রাজধানীতে ইমাম পরিচয়ে প্রতারণা করে মাসে আয় দুই লাখ টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৮ এএম, ৯ মার্চ,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৩১ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ভুয়া মুফতি ও হাফেজ পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো- আব্দুল মান্নান শেখ (৪২), মো. কামরুল ওরফে কামরুজ্জামান (৩৪), আসাদুল্লাহ আল গালিব (২৬), মো. আমিনুর রহমান (৩৯) ও মো. শওকত আলী খান সাগর (৪৩)।
ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ‘একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের ঢাকা শহরের বিভিন্ন মসজিদে ইমাম পরিচয় দিয়ে নামের সঙ্গে মুফতি ও হাফেজ টাইটেল ব্যবহার করে আসছিল। তারা বিভিন্ন শ্রেণির সরকারি/বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের কাছে এই পরিচয়ে ফোন দিতো। নিজেকে মসজিদের মোয়াজ্জিন পরিচয়ে তারা বলতো, তাদের স্ত্রী ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। হাসপাতালে বিল বকেয়া পড়েছে। তাই লাশ দাফন-কাফন করতে পারছে না, টাকা প্রয়োজন। এভাবে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতো তারা।’
পুলিশ জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে নাম-ঠিকানা ও পদবি জেনে বড় মসজিদের ইমাম পরিচয় দিয়ে ফোন দিতো তারা। এভাবে চক্রটি জনপ্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছিল। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ বিষয়ে সিআইডির কাছে অভিযোগ করলে অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডি।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, চক্রের মূলহোতা আব্দুল মান্নান শেখসহ চক্রের ৫ জনকে মিরপুর পল্লবী থানা ও তুরাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ক্লাব ও অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারদের নাম-ঠিকানা ও ব্যক্তিগত তথ্যসহ মোবাইল নম্বর সংবলিত ডাইরেক্টরি উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ঢাকার গুলশান ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, ঢাকা গলফ ক্লাব, চিটাগং বোট ক্লাব, বারিধারা কসমোপলিটন ক্লাব, মহাখালী ডিওএইচএস কাউন্সিল, ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন মেম্বারসহ মোট ৩৫টি ডাইরেক্টরি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তিদের মোবাইলের বিকাশ নম্বরের স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতি মাসে প্রত্যেকে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা এভাবে হাতিয়ে নিতো। ডাইরেক্টরি বইতে কে কখন টাকা দিয়েছে, কে কখন দেবে, কে কেমন ব্যবহার করেছে ইত্যাদি কমেন্ট লিখে রাখতো তারা। করোনাকলীন অর্থাৎ দুই বছরের অধিক সময় ধরে তারা এই প্রতারণা করে আসছে বলে জানা যায়। আসামি ও উদ্ধারকৃত আলামত সিআইডির কাছে রয়েছে বলেও জানান তিনি।