স্বাধীনতার চেতনা আজ ভূলুণ্ঠিত- বিএনপি'র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১৯ পিএম, ৬ মার্চ,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:২৯ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
স্বাধীনতার চেতনা আজ ভূলুণ্ঠিত। যারাই এই সরকারের বিরোধিতা করছে, তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য ভয়ঙ্কর একটা শক্তি সরকারের আড়ালে থেকে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি'র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তর ছাত্র ফোরামের যৌথ উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৪তম কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, মুশতাক আহমেদ শুধুমাত্র লেখার অপরাধে আর কিশোর কার্টুন আঁকার অপরাধে নির্মম অত্যাচার করে ছয়মাস আটক করে রাখা হয়েছে। এরা তো দুইজন শুধু ছয় মাস তাদের কথা বলা যায়..। গতকালই একজন মহিলা এসেছিলেন আমার কাছে, তিনি একজন রিটায়ার্ড মেজর মোরসালীন তার স্ত্রী-একবছর ধরে এই মোরসালীন আটক আছে জেলের মধ্যে। তার কোনো খবর বাইরে দিতে চায় না। কারণ একটাই তিনি (মোরসালীন) লিখতেন, তার লেখার কারণে তাকে তুলে নিয়ে গেছে। আজকে পত্রিকাতে আছে যে, কত মানুষকে, কত শিশুকে, কত বয়োঃজ্যেষ্ঠদের তুলে নিয়ে গেছে, জেলে নিয়ে গেছে শুধুমাত্র সরকারের সমালোচনা করার অপরাধে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে স্বাধীনতার চেতনা সম্পূর্ণ ভুলুন্ঠিত, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
রাষ্ট্রকে পুরোপুরিভাবে দলীয়করণ করেছে, এই রাষ্ট্রকে একটা দলীয়করণের রাষ্ট্র, একটা অকার্য্কর রাষ্ট্র, একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশকে এরা একেবারে বাঘাড়ে পরিণত করেছে। বাংলাদেশের আত্মাকে ধবংস করে দিয়েছে, সোল অব বাংলাদেশ, গণতন্ত্র যেটা আমাদের আত্মা সেই আত্মাকে ধবংস করে দিয়েছে। এরা শুধু মাত্র নিজেদের ক্ষমতা, দাম্ভিকতা, আত্মম্ভরিতা আর দুর্নীতির বৃত্ত তৈরি করার জন্য তারা গোটা জাতিকে তারা ধবংস করে দিচ্ছে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা যারা একাত্তর সালে যুদ্ধ করেছিলাম আমাদের এখন প্রতিনিয়ত রক্তক্ষরণ হয়-এজন্য কী আমরা দেশটাকে স্বাধীন করেছিলাম। যেন আমার সন্তান সে একটা সুস্থ পরিবেশে মানুষ হতে পারবে না, আমরা ভাই সে একটা সত্য কথা উচ্চারণ করতে পারবে না, আমার বোন সে নিরাপদে রাস্তায় চলাচল করতে পারবে না, আমার মা সে তার সন্তানকে একটু ভালোভাবে দেখতে পর্যন্ত পারবে না, আমাদের যে নতুন শিশু আসছে সেই শিশু কোন জগতে বাস করবে, কোন জনপদে বাস করবে যেখানে শুধু হত্যা-হিংসা-ভয়াবহতা। এই দেশে বারে বারে এ ধরনের স্বৈরাচার এসেছে, এদেশে বার বার যেমন মগ-দুস্যরা, বর্গীরা এসেছে, পশ্চিম থেকে বৃটিশরা এসেছে দখল করে নিয়েছে, তেমনি এদেশেরই তরুণ দামালেরা, যুবকরা তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে প্রয়োজনে অস্ত্র নিয়ে তাদের সরিয়ে দিয়েছে। ১৯৭১ সালে সেই অস্ত্র হাতে নিয়ে আমাদের তরুণেরা, দামাল ছেলেরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বিতাড়িত করেছে। সেই কথা মনে আমাদেরকে উঠে দাঁড়াতে হবে,” যোগ করেন মির্জা ফখরুল।
ফখরুল বলেন, আজকে যদি আমাদের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে চাই, আমরা যদি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি শুধুমাত্র গণতন্ত্রের জন্য কারাবন্দি হয়ে আছেন তাকে বের করে আনতে চাই, আমাদের নেতা তারেক রহমান যাকে সামনে রেখে আমরা পথ এগুতে চাচ্ছি তাকে যদি দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই, আমাদের ৩৫ লক্ষ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করাতে চাই, প্রতিদিন আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে তাদের যদি জেল থেকে মুক্ত করতে চাই আমাদেরকে অবশ্যই তরুণদেরকে, যুবকদেরকে তাদেরকেই সামনে আসতে হবে। সব সময় তরুণরা সব কিছু পাল্টিয়ে দিয়েছে, পরিবর্তন এনেছে। আমাদের দিকে সবাই তাকিয়ে আছে। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট দানবকে পরাজিত করি। আমাদের বাংলাদেশকে তারা লুটে নিয়ে যাচ্ছে, হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে হলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করে দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনি, বলেন বিএনপি মহাসচিব। বাংলাদেশ ছাত্র ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মীর হেলালের সভাপতিত্বে ও বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, যুবদলের সাবেক সদস্য আব্দুল ওয়াহাব, ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি -তরিকুল ইসলাম টিটু, ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি -আব্দুল ওয়াহাব, ছাত্রদলের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক - আরিফা সুলতানা রুমা, ছাত্রদলের সাবেক পাঠাগার বিষয় সম্পাদক -মেহেদী, ছাত্রদলে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক- মিজানুর রহমান শরিফ, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক -জামিল হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নাদিয়া পাঠান পাপন, ছাত্রদলের সাবেক সহ সম্পাদক শ্যামলী আক্তার, ইডেন মহিলা কলেজের আহ্বায়ক রেহেনা আক্তার শিরিন, সদস্য সচিব ইডেন মহিলা কলেজ- সানজিদা ইয়াসমিন তুলি প্রমুখ।