জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারিনি, বিদায়ী দুদক চেয়ারম্যান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:১১ পিএম, ৮ মার্চ,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:১৮ এএম, ১০ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২৫
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর বিদায়ী চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘জনগণ যেভাবে চায়, আমরা সেভাবে কিছু করে দেখাতে পারিনি। তবে সফলতা হচ্ছে, দুদকের বারান্দায় ক্ষমতাশালী অনেককেই আসতে হয়েছে।
আজ সোমবার ( ৮ মার্চ) দুদক কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিদায়ী চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এসব কথা বলেন। তার মতে, সমাজের প্রতিক্ষেত্রে একটি বার্তা দিতে পেরেছি যে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
দুদক চেয়ারম্যান মনে করেন, জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা আমাদের কাছে ছিল সেটি পূরণ করতে পারিনি। ১৯৭১ সালের মতো সবাই একত্রিত হয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারলে জনগণের এ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারতাম।
বিদায়বেলায় নিজের সম্পদের হিসাব দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, একটা প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তি থেকে এই কালচার শুরু করলে হবে না। সব সরকারি কর্মকর্তাদেরই সম্পদের হিসাব দেওয়া দরকার।
তবে সম্পদের হিসাব বিবরণী কীভাবে দেবে এবং সেই বিবরণী দিয়ে কি করা হবে সেই ব্যাপারে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইনের কাঠামো করা দরকার।
কাজ করতে গিয়ে কী ধরনের চাপের সম্মুখীন হয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো কাজে চাপ অনুভব করিনি। কোনো মন্ত্রী-এমপি এখানে তদবির করতে আমার দায়িত্ব পালনের পাঁচ বছরে আসেনি।
তবে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি। সরকার কিংবা অন্য কোনো চাপে আমি এমনটি করিনি। কারণ সবার আগে আমি রাষ্ট্রকে প্রধান্য দিই।
দুদকের দুর্বলতার জায়গার ব্যাপারে তিনি বলেন, মামলার তদন্ত করার মতো যোগ্য কর্মীর দুদকে অভাব রয়েছে। এখানকার কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়েছে। এখানে আরও জনবল দরকার। আমাদের চেষ্টা ছিল শতভাগ মামলায় সাজা দেওয়ার।
তারপরও আমাদের ২০২০ সালে ৭৭ শতাংশ মামলায় সাজা হয়েছে। ২০১৯ সালে যা ছিল ৬৩ শতাংশ।
কর্মকর্তাদের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করি। আমাদের নিজস্ব গোয়েন্দা টিম রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে পাঁচ থেকে ছয় কর্মকর্তার চাকরি চলে গেছে। অনেক কর্মকর্তার পদ অবনতি হয়েছে। শাস্তি হিসেবে অনেককেই অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।
তবে দুদকে আরও বেশি স্বচ্ছ করতে হলে সমাজের সম্মানিত ব্যক্তি, বিশিষ্ট সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। যারা দুদকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি খতিয়ে দেখবে।
তিনি বলেন, আমরাও একদম স্বাধীন নই। আমাদের ওপরে আদালত রয়েছে। সেখানে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। একটি মামলার রিপোর্ট দিলেই হবে না। যদি সেটি আদালতে প্রমাণ করতে না পারি। তবে প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা থাকবেই। সমালোচনা হচ্ছে অলঙ্কার।
একই দিনে বিদায় নেওয়া দুদকের কমিশনার আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা নিজেদের মধ্যেও সততার চর্চা করেছি। আর সেই সততা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে করোনা কারণে গত এক বছর মাঠ পর্যায়ে সেভাবে কাজ করতে পারিনি।