জুলাই থেকে ঢাকা শহর রাত ৮টার পর বন্ধ : তাপস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৩১ পিএম, ১১ জুন,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১১:৩৮ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘পৃথিবীর সব শহরেরই একটি সময়সীমা আছে, ঢাকা শহরের কোনো সময়সীমা নেই। তাই, আগামী ১ জুলাই থেকে ঢাকা শহর রাত ৮টার পর বন্ধের উদ্যোগ নেব। অবশ্য রেস্তোরাঁ ও অত্যাবশ্যকীয় যে বিষয়গুলো রয়েছে, সেগুলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খোলা থাকবে।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে গতকাল শুক্রবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এবং বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা (ইউআরপি) বিভাগ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মেয়র তাপস।
শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, ঢাকা শহরে যেকোনো ধরনের ইমারত নির্মাণ করলে সেখানে অবশ্যই সোক-ওয়েল ও সেপটিক ট্যাংক থাকতে হবে। না থাকলে সেসব স্থাপনার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
মেয়র তাপস বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশনের যে নর্দমাগুলো করা হয়েছে, সে নর্দমাগুলো শুধু পানি নিষ্কাশনের জন্য। সেগুলো পয়োবর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য নয়। পয়োবর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবে ঢাকা ওয়াসা। যেহেতু ওয়াসা পয়োবর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেনি, সেহেতু ঢাকাবাসী পয়োবর্জ্যের সংযোগগুলো আমাদের নর্দমায় দিয়ে দেয়, যার কারণে এ নর্দমাগুলো থেকে পয়োবর্জ্য খালে গিয়ে পৌঁছায়। এজন্য খালের পানি কালো। কিন্তু, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী পয়লা জুলাই থেকে আমরা সেটা কঠোর বাস্তবায়নে যাব। ঢাকা শহরে যেকোনো ইমারত নির্মাণ করলে অবশ্যই সেখানে সোক-ওয়েল থাকতে হবে, সেপটিক ট্যাংক থাকতে হবে। এটা আবশ্যকীয়। এটার আইন আছে। আমরা সে আইনের কঠোর বাস্তবায়নে যাব।’
খালগুলো বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের বদলে পয়োবর্জ্য নিষ্কাশনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে আক্ষেপ প্রকাশ করে মেয়র তাপস বলেন, ‘আমাদের খালগুলোর যে পানি, তা দেখলে আপনাদের কারও ভালো লাগবে না। কারণ, আমাদের সব পয়োবর্জ্য নিষ্কাশন হয় এসব খাল দিয়ে। অথচ খালগুলো দিয়ে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কথা। কিন্তু, সেখানে বৃষ্টির পানির সঙ্গে পয়োবর্জ্য যোগ হয়ে খালগুলো পয়ঃনিষ্কাশনের একটি ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
এ সময় টেকসই শহর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সব শহরের ন্যায় দৈনন্দিনভিত্তিতে ঢাকা শহরেরও সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও কর্মযজ্ঞ শেষ করার একটি সুনির্দিষ্ট সময় থাকা আবশ্যক উল্লেখ করে শেখ তাপস বলেন, ‘করোনাকালে জনজীবন যখন স্তব্ধ ছিল, তখন প্রকৃতিকে নবউদ্যোমে জেগে উঠতে আমরা দেখেছি। কারণ, প্রকৃতির বিশ্রামের জন্য সময় লাগে। তেমনি ঢাকা শহরের ব্যবস্থাপনার জন্য সময় প্রয়োজন। আমরা সারাদিনই ঢাকার ওপর অত্যাচার করব, আর ঢাকা আমাকে সুন্দর পরিবেশ উপহার দেবে, সেটা কামনা করা যৌক্তিক নয়। পৃথিবীর সব শহরেরই একটি সময়সীমা আছে, ঢাকা শহরের কোনো সময়সীমা নেই। সুতরাং, এ বিষয়ে আমরা সবার সঙ্গে আলাপ করছি।’
এ সময় সেমিনারে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রকল্পের টিম লিডার ড. আইনুন নিশাত জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
বিআইপি’র সভাপতি পরিকল্পনাবিদ ফজলে রেজা সুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বুয়েটের উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহিদ উল্লা খন্দকার, জিআইজেড বাংলাদেশের অ্যাডাপটেশন অব আরবান এরিয়াস টু ক্লাইমেট চেঞ্জ-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ড. ডানা দে লা ফনটেইন।