ঢামেকে মারা যাওয়া শিশুর মাকে পেটালেন আনসার সদস্যরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৮ পিএম, ২৪ মার্চ,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:২৯ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
সদ্য মারা যাওয়া এক শিশুর মাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) রাতে ঢামেকের জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার ওই নারীর নাম লিপি আক্তার (৩৮)। মারা যাওয়া আমির হামজা (৯) নামের শিশুর মা তিনি। বর্তমানে ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তাকে।
শিশুর বাবা মো. লিটন মিয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘হাসপাতালের ২০৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল আমির হামজা। সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসকরা আমার ছেলেকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি বিশ্বাস হয়নি।
এ সময় আমি আমির হামজাকে চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। জরুরি বিভাগের গেট দিয়ে বের হতেই আনসার সদস্যরা বাঁধা দেন এবং চার দিকের গেট আটকে দেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। এ
কপর্যায়ে কয়েকজন আনসার সদস্য আমার স্ত্রী লিপিকে তাদের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে আঘাতসহ কিল-ঘুষি মারেন। এমন পরিস্থিতিতে ছাড়াতে গেলে আমাকেও মারধর করেন আনসার সদস্যরা।’
আহত লিপি আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলেকে আমি নিয়ে যাবো, আনসার সদস্যরা কেন বাধা দেবে? এটা বলাতে তারা আমাকে মারধর করেছেন। আমার স্বামী ছাড়াতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়।’
এদিকে, জরুরি বিভাগে থাকা কয়েকজন রোগীর স্বজনরা জানান, একজন নারীর গায়ে হাত তুলেছে আনসার সদস্যরা। এটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। একে তো তার ছেলে মারা গেছে, এতে তার মাথা ঠিক থাকার কথা না। মা তো পাগলামী করবেই, তাই বলে একজন নারীর গায়ে হাত দেবে!
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের আনসার কমান্ডার (পিসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, যদি কোনো আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে নারীকে মারধরের প্রমাণ মেলে, তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, শুধু আনসার সদস্য কেন? কেউ-ই নারীর গায়ে হাত দিতে পারেন না। এ রকম ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এদিকে মৃত শিশুর বাবা মো. লিটন মিয়া জানান, তাদের বাসা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল কুনিপাড়া এলাকায়। তার একমাত্র ছেলে আমির হামজা। গত ১৯ মার্চ সকালের দিকে পূর্ব নাখালপাড়া এলাকায় একটি কারখানার টিনের ছাদে ঘুড়ি ধরতে যায়। সেখানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিচে পরে যায় সে।
এতে তার মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়। সেই দিনই তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই মারা যায় সে।