পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার লুট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৩২ এএম, ১ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:১২ পিএম, ৭ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ঢাকার সাভারের আমিনবাজারে পুলিশ পরিচয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন হালদারের কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৬৬.৫৫৩ ভরি স্বর্ণালংকার ডাকাতির মামলায় মূল হোতাসহ আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন- পিবিআই।
আজ রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর উত্তরা ১২ নস্বর সেক্টরে পিবিআইয়ের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।
তিনি জানান, গ্রেফতারদের মধ্যে একজন পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী, একজন কারিগর ও একজন সাবেক সেনাসদস্যও রয়েছেন।
গ্রেফতাররা হলেন- মানিকগঞ্জের সুরেশ চন্দ্র হালদার (৪৮), কেরানীগঞ্জের মিঠুন মজুমদার (৩৩), উজ্জ্বল চন্দ্র (৩২), মুন্সিগঞ্জের মিহির দাস (৩২), শংকর চন্দ্র ঘোষ (৪৫), পল্লবীর সোহেল আহমেদ পল্লব (৪৫), বহিষ্কৃত সাবেক সেনা সদস্য ফারুক হোসেন (৪০) ও মাদারীপুরের মিঠুন চৌকিদার (৩০)।
অভিযানে তাদের কাছ থেকে ডাকাতি হওয়া ২২ ভরি স্বর্ণ, স্বর্ণ বিক্রির পাঁচ লাখ টাকা, লুন্ঠিত একটি মোবাইল ফোন ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয় বলে জানান এসপি খোরশেদ আলম।
খোরশেদ আলম বলেন, গ্রেফতার আসামিরা আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সদস্য। তারা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করত। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত আরও সদস্যের নাম আমরা পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই বাকি সদস্যদের নাম প্রকাশ করছি না।
এসপি জানান, ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সাভারের আমিনবাজার এলাকায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁতীবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন হালদারের কাছ থেকে স্বর্ণ ডাকাতি করে আসামিরা। সেদিন অর্জুন হালদার তার দোকানের কারিগর সুরেশ হালদারকে সঙ্গে নিয়ে রাজবাড়ী জেলার পলাশ জুয়েলার্স ও রাজলক্ষ্মী জুয়েলার্সের মালিকদের অর্ডার দেয়া স্বর্ণালংকার সরবরাহ করতে রওনা হন। তিনি একটি কালো ট্রলি ব্যাগের মধ্যে ১ কোটি ১৪ লাখ ৯২ হাজার ১৫৭ টাকা বাজার মূল্যের ১৬৬.৫৫৩ ভরি স্বর্ণালংকার (চেইন, কানের দুল, বল চেইন, কানপাশা) ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি জানান, তাঁতীবাজার বাসা থেকে বের হয়ে রাজবাড়ীর যাওয়ার জন্য সাভার পরিবহনে ওঠেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন তার সঙ্গে থাকা কারিগর সুরেশ। তারা গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে এসে আবার বাস পরিবর্তন করে রাজবাড়ী পরিবহনে ওঠেন। বাসটি সাভারের আমিনবাজারের বৈদ্যুতিক পাওয়ার প্ল্যান্টের কাছে এলেই চারটি মোটরসাইকেলে ১০-১২ জন মাস্ক পরা ব্যক্তি এসে সেটি থামায় এবং ভেতরে উঠে পুলিশ পরিচয় দিয়ে অর্জুন হালদার ও সুরেশ হালদারকে টেনে-হেঁচড়ে মোটরসাইকেলে তুলে গাবতলীর দিকে রওনা হয়। এরপর ফাঁকা জায়গায় গিয়ে স্বর্ণের ব্যাগটি ছিনিয়ে দুজনকে কিল-ঘুষি দিয়ে রক্তাক্ত করে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। পরে ১৮ নভেম্বর আদালতে একটি ডাকাতির মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী স্বর্ণ ব্যবসায়ী অর্জুন হালদার। ওই মামলার তদন্তভার আদালত থেকে পিবিআই ঢাকা জেলার ওপর ন্যস্ত করেন।
খোরশেদ আলম আরও জানান, তদন্তে নেমে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি ডাকাত চক্রের সদস্য সুরেশ, মিঠুন, উজ্জল ও মিহিরকে গ্রেফতার করে পিবিআই। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আবারও অভিযান চালিয়ে গত শনিবার (৩০ জানুয়ারি) চক্রের আরও চার সদস্য সোহেল আহমেদ পল্লব, সাবেক সেনাসদস্য ফারুক হোসেন, শংকর চন্দ্র পাল ও মিঠুনকে গ্রেফতার করা হয়।