কাঁচামালের আড়ত ঘিরে সক্রিয় ‘পিকআপ ভ্যান ডাকাত চক্র’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১০ পিএম, ২১ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:৫৬ পিএম, ২৬ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
রাজধানীর কাঁচামালের আড়ত ঘিরে গড়ে উঠেছে একাধিক ‘পিকআপ ভ্যান ডাকাত চক্র’। গত কয়েক মাসে শতাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও কেউ এ চক্রের ভয়ে থানা পুলিশের দ্বারস্থ হয়নি।
এমনই অভিযোগ করেছেন রাজধানীর কাওরান বাজার এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও (ডিবি)। তবে ডিবি জানায়, থানায় অভিযোগ না করায় বিষয়টি অনেকটা অজানাই ছিল। গত ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর বিমানবন্দরের কাওলা ফুটওভারব্রিজের নিচে এ চক্রের হাতে আপন মিয়া নামে এক জন সবজি বিক্রেতা নিহত হবার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে বিষয়টি জানাজানি হয়।
আপন মিয়া খুনের ঘটনায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গত মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকা থেকে এ চক্রের অন্যতম হোতা সজলসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার বিস্তারিত জানায়। গতকাল ডিবি তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে সজল, মূসা, বাচ্চু, সজীব, মুন্না ও সিদ্দিক। তাদের হেফাজত হতে ডাকাতিতে ব্যবহূত একটি পিকআপ গাড়ি ও চাকু এবং লুণ্ঠনকৃত ৭ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করা হয়।
উপ-কমিশনার মশিউর রহমান জানান, পিকআপ ভ্যান ডাকাত চক্রের বেশ কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে। এরা থাকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, রূপগঞ্জসহ ঢাকার আশপাশ এলাকায়। এদের ডাকাতির বিচরণ ক্ষেত্র উত্তরার আব্দুল্লাপুর, ফায়দাবাদ, তুরাগ, কাওরান বাজার, রামপুরা, যাত্রাবাড়ী থেকে ভুলতা গাউছিয়া রোডগুলোতে।
গোয়েন্দা পুলিশের অন্য একটি সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, এক সময় তারা বিভিন্ন ছোটখাটো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করত। কিন্তু মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে তারা কাজ হারিয়েছে। পরে তারা পিকআপ ভ্যান নিয়ে সবজি বিক্রেতাদের টাকা-পয়সা লুট করার কাজে লিপ্ত হয়। কারণ এসব ছোটখাটো সবজি বিক্রেতা টাকা-পয়সা খোয়ালেও তারা ভয়ে থানা পুলিশ করে না। কিন্তু বিমানবন্দর এলাকায় টাকা-পয়সা লুট করে গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় তারা ফেঁসে যায়।
গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, স্বল্প আয়ের ব্যবসায়ীরা এমন ঘটনার সম্মুখীন হলেও সাধারণত থানায় কোনো অভিযোগ জানায় না। তাই এ ঘটনাগুলো পুলিশের অজানাই থেকে যায়। এমন ঘটনার শিকার হলে পুলিশকে অবহিত করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান এ কর্মকর্তা। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের নিয়মিত টহল বাড়ানো হয়েছে।
অভিযান পরিচালনাকারী ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম সাকলায়েন বলেন, গ্রেফতারকৃত সজল, মুসা, বাচ্চু এবং সজীবের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় ডাকাতি ও খুনের মামলা এবং সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে একই থানায় একটি নিয়মিত (ডাকাতি) মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামি রফিককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।