সাকরাইনে আতশবাজি-ডিজে নিষিদ্ধ চেয়ে ডিএমপির কাছে বাড়িওয়ালাদের চিঠি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫০ এএম, ১৩ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:১৫ এএম, ২৫ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
সাকরাইনে ডিজে পার্টি, আতশবাজি, ফানুস ও মাদক নিষিদ্ধের কার্যকর নীতিমালা চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন পুরান ঢাকার ৮৩ ব্যবসায়ী ও বাড়িওয়ালা।
আজ মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি কমিশনার বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান তারা।
চিঠিতে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী ও বাড়িওয়ালারা বলেন, আগামী ১৪-১৫ জানুয়ারি পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ‘সাকরাইন’ নামে একটি অনুষ্ঠান পালিত হতে যাচ্ছে। এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, গোয়ালনগর, লক্ষ্মীবাজার, সূত্রাপুর, গেণ্ডারিয়া, লালবাগসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বাড়ির ছাদে নানান আয়োজন হয়। এরমধ্যে আছে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা, ডিজে পার্টি, আতশবাজি, ফানুস ওড়ানো। এ বছরও একই ধরনের ও বড় পরিসরে এ উৎসব আয়োজন করা হবে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
ব্যবসায়ী ও বাড়িওয়ালারা বলেন, মূলত সাকরাইন নামের এ আয়োজনে ব্যাপক জনসমাগম ঘটে। এ সময় শুধু পুরান ঢাকার বাসিন্দারাই নয়, বরং নতুন ঢাকার মানুষও পুরান ঢাকার ছাদগুলোতে ভিড় জমাতে থাকেন। অথচ করোনা মহামারিকালে যে কোন ধরনের জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। এ বছরও সাকরাইন উপলক্ষে হাজার হাজার ছাদে লাখ লাখ লোকের ভিড় তথা জনসমাগম ঘটার আশঙ্কা আছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি ডেকে আনতে পারে।
তারা আরও বলেন, সাকরাইনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি বাড়ির ছাদ থেকে ফানুস ওড়ানো ও আতশবাজি পোড়ানো হয়। অথচ ডিএমপির পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে ফানুস ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া ‘বিস্ফোরক আইন, ১৮৮৪’ অনুসারে রঙিন আতশবাজি রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বলার অপেক্ষা রাখে না, ফানুস ও আতশবাজি থেকে ভয়াবহ ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটনার আশঙ্কা থাকে। সম্প্রতি থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ওড়ানো ফানুস থেকে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের একটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ভবনটিতে প্রায় ৮০টির মতো পরিবার বসবাস করতো, অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে অনেকেই আহত হন। এছাড়া বিদ্যুতের তারে ফানুস আটকে থাকার ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
চিঠিতে আবেদনকারীরা বলেন, পুরান ঢাকা জনবসতিপূর্ণ ও ঘিঞ্জি এলাকা। ২০১৯ সালে চকবাজারের চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ক্ষত এখনও শুকিয়ে যায়নি। ওই ঘটনার পর থেকে পুরান ঢাকায় বিভিন্ন দাহ্য পদার্থের গোডাউনের ওপর সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। পুরান ঢাকায় দাহ্য পদার্থ নিয়ে যেখানে এত সতর্কতা, সেখানে আতশবাজির মতো বিস্ফোরক পদার্থ ফুটলে তা অবশ্যই ভয়ানক বটে। যদি আতশবাজি ও ফানুস থেকে পুরান ঢাকায় কোনও অগ্নিকাণ্ড ঘটে, তবে একদিকে যেমন সরু গলিতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে না পেরে বিপুল জানমালের ক্ষতি হবে, অন্যদিকে পুরান ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যেও পড়বে কালো ছায়া। ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ব্যবসায়ীরা, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি।