অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৫ মে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩৯ এএম, ২২ মার্চ,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:০৫ পিএম, ৫ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৫ মে ধার্য করেছেন আদালত।
আজ রবিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এ দিন ধার্য করেন। এর আগে ৪ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় তাদের দুজনের নামে মামলাটি করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হেটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্তোরাঁর খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ও ফুড বাবদ মোট ৩ কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকা বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন, যার কোনও বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি তিনি।
এছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৫ বছরে বাসাভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ি ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কে এম সি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগকৃত ২০ লাখ টাকা বিভিন্ন ব্যাংকে পাপিয়া ও তার স্বামীর নামে জমাকৃত ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনও বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি অনুসন্ধানে। অন্যদিকে র্যাবের অভিযানে তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং স্বামীর নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এগুলোরও কোনও বৈধ উৎস মেলেনি দুদকের অনুসন্ধানে। গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি দেশত্যাগের সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র্যাব। গ্রেফতার হওয়া অন্যরা হলেন- পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়। গ্রেফতারের পর ওই দিন রাতেই নরসিংদীর বাসায় এবং পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে হোটেল ওয়েস্টিনে তাদের নামে বুকিং করা বিলাসবহুল প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে অভিযান চালানো হয়।
এছাড়া ফার্মগেট এলাকার ২৮ নম্বর ইন্দিরা রোডে অবস্থিত রওশন’স ডমিনো রিলিভো নামক বিলাসবহুল ভবনে তাদের দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশে পিস্তল, দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ বোতল বিদেশি মদ ও নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করে র্যাব। গ্রেফতারের পর পাপিয়াকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাজমা আকতার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বহিষ্কারাদেশ দেয়া হয়। গত বছরের ১২ অক্টোবর শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে করা মামলায় ২০ বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন ঢাকা মহানগর আদালত। এছাড়া অস্ত্র আইনের আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার কারাদন্ড একই সঙ্গে চলবে বলে আদেশে উল্লেখ করেন বিচারক।