ওয়াসার বকেয়া মাত্র দুই শতাংশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৪৩ এএম, ১৪ মার্চ,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:১৩ এএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেছেন, আমরা যখন যাত্রা শুরু করেছিলাম তখন প্রতি একশ টাকায় ৬৪ টাকা আদায় ছিল। এখন আদায় হচ্ছে শতকরা ৯৮ শতাংশ। ওয়াসার বকেয়া আছে মাত্র দুই শতাংশ। আইনে আছে ৫ শতাংশ বকেয়া থাকতে পারবে। আমরা বকেয়াও আদায় করে ফেলছি। বকেয়া নিয়ে আমরা চিন্তিত না। তবে গ্রাহকদের অনুরোধ করব, আপনারা সময় মত বিল দেবেন।
আজ শনিবার দুপুরে ঢাকার ইসলামবাগে ওয়াসা কার্যালয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তাকসিম এ খান বলেন, আমরা যে পানিটা দিচ্ছি, সেটা ড্রিঙ্ক্যাবল ওয়াটার (পানযোগ্য পানি), ড্রিংকিং ওয়াটার (পানীয়) না। ড্রিংকিং পানি হচ্ছে মিনারেল পানি। ড্রিঙ্ক্যাবল ওয়াটার হচ্ছে, এটা আপনি খেতে পারবেন, তবে একটু শর্ত সাপেক্ষে। সেটা হচ্ছে আপনাকে পানিটাকে ১০ মিনিট ফুটিয়ে খেতে হবে।
ওয়াসার সরবরাহ করা পানির ১০ শতাংশে পাইপলাইন থেকে ময়লা ঢুকতে পারে। তবে ওয়াসার চলমান ডিএমএ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গ্রাহকের বাসা পর্যন্ত শতভাগ পানযোগ্য পানি পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তবে সে পানিকে পানযোগ্য রাখতে ছয় মাস অন্তর অন্তর রিজার্ভ ট্যাংক পরিষ্কার করতে হবে।
ওয়াসার এমডি বলেন, এটা একটা আমূল পরিবির্তন। আমরা এক্সট্রিমলি অটোমেশনে যাচ্ছি। এটা নিয়ে অনেকে হাসি ঠাট্টা করেছিলেন। আজ এটা বাস্তবতা। পানির বিল পরিশোধ সহজতর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চাহিদার চাইতে বেশি পানি সরবরাহ করার মত সক্ষমতা আল্লাহ আমাদের দিয়ে দিছেন। ঢাকায় প্রতিদিন পানির চাহিদা ২৪৫ কোটি লিটার। আমাদের উৎপাদন ২৬৫ থেকে ২৭৫ কোটি লিটার। যা চাহিদার চাইতে বেশি।
অতিরিক্ত পানি সরবরাহ ক্ষমতা থাকলেও পাঁচ দিন ধরে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার একাংশের বাসিন্দারা পানির অভাবে ভুগছেন। এ বিষয়ে এমডি বলেন, বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পানি আছে। কিন্তু শেকেরটেকে পানি নাই। এটা টেকনিক্যাল সমস্যা। এটা সমাধানের জন্যই আমরা আছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা পদ্মা নদী থেকে পানি আনতেছি। আমাদের পানির সোর্সে ১০০ শতাংশ পানি সঠিক। বিপত্তিটা রাস্তায়। আমরা নতুন পাইপলাইন বসাচ্ছি। এ এলাকায় পাইপলাইন বসানোর কাজ প্রায় শেষ। এটা শেষ হলে কোনো ফুটাফাটি থাকবে না। পানির কোয়ালিটির কোনো সমস্যা হবে না। টানা মটর লাগবে না। আমরা ওই দিকেই যাচ্ছি। ডিজিটাল ওয়াসা।
তিনি জানান, মাস্তানদের নিয়ন্ত্রণে ঢাকার বস্তিতে অনেক অবৈধ সংযোগ ছিল। তখন ওয়াসার সেই পানির বিল পেত না। অথচ বস্তিবাসী প্রতি পরিবার মাসে পানির বিল গুনতেন ২৫০ টাকা পর্যন্ত। অথচ সেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে, ওয়াসা বৈধ সংযোগ দেয়ার পর বস্তিবাসীর বিল আসছে মাত্র ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
ওয়াসা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের পানি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলোর জন্য রোল মডেল উল্লেখ করে তাকসিম এ খান বলেন, আমাদের সিস্টেম লস মাত্র ৫ থেকে ৬ শতাংশ। যা দক্ষিণ এশিয়ায় নাই। তাই আমাদের রোল মডেল ধরা হয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ওয়াসা ‘জিরো টলারেন্স’। অনেক সময় গ্রাহক ওয়াসার কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে। এ ধরনের কর্মচারী ও গ্রহকদের সর্তক করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী শাস্তিও পাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার রায়সহ ওয়াসার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের একাংশ উপস্থিত ছিলেন।