তলাবিশিষ্ট একটি ভবনের বেসমেন্ট দেবে গিয়ে অন্য একটি ভবনের ওপর হেলে পড়েছে। রাস্তার পাশে ফাটল ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং ফ্লোরের বিভিন্ন জায়গা বসে পড়ায় আপাতত ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ভবনটি পরিদর্শন করেছে ফায়ার সার্ভিস, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সাভার পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন। নিরাপত্তার স্বার্থে ভবনটির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে পৌর এলাকার ওয়াপদা রোডে অবস্থিত মজিদা আক্তার শিরিনের মালিকানাধীন ৩/২ নম্বর হোল্ডিংয়ের প্রিয়াঙ্কা ম্যানশন নামের বাড়িটি পার্শ্ববর্তী অপর একটি ভবনের ওপর হেলে পড়ে।
খবর পেয়ে সাভার পৌরসভার মেয়র আব্দুল গনি, স্থানীয় কাউন্সিলর সানজিদা শারমিন মুক্তা, পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী শরিফুল ইমাম, সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলম মিয়া, সাভার ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ফরহাদ হোসেনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ মনে করায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভবনের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
নির্দেশনা অনুযায়ী সকল বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। তবে ভবনটির কোনো অনুমোদন রয়েছে কি-না, সে বিষয়ে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি মালিকপক্ষ। সাভার পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. আলম মিয়া বলেন, ছয়তলা ভবনের পশ্চিম পাশের কলাম বসে গেছে এবং ভিমে ফাটল দেখা গেছে। এছাড়া রাস্তার পাশে ফাটল ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং ফ্লোর বিভিন্ন জায়গায় বসে পড়ায় আপাতত ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভবনে থাকা সকল বাসিন্দাকে অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছে এবং গ্যাস-বিদ্যুৎসহ সকল প্রকার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভবনটির অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে মালিকপক্ষ কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি। তবে ভবনটি নব্বইয়ের দশকে অনুমোদন নিয়েই নির্মাণ করেছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
‘ভবনটির নিচতলা থেকে দুই তলায় গিয়ে কিছু অংশ বাড়িয়ে করা হয়েছে। একইভাবে চতুর্থ তলায় গিয়ে আরও কিছু অংশ বাড়িয়ে করা হয়েছে। এজন্য আপাতদৃষ্টিতে ভবনটি হেলে পড়েছে কি-না, তাও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়া হয়েছে। তারা এসে ভবনটির সক্ষমতা যাচাই করে ভবনটি ব্যবহারযোগ্য কি-না তা ঘোষণা করবেন’ যোগ করেন এই সহকারী প্রকৌশলী।
এদিকে হেলে পড়া ভবন মালিকের ছেলে শামীম হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের ভবনের পূর্বপাশের শতাংশের ভেতর নুর ইসলাম নামের এক ব্যক্তি নয়তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। কোনো প্রকার জমি না রেখে তারা আমাদের ভবনের সঙ্গে লাগিয়ে ভবন তৈরি করেছেন। ওই ভবনটির চাপে আমাদের ভবনটি হেলে পড়েছে বলে ধারণা করছি।’ সাভার ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘হেলে পড়া ভবনটির সব বাসিন্দাকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ভবনটির গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের পাশাপাশি স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা ঘটনাস্থলে রয়েছি। এ বিষয়ে প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আরা নীপা বলেন, ‘হেলে পড়া ভবনটি পরিদর্শনের জন্য লোক পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’