জলবায়ু সমস্যার সমাধান নিজেদেরই করতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৮ এএম, ৩০ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৫৯ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিশ্বনেতারা জলবায়ু সমস্যা সমাধানের জন্য ডাকেন। জলবায়ু সম্মেলন আহ্বান করেন। কিন্তু তারা সমস্যার সমাধান করেন না। শুধু আশ্বাস দেন। বিশ্বনেতারাই বিশ্বজুড়ে জলবায়ু সংকটের সৃষ্টি করেছেন। ফলে এর সমাধান আমাদের নিজেদেরই করতে হবে।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে “২৬তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৬) এর প্রাক্কালে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা এবং প্রস্তাবনা” শীর্ষক এক নাগরিক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিয়ারডি), কোস্ট ফাউন্ডেশন, সিসিডিবি, সিডিপি, ইপসা, মালেয়া ফাউন্ডেশন, এসডিএস, ক্যানসা-বাংলাদেশসহ কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় কয়লা ও জীবাশ্ম জ্বালানি সম্পূর্ণ অপসারণের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, আমরা অনেক প্রত্যাশা নিয়ে গেলেও হতাশ হই। আমরা ভেবেছিলাম, কপ-২৬ সম্মেলনে অনেক চুক্তি হবে। কিন্তু সেটা হয়নি। যেহেতু এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা, তাই আমাদের বৈশ্বিকভাবেই সমাধান করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য সঠিক হারে কার্বন নির্গমণ হ্রাস করতে ব্যর্থ হলে এবারের কপ সম্মেলনের সব প্রচেষ্টা এবং উদ্যোগই বিফলে যেতে পারে। বক্তারা উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে আনুপাতিক হারে নির্গমন গ্রাসকরণের বিষয়ে অঙ্গীকার চান।
সভায় পল্লী কর্ম সহায়কের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, করোনার সময়ে খুব দ্রুত টিকা বের হয়ে গেলো। এর কারণ ক্ষমতাবানদেরও করোনা ধরেছিল। ক্ষমতাবানরা যখন সমস্যার সম্মুখীন হন, তখন তারা সমাধানের পথ বের করেন। জলবায়ু সমস্যায় বাংলাদেশের মতো দেশগুলো ভুগছে। তাই আমাদেরই এর সমাধানে চেষ্টা করতে হবে। বাংলাদেশে জলবায়ু নিয়ে গবেষণা হয় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা জলবায়ু ইস্যুতে বাংলাদেশের পক্ষে যারা কথা বলি, তারা মন থেকে বলি না। আমরা অন্যের লেখা ও বলা থেকে ধারণা নিয়ে কথা বলি। নিজেরা গবেষণা ও চিন্তা করি না। বাংলাদেশে জলবায়ু নিয়ে আমাদের অনেক কাজ আছে। আমাদের গবেষণা চালাতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে লোকবল নিয়োগ বাড়াতে হবে। আমাদের অনেক কাজ রয়েছে। যদি আমরা কাজগুলো করতে পারি, আগামী কপে হয়তো এর সফলতা পাবো। তিনি বলেন, আমাদের অগ্রাধিকারে গলদ আছে। আমরা এজন্য অগ্রগতিতে সমাধান পাচ্ছি না। আমাদের সরকারের যথেষ্ট সদিচ্ছা আছে। কিন্তু যারা বাস্তবায়ন করেন, তাদের অগ্রগতিতে সদিচ্ছার অভাব রয়েছে।
প্রধান আলোচক হিসেবে সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, অনেক সীমাবদ্ধতা এবং সমালোচনা থাকলেও কপ-২৬ সম্মেলনে অনেকগুলো ভালো অর্জনও আছে। এবারের কপ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নতুন কিছু আশার আলো নিয়ে এসেছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের একমত হওয়ার বিষয়টিকে নতুন পথচলার সূচনা হিসেবে উল্লেখ করে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ব্যাপারে তাগিদ দেন তিনি। পিকেএসএফ-এর সভাপতি ডা. কাজী খলিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সঞ্চয় ভৌমিক চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব (ফ্লাইমেট চেঞ্জ-১), পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক জিয়াউল হক, সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. নুরুল কাদের, বাংলাদেশ পরিবেশ সংবাদিক ফোরামের সভাপতি কামরুল ইসলাম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ধরিত্রী কুমার সরকার, পিকেএসএফ-এর জলবায়ু পরিবর্তন ইউনিটের পরিচালক ফজলে রাব্বী সাদেক আহমেদ প্রমুখ।