বনানীতে দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় বিচার হয়নি ৪ বছরেও
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৬ এএম, ৪ এপ্রিল,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৩৪ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২৪
বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণ মামলার বিচার চার বছরেও শেষ হয়নি। প্রায় তিন বছর আট মাস আগে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। এরপর দীর্ঘ সময় পার হলেও সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রমই শেষ হয়নি। মূলত সাক্ষী হাজির না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে শিগগিরই সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে পৌঁছবে বলে আশার বাণী শুনিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এরই মধ্যে মামলার পাঁচ আসামিই জামিনে মুক্ত হয়েছে। ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে ওই দুই তরুণীকে নিয়ে আসা হয়। উপর্যুপরি মদ খাওয়ানোর পর ওই দুই তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রথমদিকে মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। পরে ওই বছরের ৬ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগে ভুক্তভোগী এক ছাত্রী মামলাটি করেন। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। সর্বশেষ ১৪ মার্চ এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। ৪ এপ্রিল মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
জানতে চাইলে ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা আহমেদ (অরেঞ্জ) বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। সাক্ষী হাজির না হওয়া এবং করোনার জন্য আদালত সাধারণ ছুটিতে থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিলে এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে। এরপর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করবেন। আশা করি, আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যেই এ মামলাটির রায় হবে। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে আমরা যথেষ্ট সচেষ্ট রয়েছি। এ মামলার দ্রুত বিচার প্রত্যাশা করছি। আশা করছি, আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে।
আসামিপক্ষের হেমায়েত উদ্দিন মোল্যা বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে মামলা হয়েছে। মেডিকেল রিপোর্টেও আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১৩ জুলাই আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে এ মামলায় চার্জ গঠন করেন আদালত। এর আগে তদন্ত শেষে ওই বছরের ৮ জুন ঢাকা মহানগর পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পুলিশ পরিদর্শক ইসমত আরা এমি সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। চার্জশিটে ৪৭ জনকে সাক্ষী করা হয়। অদ্যাবধি মামলায় ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। সাফাত আহমেদ ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন সাফাতের দুই বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম ও সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী। আসামিদের মধ্যে শুধু দেহরক্ষী রহমত আলী ছাড়া বাকি সবাই ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।